দিল্লি, ২২ সেপ্টেম্বর– দেশজুড়ে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট । এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এখনও পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে এনআইএ সূত্রে খবর। গ্রেফতার হয়েছেন এই সংগঠনের প্রধান পারভেজ আহমেদ। এছাড়াও আরও দুই মাথা মহম্মদ ইলিয়াস এবং ওএমএ সালেমও।
স্বাধীনতার পরে দেশজুড়ে এত বড় সফল অভিযান এর আগে হয়নি। ইতিমধ্যেই ১০০ জনের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে কেরল থেকে ২২ জন, কর্নাটক থেকে ২০ জন, মহারাষ্ট্র থেকে ২০ জন, তামিলনাড়ু থেকে ১০ জন, অসম থেকে ৯ জন, উত্তর প্রদেশ থেকে ৮ জন, অন্ধ্র প্রদেশ থেকে ৮ জন, মধ্য প্রদেশ থেকে ৪ জন, দিল্লি থেকে ৩ জন, পদুচেরি থেকে ৩ জন ও বিহার থেকে ২ জন। অভিযান এখনও চলছে।
পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া হল একটি উগ্র ইসলামিক সংগঠন। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর একাধিক ইসলামিক সংগঠন মিলিত হয়ে তৈরি হয় পিএফআই। কেরল, কর্নাটক সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই সংগঠনের বিস্তার রয়েছে। সরকারের অভিযোগ, এই সংগঠন দেশ বিরোধী ও সমাজ বিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত। যদিও এই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, তারা বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। দুঃস্থদের দেখভাল পড়াশুনার দায়িত্ব দেয়া
গোয়েন্দাদের অভিযোগ, এই সংগঠনের পেছনে আরব দুনিয়ার মদত আছে। মূলত ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য। দেশের বিভিন্ন সন্ত্রাসমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এই সংগঠন। এছাড়াও এই বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, খুন, ঘৃণা ছড়ানোর মত অপরাধ সংগঠিত করে তারা।
চলতি মাসের শুরু থেকেই এই তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। দেশজুড়ে মোট ১৩টি রাজ্যের ৪০টি জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে এনআইএ। এই অভিযানে যেহেতু আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে তাই এই অভিযানে যুক্ত হয়েছে ইডিও। কাল রাত থেকে অভিযান চলছে জোর কদমে।
বাংলাতেও অভিযান চলছে। যদিও এখনও এই রাজ্য থেকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে। কেন এই অভিযানকে সফল বলা হচ্ছে? সাধারণত এইসব অভিযান গোপনে করা হয়। কিন্তু এইসব সংগঠনের কাছে আগে থেকেই খবর পৌঁছে যায়। ফলে যাদের গ্রেফতার করার কথা থাকে তাদের পাওয়া যায় না। কিন্তু এই অভিযানে অদ্ভুতভাবে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার এই অভিযানের সবুজ সংকেত দিয়েছিল ৪ অগাস্ট। অর্থাৎ ৪৯ দিন গোপন ছিল অভিযানের প্রস্তুতি। ২৫০ জন এনআইএ আধিকারিক এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
২০০৪ সালে এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের ধারণা, স্টুডেন্ট ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়ারই এখন পিএফআই হিসাবে মাথাচাড়া দিয়েছে। কর্নাটকে চলা হিজাব আন্দোলনের পেছনে এই সংগঠনের মদত রয়েছে বলেও দাবি সরকারের। এছাড়াও দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এই সংগঠন।