প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙেঘ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেও বিক্ষোভকারীদের একাংশের হুমকির শিকার তিনিও।
এই পরিস্থিতিতে আগামী ২০ জুলাই নয়া শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন সে দেশের পার্লামেন্টের স্পিকার অবেবর্ধনে।
অবেবর্ধনে বুধবার বলেন, ‘সংবিধানের ৩৭.১ ধারা অনুযায়ী কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙেঘ। ২০ জুলাই হবে নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।’
তবে আগামী ২০ জুলাই শ্রীলঙ্কায় নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা করলেও কী পদ্ধতিতে তা হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
গোটাবায়ে রাজাপক্ষে বুধবারই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। যদিও এখনও তিনি শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দেননি।
কিন্তু ইস্তফা দেওয়ার আগেই সস্ত্রীক দেশ ছেড়েছেন। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীও এই প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে ইস্তফা দিয়েছেন।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফায় মন ভেজেনি খবর আগুনে ফুটতে থাকা মানুষগুলোর। প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।
আর এমতবস্থায় অবশেষে মঙ্গলবার মাঝরাতে পালিয়েছেন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। সূত্রের খবর সস্ত্রীক মলদ্বীপে পৌঁছেছেন গোটাবায়ে রাজাপক্ষে।
জলপথে নয়, আকাশপথেই দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট। মলদ্বীপ সরকার আবার গোটাবায়ে রাজাপক্ষেকে স্বাগত জানিয়েছে।
বর্তমানে গোটাবয়ে ইস্তফা না দিলেও উত্তাল পরিস্থিতিতে সদ্য প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেই দেশের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট। বুধবার সকালে তিনি দেশজুড়ে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করলেন।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, রাজধানী কলম্বো-সহ পশ্চিম শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই কলম্বোর রাজপথে হাজার হাজার মানুষ নেমে পড়েছেন।
তাঁদের দাবি, দেশ ছেড়ে মাদীপে পালিয়ে যাওয়া রাজাপক্ষেকে অবিলম্বে ইস্তফা দিতে হবে। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে পুলিশ। জলকামানও ব্যবহার করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের তাও দমানো যাচ্ছে না। তাদের প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে জুতো ছুঁড়তে দেখা গিয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি রাজাপক্ষে ইস্তফা দেওয়ার আগে দেশ না ছাড়তেন, তাহলে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হত।
সেই কারণেই দেশ ছাড়ার জন্য এত তোড়জোড় করছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক অতীতের সবচেয়ে চমকপ্রদ গণবিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছে গোটা বিশ্ব।
রাষ্ট্রপতির বাড়িতে ঢুকে পড়ে তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন ভারতের প্রতিবেশীদ্বীপরাষ্ট্রের শত শত জনগণ।
তারপর রাজাপক্ষের ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে আন্দোলনকারীরা সুইমিং পুলে সাঁতার কেটেছেন, বেডরুমে লাফালাফি করেছেন। রাজাপক্ষের বাড়ির সিন্দুক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকাও পাওয়া গেছে বলে দাবি আন্দোলনকারী জনতার।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিদেশ মন্ত্রকের প্রাক্তন উপদেষ্টা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, ‘আমরা চাইছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করুন।
আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ইস্তফা দিলে প্রধানমন্ত্রীই হন কার্যকরী প্রেসিডেন্ট। তাই মানুষ চাইছে, ওঁরা দু’জনই পদত্যাগ করুন।’