রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের পনেরোতম অধ্যক্ষ স্বামী আত্মস্থানন্দ জন্মজয়ন্তী স্মৃতি অনুষ্ঠান করোনার কারণে বিলম্বিত হয়েছে । এই অনুষ্ঠান দুই বছর আগেই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত ছিল।
মিশন ও মঠের বর্তমান অধ্যক্ষ স্মরণানন্দজি বলেন , আত্মস্থানন্দ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের তিন দীক্ষিত সন্তান অভেদানন্দ , স্বামী অখণ্ডানন্দ ও স্বামী বিজ্ঞানানন্দের সংস্পর্শে আসেন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে তিনি মঠে যোগ দেন এবং দীর্ঘ ছিয়াত্তর বছর সন্ন্যাসী জীবন যাপন করেন।
বিবেকানন্দের প্রদর্শিত পথে তিনি “ শিব জ্ঞানে জীব সেবকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করেছেন তাঁর দীর্ঘ ছিয়াত্তর বছর সন্ন্যাস জীবনে। ফলে যেকোনও প্রাকৃতিক বা অন্যকারণে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন অকুণ্ঠভাবে।
ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে তাঁর ছিল অসীম উৎসাহ। তাঁরই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় পল্লিমঙ্গল , সমাজসেবকশিক্ষআমন্দির এবং প্রি প্রবেশনার্স ট্রেনিং সেন্টারের কাজের সাফল্য এসেছে মূলত তাঁর হাত ধরেই।
সন্ন্যাসীসুলভ উদারতা , মানুষের প্রতি ভালবাসা এবং নির্লিপ্ততা ছিল তাঁর চরিত্রের বিশেষ গুণ। তাঁর জন্মজয়ন্তী উৎসবের উদ্যোক্তাদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন এবং ঠাকুর মা ও স্বামীজির আশীর্বাদ যেন তাদের ওপর বর্ষিত হয় এই কামনা করি।
নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী আত্মস্থানন্দজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক বার্তায় তাঁর স্মরণে প্রকাশিত গ্রন্থ , সচিত্র অ্যালবাম , তথ্যচিত্র এবং স্মারক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য উদ্যোক্তা স্বামী আত্মস্থানন্দ বার্থ সেন্টেনারি কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।
ভারত সকল সময়েই আধ্যাত্মিক গুরুদের আর্শীবাদে সকল কঠিন অবস্থাকে অতিক্রম করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে । স্বামীজি বলতেন , ‘ কিছু স্বার্থশূন্য ও সৎ যুবক যুবতী দিন আমি বিশ্ব বদলে দিতে পারি ‘।
আত্মস্থানন্দজি স্বামীজির বাঞ্ছিত যুবকদের মধ্যে একজন। তিনি গুজরাতে অবস্থানের সময়ে যে সকল কাজ করেছেন তার মধ্যেই তার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রবুদ্ধ ভারত পত্রিকার মাধ্যমে তিনি বহু যুবক যুবতীকে সমাজের কাজে আত্মনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
তিনি মহিলাদের ক্ষমতায়ণ নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করেছেন । গরীব কল্যাণ কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছেন।
স্বামীজির বার্তাকে সাকার করার ক্ষেত্রে আত্মস্থানন্দজির কাজ নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা আত্মস্থানন্দজির জন্মজয়ন্তীর উৎসব উপলক্ষে এক বার্তায় স্বামী আত্মস্থানন্দ জন্মজয়ন্তী শতবর্ষ উদযাপন কমিটিকে তাঁর আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
আত্মস্থানন্দজি স্বামীজির আদর্শকে সাকার করতে দেশ ও বিদেশে যেভাবে কাজ করেছেন তা এক দৃষ্টান্ত স্বরূপ। তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে সমাজ সেবার কাজে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।
বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠান আয়োজক স্বামী আত্মস্থানন্দ জন্মজয়ন্তী শতবর্ষ কমিটির পক্ষে পিংকি চন্দ্র ঘোষ , জয়ন্ত রায় , ডা . গৌর দাস , দেবশ্রী রায়সরকার , ডা.শ্যামাশিস দাস , রঞ্জন মিত্র , সুমন সেনগুপ্ত , দেবরাজ মিত্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।