রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন- ‘কবিতাবিতান’-এর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আকাদেমি পুরস্কার পাওয়া নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় নানান সমালোচনার পোস্ট বিতর্কিত ভিডিও’র জন্য ইউটিউবার রোদ্দুর রায়ের গ্রেফতারি–ইত্যাদি নানা ঘটনার পরেও একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় প্রথম আভাস পাওয়া গেল বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের। এদিন তিনি বলেন, এক শ্রেণির লোক ছোটদের কবিতা নিয়েও বিতর্ক করছে।
সব কিছু নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা উচিত নয় সাম্প্রতিক ‘কবিতাবিতান’ বিতর্ক নিয়ে যাবতীয় সমালোচনা, বিদ্রূপের পরোক্ষে জবাব দিতে গিয়ে মমতা বললেন, ‘ছোটদের জন্য কবিতা লিখতে গেলে, মনটাকে ছোটদের মতো করে নিতে হয়।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবিতাবিতান’ বইটির জন্য আকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে নিয়ে যে ধরনের বিতর্ক হয়েছে, তার পাল্টা জবাব দিতেই মুখ্যমন্ত্রী ছোটদের কবিতা এই ধরনের বক্তব্য পেশ করলেন কিনা, তা অবশ্য তিনি স্পষ্ট করেননি এদিন।
তবে এদিন তিনি ‘হরে কর কমবা’ নামে তাঁর আজব ছড়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সমালোচকদের উদ্দেশে বলেছেন, কেউ কেউ পুরোটা না দেখেই চিৎকার শুরু করে দেয় একেবারে হরে কর কমবা’র মতো।
প্রসঙ্গত এই ‘হরে কর কমবা’ শব্দবন্ধটিও মুখ্যমন্ত্রীর ‘কবিতাবিতান’ বইয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, অনেকেই বলবেন, ‘হরে কর কমবা’র আবার কোনও মানে হয় নাকি?
আমি বলব হয়, আগের দিনের পুরনো কবিতার বইগুলোতে চোখ রাখুন, অনেক কিছু দেখতে পাবেন।
এদিন মমতা আরও বলেন, ভালো চিন্তা মানুষকে বিকশিত করে। যখন ছোট ছিলাম, ছোট ছোট কবিতা পড়তাম।
আয় বৃষ্টি কেঁপে, ধান দেব মেপে’, ‘কাঠবেড়ালি কাঠবেড়ালি’ ইত্যাদি। কিন্তু এইসব নিয়ে কেউ কোনওদিন কোনও প্রশ্ন করেননি।
কিন্তু, এখন সবাই অনেক প্রশ্ন করছেন। এরা কোন গ্রুপ জানি না হয়তো সমাজের বড় অংশ হবেন। তবে সবাইকে ভাবতে বলব।
যখন ছোটদের জন্য কিছু তৈরি করবেন, তখন মনটাকেও ছোটদের মতো করতে হবে। তবেই ছোটদের কিছু শিক্ষা দিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, সাহিত্যচর্চার জন্য এবছর পঁচিশে বৈশাখে বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।
এই পুরস্কার নিয়ে জোর তরজা শুরু হয়েছিল। সেই সময় মমতার ‘আজব ছড়া’ নামাঙ্কিত কবিতা থেকে ‘হরে কর কমুবা’ লাইনটি নিয়ে তুমুল বিদ্রুপ করা হয়।
পরবর্তীকালে তৃণমূলের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং পরবর্তীকালে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্ৰিমা ভট্টাচার্য গত বিধানসভা অধিবেশনে বরেণ্য সাহিত্যিক অন্নদাশংকর রায়ের ‘পিং পং কালিম্পং’ নামে ছড়াটি শোনান।
যে কবিতার ছন্দ ও শব্দবন্ধ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আজব ছড়া’র মিল খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থকরা।