• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

পদ্মার ইলিশ, আম …

এবার জামাইষষ্ঠীতে জামাইদের পাতে ইলিশ তেমন পড়ল না, পদ্মার ইলিশ তো দূরস্থান। গতবারও পদ্মার ইলিশ এপার বাংলায় মিলেছিল। এবার তার দেখা নেই।

এবার জামাইষষ্ঠীতে জামাইদের পাতে ইলিশ তেমন পড়ল না, পদ্মার ইলিশ তো দূরস্থান। গতবারও পদ্মার ইলিশ এপার বাংলায় মিলেছিল। এবার তার দেখা নেই।

তবে এ বঙ্গের ইলিশ ব্যবসায়ীদের আশা বর্ষা ভালোভাবে নামলে বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলে, আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলে, সমুদ্রে ইলিশ ধরার পরিমাণ বাড়বে।

দক্ষিণবঙ্গে এখনও তো বর্ষা সেভাবে নামেনি। সুতরাং পদ্মার ইলিশের আশায় অপেক্ষা করে থাকা ছাড়া আর উপায় কী?

গঙ্গার ইলিশ তো মিলছে না আজ অনেক দিন। সুতরাং গঙ্গা-পদ্মা ইলিশের মধ্যে কোন ইলিশ স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় তা নিয়ে তর্কাতর্কি আর শোনা যায় না।

বারাকপুরের কেন্দ্রীয় মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, যে কোনও কারণেই হোক ইলিশের উৎপাদন দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

গঙ্গার ইলিশ মেলার কোনও সম্ভাবনাই নেই দূষণের পরিমাণ বৃদ্ধি অতিরিক্ত মাত্রায় পৌঁছেছে বলে।

সুতরাং এখন গঙ্গার ইলিশ ইতিহাসের পাতায় উঠে যাবে। গঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অনেক কথা শোনা গিয়েছিল।

গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান কার্যকরী হল না তেমনভাবে। এখনও গঙ্গার ধারের শহরগুলির পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা অপ্রতুল।

সুতরাং দূষণে ভরা ড্রেনের জল গঙ্গায় এসেই নামছে। এদিকে কর্তাব্যক্তিদের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।

পুরসভার চেয়ারম্যানরা শুধু আশ্বাসই দেন ড্রেনের জল গঙ্গায় ফেলা হবে না, কিন্তু কথা কথাই থাকে। কাজে তা প্রতিফলিত হয় না। শুধু গঙ্গা নয়, পদ্মার ইলিশের উৎপাদন দিন দিন কমে আসছে।

যদিও বাংলাদেশ সরকার পদ্মার ইলিশ ধরা নিয়ে নানা বিধিনিষেধ এবং কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। এখন প্রায় ছয় মাস পদ্মায় ইলিশ ধরা বন্ধ। তাছাড়া ৫০০ গ্রাম ওজনের নীচে ইলিশ ধরা জেলেদের বারণ।

গত কয়েক বছরে জেলেরা আইন অমান্য করে ইলিশ ধরায় তাদের অনেকের জেল জরিমানা হয়েছে। এ তো গেল পদ্মার ইলিশ নিয়ে আইনের দিক।

কিন্তু পদ্মাও দূষণের শিকার। সেই দূষণ রোখার সে রকম আইনি ব্যবস্থা বাংলাদেশ সরকার এখনও নিতে পারেনি। এতে দূষণ বেড়ে গেলে ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। যেমন গঙ্গার হয়েছে।

এবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘আম রাজনীতি’র অনুসরণে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সে দেশের সুস্বাদু ‘আম্রপালি’ আম পাঠিয়েছেন

গতবার হাসিনা রংপুরের বিখ্যাত ঝুড়িভাঙা আম এবং তার সঙ্গে পদ্মার ইলিশ পাঠিয়েছিলেন।

এবার ঝুড়িভাঙা আমের ফলন ভাল হয়নি, তাই আম্রপালির মর্যাদা বেড়েছে। এবার হাসিনা মমতার জন্য পদ্মার ইলিশ পাঠিয়েছেন কিনা জানা যায়নি।

মমতা হিমসাগর, ল্যাংড়া এবং মুর্শিদাবাদের নবাব আমলের যে আম এখনও কিছু কিছু পাওয়া যায়, তাই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন সৌজন্যের নিদর্শন হিসেবে।

প্রতি বছরই আমের ফলন শুরু হলে, সৌজন্যের নিদর্শন হিসেবে মমতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় বাংলার আম পাঠান। এটা চলে আসছে মমতা ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার সময় থেকেই।

এটা ‘আম রাজনীতি’ বলে অনেকেই আখ্যা দেন। বাংলাদেশ ও ভারতের সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও দৃঢ় করতে এই সৌজন্যবোধ অনেকটাই সাহায্য করে।

আম নিয়ে এত কথকতার পর জানা গেল, পশ্চিমবঙ্গের ফিস ইম্পোর্টারস অ্যাসোসিয়েসন পদ্মার ইলিশ বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যপ্রার্থী এই ব্যাপারে।