কলকাতার বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশের সামান্য বেশি শাসক দলের জয়ের ব্যবধান প্রায় কুড়ি হাজার।
এই ব্যবধান নিয়েই প্রয়াত সুব্রত মুখার্জির বালিগঞ্জে নতুন বিধায়ক হয়ে গেলেন বিজেপি ছেড়ে বালিগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী হওয়া গায়ক বাবুল সুপ্রিয়।
ভোটে জিতে বাবুল জানান ‘এই জয় দিদিকে উৎসর্গ করছি। সিপিএম, বিজেপি যে ভাবে নোংরা ও কুৎসা মিশ্রিত প্রচার করে একটা মিথ্যাচারের আবহ তৈরি করতে চেয়েছিল, মানুষ তার যোগ্য জবাব দিয়েছে। মা-মাটি-মানুষকে প্রণাম জানাই।’
উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর ভেসে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। যেমন, বালিগঞ্জের দু’টি ওয়ার্ডে হেরেছেন বাবুল।
একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ে যে সিপিএম সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেও কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল, সেখানে ফের লাল নিশানের নিখাদ অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাবুল সে সবে পরোয়ায় নারাজ।
বাবুল বলেন, ‘সিপিএম ও বিজেপি যে ভাবে নোংরা ও কুৎসার প্রচার চালিয়ে এলাকায় একটা মিথ্যাচারের আবহ তৈরি করতে চেয়েছিল মানুষ তার জবাব দিয়েছেন।
দিদি, অভিষেকভাই, সব দিক থেকে আমাকে সমস্ত রকম সাহায্য করেছেন। নিম্নমানের রাজনীতির বিরুদ্ধে আজকের মানুষের রায় দেখে আশা করি বিরোধীরা শিক্ষা নেবে।
পাশাপাশি যে দুটি ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়েছেন বাবুল, পার্টি তা নিয়েও পর্যালোচনা করবে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক বাবুল। বাবুল সুপ্রিয় আসানসোল নিয়েও কথা বলেছেন।
বালিগঞ্জের সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক বলেন, আসানসোলের মানুষ প্রমাণ করে দিলেন বাবুল সুপ্রিয় ওখানে কাজ করেছিল, সেই বাবুল সুপ্রিয়কেই ওঁরা জিতিয়েছিলেন। নিজের ক্ষমতায় ওখানে জিতেছিলাম।
একে ভুল প্রমাণ করতে বিজেপি-র কুয়োর ব্যাঙগুলো এবং বাঙলি কাঁকড়া সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছিল।
তবে মানুষ লক্ষাধিক ভোটে শত্রুমুজিকে জিতিয়েছেন। আসানসোলের মানুষের অভিমানটা খুব সঠিক।
ওঁরা বলতেন, দলের সঙ্গে মতের মিল না হওয়ায় আপনি দল ছেড়েছেন, কিন্তু আপনি এমপি পদটা কেন ছাড়লেন?
আমারও খারাপ লেগেছিল সেই জন্য আমি মনে করি, এটা একটা পোয়েটিক জাস্টিস হল।
শত্রুঘ্নজির সঙ্গে প্রায়ই কথা হয়। জমাটি মানুষ। শিরদাঁড়া সোজা মানুষেরাই বিজেপি-র বিরুদ্ধে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
উনি বার বার বলেন, তুমি হাতের তালুর মতো আসানসোলকে চেনো। আগামী দিনে আমরা দু’জনে মিলে দিদির নেতৃত্বে আসানসোলের সব কাজ করব।
শত্রুঘ্নজির সঙ্গে মিলিত ভাবে লোকসভা ও বিধানসভায় অত্যন্ত ভাল কাজ করব বলে জানিয়েছেন বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।
শনিবার বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ওয়ার্ডে জয় পেল সিপিএম।
এদিন ভোট গণনা শেষে দেখা গেল, কলকাতা পুরসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৯১৮ ভোটে এগিয়ে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী সায়রা হালিম।
শুধু তাই নয়, পাশের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী এগিয়েছিলেন ২২৪ ভোটে। বাকি পাঁচটি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছেন তাঁরা ।
কলকাতা পুরসভার সাতটি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি বালিগঞ্জ বিধানসভা। ৬০, ৬১, ৬৪, ৬৫, ৬৮, ৬৯ ও ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি হয়েছে বালিগঞ্জ বিধানসভা।
৬০, ৬১, ৬৪ ও ৬৫ ওয়ার্ডে আধিক্য সংখ্যালঘু ভোটারদের। আর সেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওয়ার্ডের দু’টি নিজেদের দখলে নিয়েছে বামেরা।