• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বগটুই গণহত্যা মুম্বই থেকে গ্রেফতার চার

কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় ওই রাত্রে বগটুই গ্রামে একটি ঘরের মধ্যে ভরে ৯ জনকে পুড়িয়ে মারা হয় পেট্রোল ঢেলে।

প্রতীকী ছবি (File Photo: IANS)

বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে ২১ মার্চ রাত্রে যে নারকীয় গণহত্যার ঘটনা ঘটে, তার তদন্তভার প্রথমে রাজ্য সরকার সিটের হাতে দিলেও, পরবর্তীতে ওই তদন্তভার কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় ওই রাত্রে বগটুই গ্রামে একটি ঘরের মধ্যে ভরে ৯ জনকে পুড়িয়ে মারা হয় পেট্রোল ঢেলে।

বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বগটুই গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের শেখ ভাদুকে ওই রাত্রে বোমা মেরে খুন করা হয়। তারই বদলা নিতে শেখ ভাদুর অনুগামীরা এই নারকীয় হত্যালীলা চালায় বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে সিবিআই অনেককেই গ্রেফতার করেছে।

আবার অনেক অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। সেইসব পলাতকদের সন্ধান চালাচ্ছিল সিবিআই। সেই সূত্রেই সিবিআই বৃহস্পতিবার ৭ এপ্রিল মুম্বইয়ের বক্রিকান্দি থেকে চারজনকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়েছে।

এদের মধ্যে রয়েছে পলাতক শেখ সাবু ও শেখ বাপ্পা। বাকি দু’জনের নাম জানা যায়নি। ধৃতদের মুম্বই আদালতে হাজির করার পর, সেখান থেকে ট্রানজিট রিমাণ্ডে রামপুরহাট নিয়ে আসা হবে বলে জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের দুপুরে প্রধান কলকাতা বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বগটুই কাণ্ডে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

মুখবন্ধ খামে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাক্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভাজের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে জমা দিয়েছে সিবিআই।

বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি পর্বে উঠে তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনে সিবিআই তদন্তের বিষয়টি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, ‘আদালত বললে তদন্তে রাজি সিবিআই’।

সিবিআই তদন্ত চাওয়া মামলায় আবেদনকারী আইনজীবী প্রিয়ঙ্ক। টিবরেওয়াল এজলাসে জানান, ‘ভাদু শেখের খুনের পরই ওই গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এরফলে একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পর্কযুক্ত। তাই সিবিআইয়ের দুটো ঘটনারই তদন্ত করা উচিত।’

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাক্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘আপাতত রায় স্থগিত থাকলেও এই বিষয়ে হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে রায় দিয়ে দেওয়া হবে এদিন শুনানি পর্বে তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু খুনের তদন্তভার সিবিআই নেবে কি না?

তা নিয়ে ভিন্ন সওয়াল উঠে আসে কেন্দ্রের দুই আইনজীবীর মধ্যে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর বলেন, ‘প্রথম মামলার দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরুর পর দশ দিন কেটে গিয়েছে। এখন আবার নতুন মামলা কিভাবে নেবে সিবিআই?

এত দিনে ভাদু খুনের অনেক তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তদন্তভার আগেই সিবিআইকে দেওয়া উচিত ছিল’। কেন্দ্রের সহকারী সলিসিটর জেনারেল বিশ্বদল ভট্টাচার্য এজলাসে জানান, ‘বাগটুই গণহত্যার তদন্তে সেখানে সিবিআইয়ের দল রয়েছে।

ইতিমধ্যে টাওয়ার ডাম্পিং পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে তদন্ত চলছে। এরফলে এই অবস্থায় ভাদু-খুনের তদন্ত হাতে নিতে কোনও আপত্তি নেই সিবিআইয়ের। শেষপর্যন্ত কেন্দ্রের দুই আইনজীবী অবশ্য সহমত পোষণ করেন।

অতিরিক্ত সলিটর জেনারেল জানান, ‘আদালত নির্দেশ দিলে ওই খুনের তদন্ত শুরু করবে সিবিআই’। ভাদু খুনে সিবিআই তদন্ত করবে কিনা, এই মামলায় রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে।