• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চতুর্থ কলকাতা আন্তর্জাতিক অণু চলচ্চিত্র উৎসব

চতুর্থ কলকাতা আন্তর্জাতিক অণু চলচ্চিত্র উৎসব। দেশ বিদেশ থেকে আসা বিভিন্ন সেগমেন্টের ফিল্মগুলির প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

চতুর্থ কলকাতা আন্তর্জাতিক অণু চলচ্চিত্র উৎসব (Photo:[email protected]?id=100047915504873)

১২ ই ও ১৩ ই ফেব্রুয়ারি মৌলালি যুবকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কলকাতা আন্তর্জাতিক অণু চলচ্চিত্র উৎসব। দেশ বিদেশ থেকে আসা বিভিন্ন সেগমেন্টের ফিল্মগুলির প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গল্পকার শ্রীমতি চুমকি চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর ব্যানার্জী ও জয়তি রায়।

উপস্থিত ছিলেন নবীন ও প্রবীন চিত্র পরিচালকেরা। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এই চলচ্চিত্র উৎসবে সঙ্গীত পরিবেশন করলেন তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাময় গায়ক প্রজিত কানুনগো । সঙ্গে গিটারে ছিলেন অর্ণব মুখার্জি।

দেশ বিদেশ থেকে আসা মোট আঠাত্তরটি ফিল্ম প্রদর্শনের আয়োজন করেছিলেন চলচ্চিত্র উৎসব কমিটি। দেশের ফিল্ম ছিলো ৪৮ টি। বিদেশের ৩০ টি। নির্বাচিত ফিল্মগুলির প্রদর্শন শুরু হয়েছিল শনিবার বিকেল তিনটে থেকে।

এই দু দিনে অ্যানিমেশন ফিল্ম ছিল আটটি,মোবাইল ফিল্ম বারোটি,মাইক্রো ফিল্ম চব্বিশটি, ডকুমেন্টারি বাইশটি এবং শর্ট ফিল্ম বারোটি।
আঞ্চলিক ফিল্মের মধ্যে আকাশপ্রদীপ,ফস্টার,জীবাণু, বিষের বাঁশি, লুজার, সেলফি, বিহীন, দূগগা দূগগা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।

মাইক্রো ফিল্ম ব্রিদলেস,অপঃ জীবনম,অন্তহীন,দ্য বক্স, সেডস অফ লাইফ, স্কুল বেল দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। মোবাইল ফিল্ম মিউটেড, মুদ্রা রাক্ষস,সোল ড্রিমার,দ্য রেড চেয়ার,মর্টে,ওয়ান সুইট রিভেঞ্জ প্রশংসিত হয়েছে।

অ্যানিমেশন সেগমেন্টেে আনবক্সড ,স্পেল, দ্য কনভারসেশন, অ্যাবাউট টাইম,পজিটিভ, হোমসপিটাল বিশেষভাবে উল্লেখের দাবী রাখে।
ডকুমেন্টারিতে প্রায় প্রতিটি ফিল্মই ছিলো গুণমান সমৃদ্ধ।

ফেস্টিভ্যালের চেয়ারপার্সন নীলাঞ্জন ভৌমিক জানান দেশ বিদেশ থেকে প্রায় একশ ফিল্ম এসেছে। এটা ভীষণ আনন্দের বিষয় যে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ফিল্মের মধ্যে দিয়ে নতুন ও সৃজনশীল ফিল্ম মেকাররা তাঁদের প্রতিভাকে তুলে ধরছেন।

নির্বচিত ফিল্মগুলিকে এই ফেস্টিভ্যালে সম্মানিত করা হবে। তিনি জানান স্পেন, ইউ কে, ইজরায়েল, ওশিয়ানিয়া,কোরিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের ফিল্ম সেই সঙ্গে নিজের দেশের ফিল্ম প্রদর্শন করার মধ্যে দিয়ে আমরা একটা গ্লোবালাইজড ভাবনাকে রূপ দিতে পারছি। আগামী দিনে এই আয়োজন আরও পরিব্যপ্তি লাভ করুক– তিনি এই আশা রাখেন।

ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর কমলিকা দত্ত তাঁর বক্তব্যে এই ধরনের চলচ্চিত্র উৎসবের তাৎপর্যের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি জানান, তাঁরা এই চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সম্মান জানাতে পেরে আনন্দিত।

এই চলচ্চিত্র উৎসব নতুন প্রজন্মকে নিশ্চিত অনুপ্রাণিত করবে। উৎসবে চিত্র পরিচালিকাদের নির্মিত বিশেষ কিছু ফিল্ম দর্শকদের মুগ্ধ করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

চলচ্চিত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পেলে তাঁদের এই আয়োজন সার্থক হবে বলে তিনি মনে করেন। অ্যাওয়ার্ড সেরিমনিতে তিনি সকলকে আন্তরিক আমন্ত্রণ জানান এবং ঐ দিন সিনে রাইটার্সদের সিনেমাটিক স্টোরির সম্ভার ” বাইশের বায়োস্কোপ” এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ সম্পর্কে তিনি অবগত করেন।

কো- ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর বিভাস গুহ জানান যে আনুষ্ঠানিক ভাবে আগামী ২০ শে ফেব্রুয়ারি তাঁরা অংশগ্রহণকারীদের সম্মানিত করবেন।৷ ঐ দিন উপস্থিত থাকবেন চিত্র ও সাহিত্য জগতের কিছু বিশেষ ব্যক্তিত্বরা এবং তিনি বলেন উৎসব এখানে শেষ নয়। পরবর্তী উৎসবের জন্য আমরা এ বছর থেকেই আবার প্রস্তুতি নিতে শুরু করব।

অণুছবি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি অগ্নিমিতা দাস জানান এই চলচ্চিত্রগুলি প্রদর্শনের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ফিল্মগুলিকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা ও বিভিন্ন প্রতিভার অন্বেষণের লক্ষ্যে তাঁদের এই উৎসব।

স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই চলচ্চিত্রগুলি তাদের নিজ নিজ নির্মাণ দক্ষতার গুনে মানুষের মনে জায়গা করে নেবে। তিনি জানান আগামী সপ্তাহে মৌলালি যুবকেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে তাঁরা ফেস্টিভ্যালের অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি আয়োজন করেছেন।

অণুছবি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মিঃ ভাস্কর ব্যানার্জী বলেন এই কোভিড সিচুয়েশনেও যে এই উৎসব আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি এর জন্য সত্যিই আনন্দিত।

তিনি আরও বলেন আমরা আঞ্চলিক থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে এই উৎসবের আয়োজন করে থাকি। তাই আগামী দিনেও আমরা করব। আরও বেশী সৃষ্টিশীল মানুষ এই উৎসবে সামিল হোন এই প্রত্যাশা রাখি।

মানুষেরা এসেছেন এবং ছবিগুলি দেখেছেন। আমরা বিভিন্ন মানুষের সৃষ্টিকে জড়ো করে এই চলচ্চিত্র উৎসব করেছি। আশা করি আমাদের এই প্রয়াস শিল্পী ও শিল্পের সার্বিক মানোন্নয়নের সহায়ক হবে।