• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

সুরজিত সেনগুপ্ত বাংলার ফুটবলে নক্ষত্র পতন

ভোম্বলদার প্রয়াণ হয়েছে মাত্র কিছুদিন।শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ময়দানে আবার নেমে এল শোকের ছায়া।এবার সকলকে ছেড়ে চলে গেলেন ভোম্বলদারই প্রিয় বন্ধু সুরজিত।

সুরজিত সেনগুপ্ত (Photo: SNS)

প্রিয় ভোম্বলদার প্রয়াণ হয়েছে মাত্র কয়েকদিন সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ময়দানে আবারও নেমে এল শোকের ছায়া। এবারে আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে গেলেন ভোম্বলদারই প্রিয় বন্ধু সুরজিত। কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই তারকা ফুটবলারের প্রয়াণে গোটা ময়দানকে এখন চারিদিক দিয়ে শোকের ছায়া ঘিরে ফেলেছে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রবাদপ্রতীম ফুটবলার সুরজিত সেনগুপ্ত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করে লিখেছেন, তারকা ফুটবলার সুরজিং সেনগুপ্তের প্রয়াণে আমি শোকস্তব্ধ।

দেশের অন্যতম সেরা উইঙ্গার সুরজিত সেনগুপ্ত আমাদের গোটা বাংলারই নয়, দেশের গর্ব ছিলেন ফুটবলের আসরে। দুই প্রধান ক্লাব মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলেও খেলেছেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অধিনায়কও ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।

ব্যক্তিভাবে আমি তাঁকে সুভদ্র মানুষ হিসেবে জানতাম। আমি সুরজিত সেনগুপ্তের পরিবার-পরিজন অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

কয়েকটা দিনের ব্যবধান মাত্র … প্রিয় বন্ধুকে নিজের কাছেই ডেকে গিলেন ভোম্বলদা … ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে গমন করলেন ময়দান কাঁপানো ফুটবলার সুরজিত সেনগুপ্ত।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে আগেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাও চলছিল … কিন্তু দিন দিন তাঁর অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। চলছিল এক কঠিন জীবনসংগ্রামের লড়াই। শেষপর্যন্ত বৃহস্পতিবার দুপুর একটা পঁয়তাল্লিশ নাগাদ সেই লড়াই থেমে গেল।

পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে তিনি হয়ে গেলেন এখন দুর আকাশের তারা। কয়েকদিন আগেই প্রিয় বন্ধু সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যু হয়েছিল। তার কিছুদিন পরই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

বলে রাখা ভালো, দু’জনে একই সময়ে নিজেদের ফুটবল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। আর কয়েকদিনের ব্যবধানেই দুই বন্ধু সকলকে কাঁদিয়ে এখন ভগবানের দেশে। ১৯৫১ সালের ৩০ আগস্ট সুরজিতের জন্ম।

খিদিরপুর ক্লাবে ফুটবল জীবন শুরু করেছিলেন। কলকাতার তিন বড় ক্লাবেই খেলেছেন। হুগলির ছেলে সুরজিতের প্রথম বড় ক্লাব মোহনবাগান। ১৯৭২ সাল থেকে থেকে দু’বছর মোহনবাগানে ছিলেন।

এরপর দু’বছর বাদে কলকাতার আরও বড় প্রধান ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। আর লাল-হলুদ শিবিরের হয়ে চুটিয়ে টানা ছ’বছর খেলেছিলেন। তারপর ১৯৮০ সালে মহমেডান ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন।

পরের বছরই আবার ফেরেন সবুজ-মেরুনের ঘরে। খেলেছিলেন তিন বছর। ১৯৭৮ সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অধিনায়কও হয়েছিলেন। দেশের হয়ে খেলেছেন ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত।

১৯৭৬ সালে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার অধিনায়কও নির্বাচিত হয়েছিলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ জানুয়ারি (গত সোমবার) শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কয়েকদিন পরই ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর চিকিৎসার জন্য পুরো ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এবং মেডিক্যাল বোর্ডও বসানো হয়েছিল। প্রত্যেকে তৎপর ছিলেন তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য। তাঁর ওপর ডাক্তারদের কড়া নজর ছিল।

কিন্তু অক্সিজেনের মাত্রাও দিন দিন কমছিল তবে কিছুদিন ঠিক থাকলেও, ডাক্তারদের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই জানানো হত যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অবস্থার অবনতি হচ্ছে। কখনোই জানানো হয়নি যে সুরজিত সেনগুপ্ত ভালো রয়েছেন।

কিন্তু, ডাক্তারদের লড়াই সকলের প্রার্থনা আর কাজ করল না ভগবান তাঁর প্রিয় ছেলেকে তাঁর কাছেই টেনে নিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরেই আমাদের সকলের প্রিয় এবং ময়দান কাঁপানো প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার সুরজিত সেনগুপ্ত শেষপর্যন্ত জীবনের লড়াই থামিয়ে দিয়ে পরলোকে গমন করলেন সকলকে কাঁদিয়ে।