নিভছে অমরজ্যোতি, আর সেখানেই বসানো হবে নেতাজির গ্র্যানাইট নির্মিত মূর্তি। প্রধানমন্ত্রী মোদি আজ টুইট করে একথা জানিয়েছেন।
২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির মূর্তি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
নেতাজির মূর্তি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ইন্ডিয়া গেটে হলোগ্রাম স্ট্যাচু থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। কেন ইন্ডিয়া গেটে বসানো হচ্ছে নেতাজির মূর্তি–প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়েছেন আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্ৰ বসুর অবদানের কাছে দেশবাসী কতটা ঋণী এই মূর্তি সেটাই প্রমাণ করবে।
১৯৬৮ সালে ইন্ডিয়া গেট থেকে পঞ্চম জর্জের মূর্তি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।এবার সেই জায়গাতেই ২৮ ফুট উঁচু ও ৬ ফুট চওড়া দৈর্ঘ্যের নেতাজি মূর্তি বসানো হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি নেতাজির হলোগ্রাম মূর্তির উদ্বোধন করবেন।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ন্যাশানাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখার সঙ্গে ইন্ডিয়া গেটের অমরজ্যোতির শিখা নিয়ে গিয়ে মিলিয়ে দেওয়া হবে।
১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধে শহিদদের স্মরণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি অমর জওয়ান জ্যোতি সৌধের উদ্বোধন করেছিলেন।
দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলার নেতাজি-ট্যাবলো বাতিল করা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে চাপানউতরের আবহে ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্তে তিনি খানিকটা বিস্মিতই এমনটাই জানিয়েছেন নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাক।
তাঁর কথায়, ‘এটা মন ভালো করা সিদ্ধান্ত। ইন্ডিয়া গেটে সুভাষচন্দ্র বসুর পুর্ণাবয়ব মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্তকে এভাবেই স্বাগত জানালেন নেতাজি-কন্যা অনিতা বসু পাফ।
অনিতা বর্তমানে জার্মানিতে থাকেন। সেখান থেকে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি এই সিদ্ধান্তে ভীষণ খুশি। খুব ভালো জায়গায় নেতাজির মূর্তি বসানো হবে। কিন্তু খবরটা যেভাবে পেলাম, তাতে কিছুটা বিস্মিত।
আরও আগে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারত। কিন্তু কখনও না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়াই ভালো। আশা করি এবার ট্যাবলো বিতর্ক নিয়েও আর বিশেষ কথা হবে না।
শুক্রবার বেলার দিকে ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেন, নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে ইন্ডিয়া গেটে গ্রানাইট দিয়ে তৈরি নেতাজির বিশাল মূর্তি স্থাপন করা হবে।
যতদিন না ওই মূর্তি তৈরি হচ্ছে, ততদিন নেতাজির হলোগ্রাম মূর্তি থাকবে। রবিবার ওই মূর্তির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এই ঘোষণার পরই সংবাদ সংস্থার তরফে অনিতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাংলার ট্যাবলো বাতিল করা নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি অনিতা।
তবে নেতাজি-কন্যা বলেন, ‘গত বছর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, অনেক কিছুই করা হবে এবছর। নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে কমিটিও তৈরি হয়েছিল। আমিও সেই কমিটিতে ছিলাম। কিন্তু কোনও বৈঠকেই ডাক পাইনি।’
কেন্দ্র নিজের সিদ্ধান্তে অনড় দেখে কলকাতার রেড রোডে ২৬ জানুয়ারি সুভাষ-ট্যাবলো বার করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার।
এরপরই আচমকা ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন মোদি। নেতাজির জীবন-সংগ্রাম নিয়ে তৈরি বাংলার ট্যাবলো বাতিলের পর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রকে।
সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদি সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মতভেদ দেখা গিয়েছিল বিজেপিতেও।
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় পশ্চিমবঙ্গের সুভাষ ট্যাবলো প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রদর্শনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল বাম, কংগ্রেসও।