• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বাংলায় ১০ কোটির টিকাকরণ সম্পূর্ণ, কোভিড বাড়লে আরও কড়া বিধিনিষেধ, সতর্কবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে থাকায় রাজ্যে আরও কড়া কোভিডবিধি জারি হতে পারে। বৃহস্পতিবার নবান্নে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ। তা রুখতে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যে নতুন করে একাধিক বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে থাকায় রাজ্যে আরও কড়া কোভিডবিধি জারি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার নবান্নে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, আগামী ১৫ জানুয়ারির পরে কড়া বিধিনিষেধের অর্থ কি ফের লকডাউন জারি করা?

বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী পনেরো দিন খুব সকলকে সাবধান করে আতঙ্কিত না গুরুত্বপূর্ণ। হয়ে সতর্ক ও নিরাপদে থাকতে বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় এই প্রজাতি মারাত্মক কিছু নয়, তবে ছড়াচ্ছে বেশি।

সাত দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তবে ভয় পাকো বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মাস্ক ব্যবহার কার্যত বাধ্যবাধকতামূলক হতে চলেছে। হাতে পরতে হবে গ্লাভস। ঘন ঘন স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। মেয়েদের মাথার চুল ঢাকতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, মাস্ক-গ্লাভস-স্যানিটাইজার-হেড স্কার্ফ মাস্ট।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, প্রশাসন জোর করে মাস্ক পরাতে পারবে না নিজেরা দয়া করে মাঙ্কটা পরুন। এদিন তিনি পুলিশকেও নির্দেশ দেন, করোনাবিধি ভঙ্গের বিষয়টি কড়া হাতে মোকাবিলা করুন।

এই মুহুর্তে বাড়ির কেউ করোনা আক্রান্ত হলে, সেই পরিবারের বাকি সদস্যরাও কম মেলামেশা করুন একাস্ত প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে না বেরনোর কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জোর দিয়েছেন ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর ওপর।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, তিনি নিজেও অফিস যাচ্ছেন না। বাড়ি থেকে কাজ করছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে বলেও জানান মমতা।

রাজ্যে একটি ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস অনুষ্ঠানে মোদির সঙ্গে ভার্চুয়ালিই উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়ে দেন মমতা। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে লোকাল ট্রেন বন্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ট্রেন বন্ধ করে দিলে সাধারণ মানুষের অসুবিধে হবে। আবার ট্রেন চালু রাখলে সবাই ঘেঁষাঘেঁষি করে যাবে। তাহলে কী করব? মানুষের রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যাক, এটা চাই না। তাই মাস্ক পরে সতর্ক হয়ে চলতে হবে।

তবে এরপরেও যদি সংক্রমণ না কমে তাহলে আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে আমাদের।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বলেন, গত কয়েকদিনে ৪৫,৪১৭ জন পজেটিভ হয়েছে। এর মধ্যে ২৯২০ জন হাসপাতালে ভর্তি।

রাজ্যে ১৯৪ টি কোভিড হাসপাতাল চিহ্নিত করা হয়েছে রাজ্যে কনটেনমেন্ট জোন ৪০৭ টি হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৩০,৮৮১ জন। রাজ্যে পজেটিভিটি রেট ২৩.১৭ শতাংশ। কোভিড থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯৬.৮৫ শতাংশ মানুষ।

করোনা থেকে বাঁচতে টিকাকরণ বাধ্যতামুলক, এমনটাই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সম্মেলনে সেকথা মাথায় রেখে গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও টিকাকরণে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন এখনও পর্যন্ত প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে মোট টিকাকরণ হয়েছে ১০ কোটি ৭৭ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭ জনের।

এর মধ্যে আঠেরো বছরের উর্দ্ধে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটি ৫৪ লক্ষ ৪ হাজার ১৩২ জন। বাকি ৪ কোটি ১৯ লক্ষ ৩ হাজার ৭৩৭ জন দ্বিতীয় ডোজের টিকাও নিয়েছেন।

করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যে এই পরিসংখ্যন কিছুটা হলেও স্বক্তির। তবে যাঁরা এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেননি, তাদের ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কড়া বিধিনিষেধ জারি হয়েছে বঙ্গে। এর মধ্যে একটা রাজ্যে ১০ কোটির টিকাকরণ সম্পূর্ণ হওয়া একটা স্বক্তির খবর।

তবে আরও কোভিড টিকা পাঠানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ সকলের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরেই বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজ শুরু করা যাবে।

এদিকে করোনা টিকা নেওয়ার পরেও সংক্রামিত হচ্ছেন অনেকে। তার ফলে টিকার কার্যকারিতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন, টিকার কার্যকারিতা নিয়ে হাল না ছেড়ে দিয়ে বরং টিকাকরণের ওপরেই জোর দেওয়া উচিত।