দুনিয়াজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে কোভিডের চতুর্থ তরঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে চাইছে কেন্দ্র।
বুধবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্দেশ দিয়েছিলেন যেসব রাজ্যে সংক্রমণের হার বেশি, টিকাকরণের গতি স্লথ ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই, সেখানে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞদের দল পাঠাতে। সেই মতো প্রাথমিকভাবে ছ’টি রাজ্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই রাজ্যগুলিতে পাঠানো হবে দল। সেই লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে চলছে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে টিম তৈরির কাজ।
নতুন করোনা সংক্রমিত হোক বা অ্যাকটিভ কেস, এই দু’ক্ষেত্রেই সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে রয়েছে কেরুল ও মহারাষ্ট্র।
এই দুই রাজ্যকে নিয়েই সবথেকে বেশি চিন্তিত কেন্দ্র। তৃতীয় যে রাজ্য সবথেকে বেশি সংবেদনশীল, তা হল মিজোরাম। প্রতি দশ লাখে সবথেকে বেশি ২০৯৬ জন আক্রান্ত হচ্ছেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যে।
একইসঙ্গে গত দু’সপ্তাহে মিজোরামের সংক্রমণের হার ৮.২ % সবথেকে বেশি। যা জাতীয় হারের ০.৬ % থেকে অনেকটা বেশি। এছাড়া এই রাজ্যে মোট কোভিড টেস্টের মাত্র ৫.৭ শতাংশ আর টি পি সি আর পদ্ধতিতে হয়েছে।
বাংলার ক্ষেত্রে চিন্তার বিষয় হল অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা। বর্তমানে রাজ্যে চিকিৎসাধীন ৭৪৩৩ জন। কেরল ও মহারাষ্ট্রের পর যা সবথেকে বেশি। আবার গত দু’সপ্তাহে রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬১০ জন।
তবে স্বস্তির বিষয় হল প্রতি দশ লাখে বাংলায় আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ৭৮ জন। যা জাতীয় হারের (৭২) থেকে সামান্য বেশি। চিন্তায় থাকা ছয় রাজ্যের তালিকায় বাকি দু’টি রাজ্য হল তামিলনাড় ও কর্নাটক।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, দল প্রায় তৈরি। কয়েকদিনের মধ্যেই তারা রাজ্যগুলির সফরে রওনা দেবে।
ওমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে ঘুরেফিরে আসছে দু’টি প্রশ্ন। এক, কবে মিলবে বুস্টার ডোজ? দুই, শিশুদের টিকাকরণই বা শুরু কবে থেকে? এই দু’ক্ষেত্রেই অবশ্য দায় বিশেষজ্ঞদের দিকে দিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র।
শুক্রবার দাবি করা হল, বিশেষজ্ঞরা এখনও সহমত নন, তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। যদিও বুস্টার প্রসঙ্গে সরাসরি না বলেও কিছু তথ্য সামনে এনে এখনই বুস্টারের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে বক্তব্য পেশ করছে কেন্দ্র।
এই কাজে সবার আগেই হাতিয়ার করা হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য। যেখানে তারা বুস্টারের থেকেও বেশি জোর দিচ্ছে দ্রুত ১০০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ করার দিকে। দেশের ওমিক্রন আক্রান্তদের উপর একটি সমীক্ষা রিপোর্ট।
দেশে এখনও পর্যন্ত ওমিক্রন পজিটিভ হওয়া ৩৫৮ জনের মধ্যে ১৮৩ জনের উপর সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে এঁদের মধ্যে ৮৭ জনেরই করোনা টিকা নেওয়া আছে। এঁদের মধ্যে ২ জনের একটি ডোজ ও ৮২ জনের সম্পূর্ণ টিকাকরণ করা রয়েছে।
যাঁদের মধ্যে আবার বিদেশ থেকে আসা এমন তিনজনের হদিশও মিলেছে যাঁদের তিনটি করে ডোজ নেওয়া আছে ১৬ জন এমন ব্যক্তি আছেন, যাঁরা যে দেশ থেকে এসেছেন, সে দেশের টিকানীতি অনুযায়ী তাঁরা অনুপযুক্ত। ৭৩ জনের টিকাকরণ তথ্য মেলেনি।