• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

ঋণভারে এগিয়ে বাংলা, পিছিয়ে উন্নয়নে, দাবি রাজ্য বিজেপির

অশোকবাবু বলেন, ‘পুরনো ঋণ মুকুব করলেও, যদি সরকার নীতি পরিবর্তন না করে তাহলে প্রাথমিক ঘাটতি চলতে থাকবে এবং ঋণের পাহাড় আবার তৈরি হবে।'

ঋণভার ক্রমশই বেড়ে চলেছে বাংলার ঘাড়ে। আকার ইঙ্গিতে বারবারই সেকথা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ঋণের বোঝাকেই হাতিয়ার করা শুরু করল বিজেপি।

রাজ্য সরকারের ‘এগিয়ে বাংলা’ স্লোগানকে ব্যঙ্গাত্মক পর্যায়ে নিয়ে গেল বঙ্গ বিজেপি। বিজেপির কথায়, ‘ঋণভারে এগিয়ে বাংলা। আর উন্নয়নে পিছিয়ে যাচ্ছে। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে বারবার সেই কথাই স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপি বিধায়ক তথা অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ অশোক লাহিড়ী।

এদিন তিনি বলেন, ‘বাংলার উদ্বগের যথেষ্ট কারণ আছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ত্রাণের সরকার হয়ে যাচ্ছে, পরিত্রাণের নয়। মুখ্যমন্ত্রী কি এই সংকট দেখতে পাচ্ছেন না?’ এদিন অশোকবাবু হিসেব দিয়ে রাজ্য সরকারের আর্থিক ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘পুরনো সব ঋণ ও সেই ঋণের ওপর কর মুকুব হয়ে গেলেও রাজ্য সরকারের আর্থিক দুর্গতি চলতে থাকবে এবং দিনে দিনে বাড়তে থাকবে।’ এরপরই তিনি রিজার্ভ ব্যাংকের পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেখান যে, রাজ্যের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের অনুপাতে রাজ্যের প্রাথমিক ঘাটতি কীভাবে বেড়ে চলেছে।

যেখানে ২০১৯-২০২০ সালে এই পরিমাণ ছিল ০.৪ শতাংশ সেখানে ২০২১-২২-এ তা দাঁড়িয়েছে ১.৯ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান সামনে রেখে অশোকবাবু বলেন, ‘পুরনো ঋণ মুকুব করলেও, যদি সরকার নীতি পরিবর্তন না করে তাহলে প্রাথমিক ঘাটতি চলতে থাকবে এবং ঋণের পাহাড় আবার তৈরি হবে।’ এরপর তিনি রাজ্যের ঘাটতি বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন। অর্থাৎ রাজ্যের আয়ের তুলনায় ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘রাজ্যের ২০২১-২২ সালে এই ঘাটতির পরিমাণ ৬০ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। যা ২০১৯-২০ সালে ছিল ৩৬ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা।’

তিনি যোগ করেন, “দেশের ১৬ টি রাজ্য ঘাটতি বৃদ্ধির হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেও বাকি কয়েকটি রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গের তা বেড়েই যাচ্ছে। এখন দেশের মধ্যে এই বৃদ্ধির হারে চতুর্থ স্থানে আছে বাংলা। তাই এই বৃদ্ধির হারে এগিয়ে বাংলা।” বলাই চলে পশ্চিমবঙ্গের এই ঋণের বোঝাকে এবার হাতিয়ার করতে শুরু করেছে বিজেপি।

গতকালের কলকাতার পুরভোটের সন্ত্রাস নিয়ে দিনভর শাসকদলকে কাঠগড়ায় তুলেছে গেরুয়া শিবির। এমনকী রাত পর্যন্ত পুরভোেট বাতিলের দাবি জানিয়েছে তারা। যদিও কমিশন সেই দাবি খারিজ করেছে। আর তার পরের দিনই বিজেপির তরফে , রাজ্যের ঋণের বোঝা নিয়ে সরব হতে দেখা গেল।

এদিন শুধু ঘাটতির কথা তুলে ধরেননি, পাশাপাশি পরামর্শও দিয়েছেন অশোকবাবু। পরামর্শ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন সংখ্যার স্বচ্ছতা অর্থাৎ স্বচ্ছ অডিট রিপোর্ট পেশ করা, উন্নয়ন উপর জোর দেওয়া ও সরকারি খাতে যা খরচ হচ্ছে তার যথার্থ মূল্যের ওপর জোর দেওয়া। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারের জনকল্যাণ মূলক প্রকল্প ছাড়া উন্নয়ন মূলক প্রকল্পে খরচ কমে যাচ্ছে।’