অবশেষে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করল কেন্দ্র। আজ সকালবেলা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষণা করেন এবং নিজের বক্তব্যের শুরুতেই তিনি এই বিষয়ে কথা বলেন। গুরু পরব উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে যে একটি সুদূরপ্রসারি রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে তা অল্প হলেও আঁচ করা গেল।
আসন্ন পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভিত শক্ত করার জন্যই নরেন্দ্র মোদির এই প্রস্তাব বলে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন। মূলত এই কৃষি আইন বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসের তৈরি মাটিকে নড়বড়ে করিয়ে দিয়ে বিজেপিকে কৃষক বন্ধু হিসেবে প্রমাণ করা এবং বিজেপির প্রতি সাধারণ মানুষের মনোভাবকে অল্পবিস্তর হলেও পাল্টে ফেলাই মূল উদ্দেশ্য বলে পরিগণিত করছেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক মহল।
কারণ যাই হোক না কেন সিংহ বর্ডার গাজীপুর সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের জন্য এটি একটি বিশাল জয়। কেন্দ্রের এতদিনে বোধোদয় হাওয়ায় খুশি আন্দোলনকারী কৃষকরাও। এই তিনটি কৃষক বিরোধী আইন বাতিল হওয়ার দরুন এবং কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে যে উপকৃত হবে দেশের লক্ষ লক্ষ কৃষক সেটা আলাদাভাবে বলার প্রয়োজন নেই।
নিজের বক্তব্য পেশ করার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি আইন আনা হয়েছিল কৃষকদের স্বার্থেই। আন্দোলনকারী কৃষকদের নতুন করে আবার কাজ শুরু করার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। তিনি চাইছেন কৃষকরা আবার কাজে ফিরুক। এই বিষয়ে কাউকে দোষারোপ করতে চাননি তিনি। গুরু নানকের আবির্ভাব দিবসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এও জানান, ‘আগামী মাসেই তিনি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু করবেন’।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এটি স্পষ্ট করেন, ‘যে ছোট কৃষকদের সুবিধার জন্যই এই আইনটি আনা হয়েছিল। কিন্তু যথার্থভাবে এই আইনের অর্থ কৃষকদের বোঝানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি।’
আর কিছু দিনের ভেতরেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। আন্দোলনকারী কৃষকরা ট্র্যাক্টর নিয়ে সেই সময় সংসদ অভিযানের হুমকি দিয়েছিলেন। বিরোধীপক্ষের কথা অনুযায়ী সেই বিড়ম্বনা এড়াতে তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের।
কারণ যাই হোক না কেন কৃষক বিরোধী এই তিনটি আইন প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তে খুশি আন্দোলনকারী কৃষকরা এবং এটা যে তাদের একটি বিরাট জয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।