• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

দেশে মমতা এখন বিজেপি’র আসল প্রতিপক্ষ!

কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেছেন যে,পাঞ্জাবে কংগ্রেসের যে অভ্যন্তরীণ কলহ দেখা যাচ্ছে এরকমটা উনি গত চল্লিশ বছরে দেখেননি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবিঃএসএনএস)

কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেছেন যে,পাঞ্জাবে কংগ্রেসের যে অভ্যন্তরীণ কলহ দেখা যাচ্ছে এরকমটা উনি গত চল্লিশ বছরে দেখেননি। গত ছয় মাস ধরে যে ভয়াবহ যাত্রাপালা পাঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে চলছে। এমনটা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি শুধু দেখেননি তাই নয়!

তিনি বলছেন যে, এই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ক্যাপ্টেন আমৃন্দর সিং  কে সরানো নভজোৎ সিং সিধু কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা তারপরেও কিন্তু কোনো সমস্যা সমাধান হয়নি।উল্টে কংগ্রেসের যিনি পাঞ্জাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সেই হরিশ রাওয়াত তিনি প্রহরীর পদ থেকে নিজেই ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন।

হরিশ রাওয়াত রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী তখন সেবা দলের সভাপতি ছিলেন । মণীশ তখন ছাত্র সংগঠন এন এস ইউ আই এর সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন।

চোখের সামনে গত চল্লিশ বছরে  তিল করে কংগ্রেসের যে অধোগতি যে ধরনের অবক্ষয়  চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি সেটা আমিও সাংবাদিক জীবনে এর আগে কখনো দেখিনি।

মধ্যপ্রদেশের খাণ্ডোয়া লোকসভার উপনির্বাচন আসছে। সেখানে মধ্য প্রদেশ কংগ্রেসের এক বিশিষ্ট নেতা কংগ্রেসের বিধায়ক কংগ্রেসই ছেড়ে দিল।আর আর বিজেপিতে যোগ দিলো। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এর উপস্থিতিতে তিনি বিজেপির সদস্য পদ গ্রহণ করলেন।

এই শচীন বিড়লা কে? এই প্রচীন বিড়লা মধ্যপ্রদেশের একজন বিশিষ্ট গুর্জর সমাজের নেতা। এহেন শচীন বিড়লা যোগ দিয়েই বলেছেন ,আমি খুব গর্বিত যে আজ আমি দেশের সবচেয়ে যেটা বড় দল সেই দলের সদস্য হলাম ।আর আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই জন্য কৃতজ্ঞ। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান বলেছেন একটু রসিকতা করেই “বরি দের লাগি নন্দলালা”।

আসলে রাহুল গান্ধী নিজেই এক অদ্ভুত ধারাবাহিকতা হীনতার রাখছেন বারবার। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হলো আর সেখানে সমস্ত সদস্য দাবি করছেন যে রাহুল গান্ধী তিনি যাতে সভাপতি পদের দায়িত্ব নেন। রাহুল গান্ধী তখন মাথা নীচু করে বসে আছেন। আর বলছেন না, তিনি এখনও সভাপতি পদের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত নন ,ভবিষ্যতে ভেবে দেখবেন। সোনিয়া গান্ধী এই বয়সে এই শারীরিক পরিস্থিতিতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন কিছুদিনের জন্য এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে।

সমস্যা হচ্ছে রাহুল গান্ধী যদি দায়িত্ব নিতে রাজি না থাকেন এবং কংগ্রেস সংগঠন থেকে দূরে চলে যেতে চান  তাহলে তিনি পুরোপুরি ছেড়ে দিন। কিন্তু তিনি দায়িত্বভার না নিয়ে সংগঠনটা কে মজবুত করার জন্য চেষ্টা করবেন ,তিনি ঘরোয়া বৈঠক করবেন তাঁর  তুঘলক রোডের  বাড়িতে  বসে ,আর তিনি বিভিন্ন ঘটনায় সারাদিন ধরে টুইট করবেন এটাও কিন্তু কংগ্রেস নেতা এবং কর্মীদের কাছে আরও বেশি করে সংশয় সৃষ্টি করছে অর্থাৎ ‘ঘরে ও নহে বাহিরেও নহে’ এরকম একটা পরিস্থিতি! এটা কি একটা কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ?

ধরুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি যদি এমনটা করতেন !তার সংগঠনের যদি এই ধরনের কাণ্ডকারখানা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় করতেন তাহলে আমরা কি বলতাম যে উনি খুব বিচক্ষণ?উনাকে এই পরিস্থিতি তা ভাবার জন্য সময় দেওয়া হোক?একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা চলছি সেখানে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হবে দায়িত্ব না নিয়ে ক্ষমতা ভোগ করা সেটা কিন্তু কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীরাও মেনে নিতে পারছেন না।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুল গান্ধী স্পষ্টই বুঝতে পেরেছিলেন যে নরেন্দ্র মোদী আসছেন। খুব স্পষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি যেহেতু কান্ডারী তাই প্রকাশ্যে সে কথা বলা সম্ভব ছিল না। তাহলে দলের নিচুতলার সবথেকে সর্বশেষ কর্মী দের মধ্যে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তো। নরেন্দ্র মোদী যেন কোন একটা রক্তমাংসের মানুষ নন একটা ম্যানুফ্যাকচারড পাবলিক ওপিনিয়ন। যাকে পরবর্তীকালে অনেকেই alternate reality নাম দিয়েছেন।

এই  বাস্তবতা তৈরি করে কখনো পুলওয়ামা আক্রমণ, কখনো ১০০ কোটি মানুষের টিকাকরণ এই ধরনের প্রচারকে অনেক সমাজবিজ্ঞানী বলছেন যে পোস্ট ট্রুথ ইনফর্মেশন গেম। কলকাতা  বিশ্ববিদ্যালয় এর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক দীপঙ্কর সিনহা এই বিষয়ের ওপর গবেষণা করে একটা বই পর্যন্ত লিখেছেন। যেখানে তিনি দেখিয়েছেন যে বাস্তবে একটা প্রান্তিক মানুষ পর্যন্ত ঠিক কতটা পরিষেবা পৌঁছচ্ছে সেটা বড় কথা নয়!

কিন্তু এই মিডিয়ার ট্রাই ডেমোক্রেসিতে এমন একটা ঢক্কা নিনাদ গড়ে তুলতে হবে যেখানে হবুচন্দ্র রাজা এবং গবুচন্দ্র মন্ত্রীর দেশে মানুষ আহা আহা করতে শুরু করবে। আর পিরামিডের নীচুতলা  পর্যন্ত অর্থাৎ সভ্যতার পিলসুজের সর্বশেষ প্রান্ত পর্যন্ত সেই বাণী ছড়িয়ে পড়বে।

অল্টারনেট রিয়েলিটি এর যে খেলা সেই খেলা একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু ২০২১ সালে খেলা হবে নাম দিয়ে সেই বিজেপির খেলাটাকে ভেস্তে দিতে পেরেছেন ।আর আজ তাই গোটা দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটা জাতীয় বিকল্প হিসেবে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে ।

কংগ্রেসের এইযে অধঃপতন, এই যে মিস ম্যানেজমেন্ট ,এইযে অবক্ষয়  এটা কিন্তু আজ হঠাৎ শুরু হয়েছে এমন নয়। সুতরাং সবটাই রাহুল গান্ধীর জন্ম হয়েছে এমনটা বললেও সত্যের অপলাপ হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে দেখছি ধরুন পাঞ্জাবের কথা আলোচনা করলাম। ছত্রিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল  প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি টি.এস.সিং দেও মুখ্যমন্ত্রীকে সরানোর দাবিতে বিক্ষোভে  উত্তাল।

ভূপেশ বাঘেল এসে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন টি. এস. সিং দেও তিনিও দেখা করেছেন। তার কারণ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ কার্যকলাপ ছিল ।আর সেটার মোকাবিলা করার জন্য তখন হাই কমেন্ড কথা দিয়েছিল যে একটা সময়ের পর টি. এস. সিং দেও কে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে।অর্থাৎ rotational  মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাইকমান্ড আর সেটা করতে পারছেন না। বা করতে চাইছেন না। rotational প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত হয়। হয়না সেটা নয় ইসরাইলে এই মুহূর্তে rotational প্রধানমন্ত্রী তত্ত্ব বাস্তবায়িত করা হয়েছে কই সে দেশে তো এরকম কোন বিক্ষুব্ধ কার্যকলাপ দেখা যাচ্ছে না।

বরং বিক্ষত কার্যকলাপ থামাতে ইজরায়েলেই এই ধারণাটা দেওয়া হয়েছে।আর সেটা সকলে মানছেন।এখানে প্রশ্ন হচ্ছে যে, রাহুল গান্ধী যেহেতু নিজের দায়িত্ব গ্রহণ করছেন না সুতরাং তার নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্বের মধ্যে একটা অবক্ষয় হচ্ছে । সেই কারণে কংগ্রেস কর্মীরা কংগ্রেসের রাজ্যের নেতারা তারা তাদের নির্দেশ মানছেনা।

রাহুল গান্ধী যে আসলে কী নির্দেশ দিয়েছেন সেটাই তো স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন নেতাকে বিভিন্ন বার্তা দিলে কখনোই নেতৃত্ব   শক্তিশালী হতে পারেনা। ক্যাপ্টেন অমৃন্দর সিং এর পক্ষে রাহুল গান্ধী ছিলেন নাকি নভজোৎ  সিং সিধুর পক্ষে ছিলেন সেটা স্পষ্ট নয় ।আবার যিনি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান ,যিনি উত্তরাখণ্ডের ছায়া মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উত্তরাখণ্ডে গিয়ে রাজনীতি করতে চান তাকে প্রাণ পাঞ্জাবের প্রভারি করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল  ঝামেলা সামলানোর।

সেই দায়িত্ব তিনি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন উত্তরাখণ্ডের ছায়া মুখ্যমন্ত্রী তাকে করা হবে কিনা সেই নিয়ে উত্তরাখণ্ডের রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে তুলকালাম চলছে। সুতরাং কোনো জায়গাটাতেই স্পষ্টতা না থাকায় অধীর চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে নিয়মিত আক্রমণ করছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে।

এদিকে কংগ্রেস হাইকমান্ড বলছেন সোনিয়া গান্ধী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে চা পানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন সেখানে রাহুল গান্ধী উপস্থিত থাকছেন। সেখানে বিজেপিকে সর্বভারতীয় প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে সমবেতভাবে বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে কোনটা কংগ্রেসের নীতি কোনটা কংগ্রেসের কৌশল সবটাই একটা অস্পষ্টতার মধ্যে আছে।

যে কথাটা বলছিলাম যে কংগ্রেস এর ইতিহাস শতবর্ষের অধিক প্রাচীন ইতিহাস। একটা সময় কংগ্রেসের মাধ্যমেই ভারতের জাতীয়তাবাদের বিকাশ হয়েছে অর্থাৎ যেটাকে বলা হয় যে, স্বাধীনতার আগে জাতীয় কংগ্রেসের প্ল্যাটফর্মের সাহায্য নিয়ে ভারতে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিকশিত হয়। তারপর দেখা যায় যে আস্তে আস্তে সেই কংগ্রেস তার অবক্ষয় শুরু হয়।

ঐতিহাসিক সুরঞ্জন দাস তাঁর interrogating politics and Society 20th century in Indian subcontinent গ্রন্থে তিনি লিখেছেন যে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এর একটা জাতি গঠনের ডায়নামিকস ছিল। আর সেই ডায়নামিকস নষ্ট হলো ।একটা গ্রেট কংগ্রেস থেকে একটা ডার্টি কংগ্রেসে কংগ্রেস দলটি  পরিণত হল ।১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট এর পর থেকে ধীরে ধীরে  তার যে ঐতিহাসিক লিগ্যাসি সেটা নষ্ট হতে লাগলো।

কিন্তু কংগ্রেস ভারতের প্রথম একটা mass bass রাজনৈতিক দল। আর গান্ধীজীর নেতৃত্বে সেই mass mobilization টা হয়েছিল। কিন্তু এই কংগ্রেস গঠনের মধ্যে দিয়ে ভারতীয় রাজনীতির যে radicalism এর দিকটা ছিল সেটার কিন্তু marginalisation হয়েছে বলে সুরঞ্জন দাস মনে করেন।

আস্তে আস্তে কংগ্রেসের মধ্যে বাম এবং ডান দুই ধরনের  রাজনীতির সংমিশ্রণ হয় ।আর কংগ্রেস দল হিসেবে কিন্তু একদিকে যেরকম গণতন্ত্রের বিকাশ হয়েছে আর এমন কিছু কিছু পদক্ষেপ নেহেরুর সময় পর্যন্ত হয়েছিল যেগুলো ভারতের ফেডারেল স্ট্রাকচার এর জন্য খুব ভালো দৃষ্টান্ত কিন্তু নয়। যেমন নেহেরুর সময়ে অনেকগুলো রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছিল আর সেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির যে ঘটনাগুলো সেগুলো কিন্তু সুরঞ্জন দাস তিনি মনে করেছেন যে ১৯৫২ থেকে ১৯৬৪ অন্তত পাঁচ বার অ-কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের নেতৃত্বে সরকারকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে ।

সেটা কেরালাতে করা হয়েছে সেটা অন্ধপ্রদেশ করা হয়েছে উড়িষ্যায় করা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এরপর দেখা যাচ্ছে যে কংগ্রেস দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও কংগ্রেসের ইন্দিরা গান্ধীর সময়ই কংগ্রেস একটা জোরালো ধাক্কা খেয়েছে ১৯৬৯ সালে। নটা রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। তারপর ইন্দিরা গান্ধীর সময়ই কিন্তু কংগ্রেসের ভাঙ্গন হয়েছে। দু-দুবার কংগ্রেস ভেঙেছে।  হিন্দু জাতীয়তাবাদী শক্তি ছিল ।

কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে জনসংযোগ থেকে বিজেপি রূপান্তর হওয়ার পর আস্তে আস্তে বিজেপিও কিন্তু ভারতের একটা গুরুত্বপূর্ণ দল হতে শুরু করে।আর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জনতা সরকার গঠন হয়েছে। কিন্তু ৭৭ সালেই হোক বা পরবর্তীকালে দেবেগৌড়া-গুজরালের সরকারই হোক কখনোই কিন্তু সেই সরকার স্থায়ী সরকার হিসেবে মাথাচাড়া দিতে পারেনি।

কিন্তু বিজেপি প্রথম দল যারা মোরারজি দেশাই ,চরণ সিং, বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ,চন্দ্রশেখর, দেবেগৌড়া এবং গুজরালের মতন প্রধানমন্ত্রী নন ।বাজপেয়ি ৬ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তখনো সেটা কোয়ালিশন সরকার ছিল। পরবর্তীকালে বিজেপিই কিন্তু টানা দশ বছর হতে চলল নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্রুট মেজরিটি নিয়ে তারা কিন্তু রাজত্ব করছেন।

সেই পরিস্থিতিতে শুধু  বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেসের কিন্তু শুধু আসন নয় ,শুধু শতকরা ভোট নয় রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস কার্যত মুছে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের কথায় যদি ধরা যায় এবারে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস বামপন্থীদের সাথে হাত মিলিয়ে ইন্ডিয়ান সেকুলারিসম এর সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস এবং বাম দু’পক্ষই শুন্য হয়ে গেছে। সেই রাজনৈতিক পরিষদ পশ্চিমবঙ্গেও কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক  পরিষর টা কিন্তু বিজেপি নিয়ে নিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের এইরকম একটা অবস্থা  কি কাম্য? কংগ্রেসের বোধহয় বোঝা প্রয়োজন যে পুরনো সামন্ততান্ত্রিক জমিদারি মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আর যে  রাজ্যে যে আঞ্চলিক দলগুলো গঠিত হয়েছে তাদের কে মর্যাদা দিতে হবে। এটা ঠিক যে বেশকিছু রাজ্যে কংগ্রেস বনাম বিজেপি একটা লড়াই আছে ।আঞ্চলিক দলগুলো এখনো সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেনি।কিন্তু  দুদিন আগেও যেখানে আঞ্চলিক দল গুলো ছিল না সেখানে আঞ্চলিক দল তৈরি হয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

কেউ কি ভাবতে পেরেছিল যে গোয়াতে তৃণমূল কংগ্রেস এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে?
কেউ কি ভাবতে পেরেছিল যে ত্রিপুরায় বিজেপির শাসন এইরকম ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে  একটা বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে?

সুতরাং কংগ্রেসকেও তার নেতৃত্ব সুগঠিত করতে হবে। আর এই অবক্ষয় কে রোধ করতে হবে। কিন্তু কংগ্রেস যখন গণতন্ত্রের কথা বলেন তখন কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের তাদের সংগঠনের ক্ষেত্রেও কতটা গণতন্ত্র কার্যকর হচ্ছে সেটা তাদের ভেবে দেখা দরকার। যে বিক্ষুব্ধ নেতারাও চিঠি দিয়েছিল যারা G-23 বলে পরিচিত সেই বিক্ষুব্ধ নেতারা এখনো তাদেরকে ডেকে কথা বলা তো দূর অস্ত তাদের সাথে এখনো পর্যন্ত কোনো মীমাংসাও হাইকমান্ড করে উঠতে পারেনি।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের মতো এতো জটিল আর এত বড় দেশ চালানোর জন্য যে রাজনৈতিক দর্শন ও মানসিকতা প্রয়োজন সেটা কিন্তু রাহুল গান্ধীর  নেতৃত্বে দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং এই মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদির মোকাবিলা করার জন্য অন্যকে দোষ না দিয়ে কংগ্রেসের নিজেদের ঘর নিজেদের সামলানো উচিত।

আর সমস্ত বিরোধীদলের নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে একই মঞ্চে এসে দাঁড়ানো উচিত। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন আর কে হবেন না সেটা আজকের আলোচ্য বিষয় নয়।আজকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে যে বিজেপিকে প্রধান শত্রু চিহ্নিত করে সমস্ত বিরোধীদলকে সেই  ছাতার তলায় এসে দাঁড়াতে হবে।ঠিক  যেমনটা হয়েছিল জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সময়।