রাজধানী দিল্লির সড়ক মেরামতি ভাগের মা গঙ্গা পায়নার দশা। দিল্লি সরকারের পূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট এলাকার আধিকারিকদের সড়ক যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী করে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল তিন বছর আগে। সংশ্লিষ্ট এলাকাধীন সড়কগুলির অবস্থার জন্য কোনও অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে আধিকারিকের ফোন নম্বর সাধারণ নোটিশ বোর্ডে টাঙানো থাকতে হবে।
পূর্ত দফতর ষাট ফুটের বেশি চওড়া সড়গুলির রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। কারণ অন্যান্য অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত সড়কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার কাঁধে রয়েছে। প্রশস্ত সড়কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হয় ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি বা দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি যৌথভাবে ভাগাভাগি করে দেখাশোনা করে থাকে।
করোনাকালে একবছরের বেশি সময় ধরে সড়কগুলি বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সড়কের মেরামতি ও সড়কের তলা দিয়ে জল ও অন্যান্য সংযোগের মেরামতি ও নতুন সংযোগের জন্য খোঁড়খুঁড়ি করতে হয়েছে।
ফলে অন্যতম প্রধান সড়ক শ্রীঅরবিন্দ মার্গ এর একটি দিক দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হয়েছে বা হচ্ছে। এতে একদিক দিয়ে যান চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। যান জটও হচ্ছে নিত্যিদিন। এছাড়া অন্তর্বর্তী সংযোগকারী সড়কগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। যান চালানোর পক্ষে প্রায় অযোগ্য।
এছাড়া সংযোগকারী সড়কগুলির মধ্যে বহুল জনবসতি অধ্যুষিত বসন্ত কুঞ্জ এবং দ্বারকা নগরের মতো বসতি রয়েছে। ফলে তার মধ্যে দিয়ে যান পরিচালনা প্রায় দুঃসাধ্য। এর মধ্যে আবার সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের জন্য নিউ দিল্লির সকল সড়কই এক বা অন্য সমস্যা নিয়ে কাতর।
তবে মানুষ অসুবিধাকে সহ্য করে নিয়েছে ভবিষ্যতের সুবিধার আশায়। কিন্তু রাজধানী শহরের অধিকাংশ সড়কই বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কগুলি অবিলম্বে মেরামতি ও ব্যবহারযোগ্য করতে দিনরাত এক করে কাজ শুরু করা উচিত বলে মনে করছেন রাজধানী শহরের বাসিন্দারা।
কিন্তু সড়ক মেরামতির দাবি করা এবং সড়ক মেরামতির জন্য সরকারি নির্দেশ জারি করা এক এবং প্রকৃত প্রস্তাবে কাজে নামা আর। কারণ একাধিক সংস্থাকে তাদের পরিষেবা চালু রাখার জন্য প্রতিনিয়তই সড়কের একাধিক জায়গায় কেটে তা মেরামতের ব্যবস্থা করতে হয়।
সকল সংস্থাকে একই সময়ে কাজে হাত দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক অসুবিধাও রয়েছে। কারণ সকলের কাজের ধরন সহজ সরল নয় বা বিপদ সঙ্কুল। ফলে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে একটি সংস্থার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর অন্য সংস্থাকে কাজের অনুমতি দিতে হচ্ছে।
এতে অযথা সময় চলে যাচ্ছে। কিন্তু উপায়ও নেই। সকলই জরুরি পরিষেবা। ফলে সড়ক ব্যবহারকারীরাই কেবল অসুবিধার মধ্যে পড়ছেন তাই নয়, সঙ্গে সংস্থাগুলিকেও তাদের কাজ সম্পূর্ণ করতে বেশ নাজেহাল হতে হচ্ছে।
এছাড়া রাজনৈতিক দ্বন্দ্বও এই সড়ক সচল রাখার ক্ষেত্রে এক বাধার প্রাচীর তৈরি করেছে। এখানে তিনটি প্রধান বাধার মধ্যে দিল্লির লেফটেনান্ট গভর্নর, দিল্লি পুরসভা এবং দিল্লি সরকারের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে কোনও কাজই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রেও এই সমস্যা প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে। দিল্লির লেফটেনান্ট গভর্নর, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং পুরসভার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব সকল কাজেই একটা বাধার সৃষ্টি করে থাকে।
ফলে সড়ক মেরামতির ক্ষেত্রে সৌজন্যর চেয়ে প্রতিযোগিতার প্রয়োজন অনেক বেশি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে পূর্ত দফতার ও পুরসভাকে নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে নজর দিয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সড়ক মেরামতিতে হাত দিলেই সবদিক বজায় থাকে।