• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

মহালয়ার পরদিনই মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের সম্ভাবনা

উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোনা যাচ্ছে,মহালয়ার পরের দিন বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo:SNS)

ভবানীপুর উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোনা যাচ্ছে, মহালয়ার ঠিক পরের দিন বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু এই শপথ গ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে টানাপোড়েন চলছে রাজভবন ও বিধানসভার মধ্যে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় নিজে রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করাতে চান ভবানীপুরের জয়ী বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

অন্যদিকে রাজভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হলে আপত্তি রয়েছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। সোমবার এই বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় বৈঠকে বসেছিলেন বিধানসভার স্পিকার এবং তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী।

সূত্রের খবর, বিধায়ক পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজভবনে শপথগ্রহণ হলে সেখানে অংশগ্রহণ নাও করতে পারেন তারা দু’জন। টানাপোড়েনের জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়ক পদে স্পিকার নাকি রাজ্যপাল–কার কাছে শপথবাক্য পাঠ করবেন তা নিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

এতাবৎ কালের প্রথা অনুযায়ী উপনির্বাচনে জয়ী প্রার্থীদের রাজ্যপালের অনুমতিক্রমে শপথবাক্য পাঠ করান বিধানসভার স্পিকার। অর্থাৎ রাজ্যপাল অনুমতি দিলে তবেই ভবানীপুরে জয়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করাতে পারবেন।

কিন্তু বিধানসভা সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে রাজভবন থেকে একটি বার্তা এসেছে বিধাসভায় সেই বার্তায় বলা হয়েছে সংবিধানের ১৮৮ ধারা অনুযায়ী, শপথগ্রহণ নিয়ে এতদিন যে অধিকার রাজ্যপাল বিধানসভার স্পিকারকে দিয়েছিলেন, তা প্রত্যাহার করা হল। ঘটনাচক্রে বহু দশক ধরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালরা এই দায়িত্ব স্পিকারকে দিয়ে রেখেছিলেন।

কিন্তু বর্তমানে সেই অধিকার আইন বলে ফিরিয়ে নিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে বলা হয়েছে, এরপর থেকে নির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানে রাজ্যপাল। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, সংসদে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির। সুতরাং রাজ্য বিধানসভার ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব স্বাভাবিক নিয়মেই রাজ্যপালের।

কিন্তু প্রায় সব ক্ষেত্রেই সাংসদ বা বিধায়কদের শপথ গ্রহণের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল তাঁদের মনোনীত ব্যক্তিদের দিয়ে থাকেন। স্পিকার নির্বাচন হয়ে গেলে সাধারণত এই দায়িত্ব পেয়ে থাকেন লোকসভা বা বিধানসভার স্পিকার। স্পিকার নির্বাচনের আগে এই দায়িত্ব থাকে প্রোটেম স্পিকারের ওপর। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই নিয়মই বহাল ছিল।

কিন্তু এবার রাজভবন সেই নিয়ম প্রত্যাহার করেছে। ফলে আদৌ ৭ তারিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়ক পদে শপথ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চিঠি দিয়েছে রাজ্যপালকে। সূত্রের খবর, পরিষদীয় এই পরিস্থিতিতে সোমবার তৃণমূল পরিষদীয় দল মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ফোনেও কথা বলেছেন রাজ্যপালের সঙ্গে।

রাজ্যপাল জানিয়েছেন, স্পিকারে শপথবাক্য পাঠ করানোর অনুমতি প্রত্যাহার করা হয়েছে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে রাজভবন। এদিকে তৃণমূল চাইছে বিধানসভাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু রাজ্যপাল অনুমতি না দিলে বিধানসভা নাকি রাজভবন কোথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়ক হিসেবে শপথ নেবেন, তা নিয়ে জট কাটল না। তৃণমুল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছে রাজ্যপাল নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন ভাঙনের মুখে পড়া বিজেপিকে রক্ষা করার জন্যই রাজ্যপাল এরকম ভূমিকা নিয়েছেন।