বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের দুই কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রচারে এসে ঝড় তুলে দিয়ে গেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩০ সেপ্টেম্বর কলকাতার ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে সাধারণ নির্বাচন হতে চলেছে।
এই দুই কেন্দ্রের দুই প্রার্থীর সমর্থনে এদিন জোড়া সভা করেন অভিষেক। দুই সভাতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি। সেইসঙ্গে এদিন তার আক্রমণের নিশানায় কংগ্রেসও ছিল। তিনি এদিন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র লড়াই করছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনে বিজেপির কাছে কংগ্রেস হারছে।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস হারাচ্ছে বিজেপিকে। সে কারণেই গােটা দেশের মানুষ চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর পাশাপাশি এদিন দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই এবং ইডি’কেও তুলােধনা করেন। জানিয়ে দেন, এই দুই সংস্থা হচ্ছে বিজেপির দুই ভাই।
তৃণমূল কংগ্রেস তাদের দরজা খুললে বিজেপি দলটা চারদিনে উঠে যাবে বলেও এদিন তিনি হুশিয়ারি দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দুই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের ভােট দেওয়ার আবেদন করেন তিনি নির্বাচনের পরে পাঁচ বছর দুই কেন্দ্রের উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজের কাধে তুলে দেন।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই সভায় দুই প্রার্থী জাকির হােসেন, আমিরুল ইসলাম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সুদীপ রাহা, জঙ্গিপুর এবং বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ জেলা ইউনিটের দুই সভাপতি সাংসদ খলিলুর রহমান, শাওনি সিংহ রায়, দুই ইউনিটের চেয়ারম্যান কানাই মণ্ডল, আবু তাহের খান, মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, সুব্রত সাহা, আখরুজ্জামান, বিধায়ক মহম্মদ আলি , সৌমিক হােসেন, আশিস মার্জিত থেকে বর্ষীয়ান নেতা অশােক দাস প্রমুখ।
এদিন জঙ্গিপুরের সভায় কংগ্রেসের সঙ্গে কংগেসের ৩৯ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃণমূলে যােগ দেন ফারাক্কার পাঁচ বারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক মইনুল হক। তার হাতে পতাকা তুলে দেন অভিষেক। এদিন প্রথম থেকেই অভিষেক ছিলেন আক্রমণাত্মক।
তিনি বলেন, ‘যারা বলেছিল, সােনার বাংলা গড়বে, তারা আজ কোথায়? আর যে বলেছিল, গরুর দুধ থেকে সােনা বের করবে, আজ তাকেই বের করে দিয়েছে। তার গল্প শেষ। ওরা বলেছিল স্ট্রোরে শুইয়ে দেব, ছ’ফুট গর্ত করে পুতে দেব। তাদের কী হল? টা টা বাই বাই। বাংলার মানুষের রায়, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। প্রমাণিত হয়ে গেছে।
এবারের নির্বাচনে এরা কী না করেছে। কথায় কথায় ইডি আর সিবিআই। বিজেপি’র দুই ভাই, ইডি আর সিবিআই। কথায় কথায় একটা করে নােটিশ পাঠাবে আর তৃণমূলকে চমকাবে। আমাকে ১৫ দিনে পাঁচটি নােটিশ পাঠিয়েছে পাঁচটি হেড অফিস।
আমি বলেছি, পাঁচশােটা নােটিশ পাঠাও, তবুও তােমদের কাছে মাথা নত করব না। তােমাদেরকে দিল্লি ছাড়া করব। কংগ্রেসের উদ্দেশে এদিন অভিষেক বলেন, কংগ্রেস নাকি বিজেপির সঙ্গে লড়ছে?
কংগ্রেস নেতাদের মাটিতে দেখা যায় জেতানাের পরে বরমপুরের সাংসদকে মাটিতে পেয়েছেন? কংগ্রেস নাকি বিজেপিকে হারাবে। কংগ্রেস হয়তাে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইরছে। তৃণমূলও লড়াই করছে। কিন্তু পার্থক্য কী? কংগ্রেস বিজেপির কাছে হারছে।
আর তৃণমূল বিজেপিকে হারাচ্ছে। সাত বছর ধরে হারিয়েছি। যতবার নির্বাচন হয়েছে, তার হারিয়েছি। এবার তাে ভারত জুড়ে খেলা হবে। আমি তাে প্রকাশ্যে বলেছি কংগ্রেসকে দিয়ে হবে না।
সে কারণে আজকে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা আওয়াজ উঠেছে, দেশ কি নেত্রী ক্যায়সি হাে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় য্যায়সি হাে। এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস নেতাদের বড় বড় ভাষণ। তাঁদের কখনও মানুষের দাবি নিয়ে রাস্তায় সরব হতে দেখেছেন? এঁদের নেতা বাইরে গিয়ে ফুর্তি করে। মাটিতে নেমে মানুষের পাশে কোনওদিন দাঁড়ায়নি।