• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

প্রধানমন্ত্রীর সভার খরচ নিয়ে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রীর সভার খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন কমিশনের নিরপেক্ষ তদন্তের। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই রবিবার হেঁড়িয়া ও তমলুকের কুমারগঞ্জে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় মােদির সভার খরচ নিয়ে কৈফিয়ত চান মমতা। প্রচারের খরচ হওয়া টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তােলেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: IANS)

প্রধানমন্ত্রীর সভার খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন কমিশনের নিরপেক্ষ তদন্তের। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই রবিবার হেঁড়িয়া ও তমলুকের কুমারগঞ্জে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় মােদির সভার খরচ নিয়ে কৈফিয়ত চান মমতা। প্রচারের খরচ হওয়া টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তােলেন তিনি।

গত শুক্রবার বারাণসীতে মেগা রােড-শাে করে মনােনয়ন জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। সেই আড়ম্বরের খরচ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়ােজনে মনােনয়ন বাতিলের দাবি জানানাে হয়েছে।

সম্প্রতি রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রিগেডের সভায় ছিল অভিনবত্ব। জার্মান হ্যাঙার বসিয়ে সভা হয়। খরচ প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা। এই সভা ঘিরে সেই সময় শাসক-বিরােধী তরজা হয়। প্রশ্ন ওঠে, এত টাকা খরচ হচ্ছে কীভাবে? মুখে না বললেও তৃণমূল সুপ্রিমাের নিশানাতেও ছিল ব্রিগেডের সেই সভা।

এদিন তমলুকের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে কীভাবে সভা করছেন প্রধানমন্ত্রী? এত টাকা কোথা থেকে আসছে? সৎ পথে কোনও দল এত টাকা খরচ করতে কীভাবে পারে?’ এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কড়া দৃষ্টি দেওয়ার আবেদন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানান তিনি।

পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়াতে তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল ভারত গড়তে ৪২-এ ৪২টা আসন এনে দিন। মােদি সরকারের ভাঁওতা মানুষ ধরে ফেলেছে।’ সেইসঙ্গে মােদি সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।

এদিন কাথি লােকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারীর সমর্থনে হেঁড়িয়াতে জনসভা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘পূর্ব মেদিনীপুর শহিদদের জেলা। এই জেলায় মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি সরকারি কলেজ, কোলাঘাটে পলিটেকনিক কলেজ তৈরি হয়েছে। নন্দীগ্রাম, চন্দ্রপুরে দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পানীয় জানা প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলায় ১৪টি কর্মতীর্থ হয়েছে। দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়ক করা হয়েছে। কেলেণাই, পালেরা, বাবুইয়ে ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। এই জেলায় উন্নয়নের কিছু বাকি নেই। দিঘা নতুন রূপে সেজেছে। হলদিয়া উন্নয়ন পর্যদ ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে নতুন রূপে সেজে উঠেছে। এই জেলা শিক্ষায় অনেক এগিয়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপির কাছে আজ সিপিএম পতাকাটাকে বিক্রি করে দিয়েছে। নন্দীগ্রামে যা হয়েছিল তা আমি ভুলে যাইনি। আজও নন্দীগ্রামে ১৬ জন মানুষ ফিরে আসেনি। আমরা খেজুরি, এগরা, পটাশপুর, হেঁড়িয়াতে ঢুকতে পারিনি। নন্দীগ্রামে সিপিএম আমাদের ঢুকতে দেয়নি। বহুবার আকটানাে হয়েছে। নন্দীগ্রামে সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সিপিএমের হার্মাদ এখন বিজেপির জহ্লাদ। তারা হাতে তলােয়ার, গদা নিয়ে সন্ত্রাস করছে। বাংলায় মােদি এসে বলছেন, এখানে নাকি দুর্গাপুজো হয় না। তাই বলছি, ওরা একটা মিথ্যাবাদীর দল। বিজেপির একেকটা সভায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। বিজেপির সবেতে দিল্লি মুম্বই থেকে এজেন্সি নিয়ে এসে কাজে লাগানাে হচ্ছে। এত টাকার উৎস কোথায়? সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা কি জমা হয়েছে? নােটবন্দি করে দেশে দুরবস্থা এনেছে বিজেপি।

আমরা হিন্দু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। বাংলায় নরেন্দ্র মােদি ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার ফেলার চেষ্টা করছে। নির্লজ্জ একটি রাজনৈতিক দল। মােদি উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছেন। বারণসীতে মিটিং করে কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয় না?’

মমতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাজ বেশি এটা বাংলার নির্বাচন নয়, দিল্লির নির্বাচন। দিল্লিতে একটা চ্যানেলকেও ওঁর বিরুদ্ধে কথা বলতে দেওয়া হয় না আগামীদিনে বাংলাই শেষ কথা বলবে। তিনি বলেন কয়েকটা আরএসএসের লােক বলছে আমরা হিন্দু রাষ্ট্র চাই। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। মনে রাখবেন এটা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।

বিজেপি আগে জন্মেছে না মা দুর্গা আগে? ধর্ম আমাকে শেখাচ্ছে। চাকরি, খাবার, বাসস্থান দেবেন, খালি মানুষকে ধর্মে ধর্মে ভাগ করবে। তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর আগে বললেন, তিনি চাওয়ালা। পাঁচ বছর পরে বলছেন চৌকিদার। এ চৌকিদার কেয়া হ্যায়? চৌকিদার চোর হয়। এই চৌকিদারকে বিদায় দিতে হবে।

মমতা জানান, রাজ্য সরকার ৯০০ কোটি টাকা দিয়ে শস্যবিমা করে দিয়েছি। কৃষকবন্ধ, স্বাস্থ্যসাথ করে দিয়েছি। আমরা রাজ্যে আয়ুষ্মন করতে দেব না। আমরা বাংলা মােদিবাবুকে গােল্লা দেব। আগে দিল্লি সামলা, তারপর বাংলা। কাথি, মালদাতে তৃণমূল কর্মীরা খুন হয়েছে। বাংলায় বেশি বাড়াবাড়ি করাে না। বিজেপিকে বােল্ড আউট করবই। মমতা বলেন, ‘তুমি আমাকে ৪২-এ ৪২ দাও, আমি তােমাদের ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল ভারত দেব এদের কন্যাশ্রী দেওয়ার টাকা নেই। কিন্তু দিল্লিতে ১২০০ কোটি ব্যয়ে পার্টি অফিস করার টাকা আছে। ভােট প্রচারে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে বিজ্ঞাপনে’।