মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডােভালের সঙ্গে দেখা করেছেন মার্কিন গােয়েন্দা সংস্থার প্রধান উইলিয়াম বার্নস। এরপরই বুধবার রাশিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর নিকোলাই পেত্রোশেভের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল ডােভালের। মঙ্গলবারই তালিবান তাদের নতুন সরকারের ঘােষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী হয়েছে মহম্মদ হাসান আখুন্দ। যে রাষ্ট্রসংঘের ঘােষিত জঙ্গি।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে মার্কিন ও রাশিয়ার এই বৈঠকের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবারই দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছেন রাশিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর নিকোলাই পেত্রোশেভ। বুধবার তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন অজিত ডােভাল। জানা গিয়েছে, ডােভালের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন তিনি।
গত ২৪ আগস্ট টেলিফোনে কথা হয় মােদি ও পুতিনের। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কথােপকথনের পরই এবার ভারত সফরে পেত্রোশেভ। কী কথা হয়েছে ডােভাল ও বার্নসের মধ্যে তা অবশ্য জানা যায়নি। কিন্তু তালিবানের প্রত্যাবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের সাক্ষাতের পিছনে যে নিরাপত্তা ইস্যু খুব বড় ভূমিকা নিয়েছে সে বিষয়ে নিঃসংশয় আন্তর্জাতিক মহল।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে তালিবানের শাসনকে মান্যতা দেওয়া নিয়ে বিভক্ত গোটা বিশ্ব। পাকিস্তান, রাশিয়া, চিন ও ইরানের মতাে দেশগুলির স্বীকৃতি শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া। কারণ আমেরিকাকে কোণঠাসা করতে তালিবানের সঙ্গে বিগত সাত বছর ধরে আলােচনা চালাচ্ছে মস্কো ও বেজিং। সেই চেষ্টা এবার ফলপ্রসু হয়েছে।
একইভাবে আফগানভূমে ভারতের প্রভাব খর্ব করতে তালিবানই ইসলামাবাদের প্রধান অস্ত্র। বাকি রইল ইউরােপের দেশগুলি ও আমেরিকা। তা এই মুহূর্তে তাদের স্বীকৃতি না পেলেও খুব একটা প্রভাব পড়বে না তালিবদের উপর। এই পরিস্থিতিতেই ভারতের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আমেরিকা ও রাশিয়ার এই বৈঠক।
মঙ্গলবার দিল্লিতে এসেছিলেন মার্কিন গােয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান উইলিয়াম বার্নস। তালিবান যেদিন আফগানিস্তানে মন্ত্রিসভা গঠনের কথা ঘােষণা করে, সেদিনই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বার্নস। দু’জনের ঠিক কী আলােচনা হয়েছে জানা যায়নি।
পর্যবেক্ষকদের মতে, আফগানিস্তানে তালিবানের ক্ষমতা দখল ও তার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েই দু’জন কথা বলেছেন। তিন সপ্তাহ আগে তালিবান কাবুল দখল করার পরে যে দেশগুলি সেখান থেকে দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নেয়, তাদের অন্যতম হল ভারত। রাশিয়া ও পাকিস্তানের দূতরা এখনও কাবুলেই রয়েছে।
তালিবানের মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি গুলাম ইসাকজাই টুইট করে বলেন, তালিবান মন্ত্রিসভার ৩৩ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা।