গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর থেকেই আফগানিস্তান থেকে ভিন দেশমুখি সেখানকার সিংহভাগ মানুষ। গত শুক্রবার থেকে কাবুল বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলেন ৭২ জন আফগান হিন্দু-শিখ। তবে বিমানে উঠার শেষমুহুর্ত সময় বিমানে উঠতে পারলেন না এরা।
তালিবানরা এদেরকে এসকট করে পৌঁছে দিল নিজ ঠিকানায়। এই দলে দুজন সংখ্যালঘু এমপিছিলেন।নন্দির সিং খালসা এবং আনারকলি কৌর। তালিবান নেতৃত্ব জানায় – ‘ওরা আফগান, তাই ফিরে যেতে হবে। পরাে দলটি কাবুলের এক গুদ্বারে পাঠানাে হয়েছে।
সেখানে ২৮০ জন শিখ এবং ৩০-৪০ জন হিন্দু রয়েছে। বিমানে উঠার সময় ভারতে গুরু তেগ বাহাদুরজীর ৪০০ তম জন্মবার্ষিকী পালনে সফর বলা হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি তালিবান। গত বছর ২৫ মার্চ ২৫ জন শিখকে গুলি করে মেরেছিল এক জঙ্গি দল।
আতঙ্কের আফগানিস্তানে লােকমুখে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে বিমান বলয়ের ভিতরে ঢুকতে পারলেই আমেরিকার বিমানে জায়গা পাওয়া যাবে। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিমান বলয়ে ঢােকার জন্য হুড়ােহুড়ি পড়ে যায়। কারণ সবাই ভিতরে ঢােকার চেষ্টা করতে থাকেন।
আর তার জেরেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সূত্রের খবর, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে প্রায় ৫০ হাজার আফগান নাগরিক অপেক্ষা করছেন। তারা দেশ ছাড়তে চাইছেন। কিন্তু বিমান বন্দরের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনীর হাতে।
তার সঙ্গে রয়েছে ব্রিটিশ বহিনীও। পাঁচিলের উপরে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে। বিমানবন্দরকে ঘেরা হয়েছে। আমেরিকার এক সাংবাদিকের নেট মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনা এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পাঁচিলে উঠে কাঁটাতার পেরােতে চাইছেন অনেকেই।
আমেরিকান সেনা তাদের কোনওরকমে ঠেকাচ্ছে। অনেকেই সেনার কাছে কাতর আবেদন জানাচ্ছেন, তাঁদের বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়ার জন্য। বিমান বন্দরের দু’টি দরজা তালিবানের দখলে। ফলে ভিতরে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে।
শুধুমাত্র বিদেশি নাগরিকদের নিয়েই উড়ে যাচ্ছে বিমান। গত রবিবার থেকেই কাবুলের পরিস্থিতি মােটামুটি একই রকম। বিমান বন্দরের ভিতরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমেরিকার সেনাকে গুলিও চালাতে হয়।
কিন্তু তার পরেও দেশ ছাড়ার হিড়িক কমেনি। বৈধ কাগজ দেখিয়ে অনেকেই দেশ ছাড়তে চাইছেন। কেউ আবার আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশের কাছে কাতর অনুরােধ জানাচ্ছেন, তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। গত কয়েকদিন ধরে একমই দৃশ্য এখন কাবুল বিমানবন্দরের।