ইউএপিএ আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে খােলা চিঠি লিখলেন ১০০-র বেশি প্রাক্তন সরকারি অফিসার। এই খােলা চিঠিতে তাদের আর্জি ইউএপিএ-র বদলে এমন একটা আইন আনা উচিত যাতে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সেই আইন প্রয়ােগ করা যাবে কিন্তু তাতে কারও ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব হবে না।
এই চিঠিতে বলা হয়েছে, জি-সেভেন শীর্ষ বৈঠকে আপনি গণতন্ত্র সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা বাস্তবে কার্যকর করুন। ওই প্রাক্তন আমলাদের মতে, ইউএপিএ একটি কালা। কানুন । কোনও সভ্য সমাজে এমন আইন চলতে পারে না।
বিশেষত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে এমন আইন থাকা উচিত নয়। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতের আইনের বইতে দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসবাদ বিরােধী আইন রয়েছে। কিন্তু নানা ভাবে সংশােধন করে আইনটিকে এমন করে তােলা হয়েছে যাকে কালাকানুন ছাড়া কিছু বলা যায় না।
রাজনীতিক ও পুলিশরকা এই আইনের ঢালাও অপব্যবহার করে চলেছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার সময় দেবাঙ্গনা কলিতা, নাতাশা নারওয়াল এবং আসিফ ইকবাল নহা নামে তিন ছাত্রকে ইউএপিএ তে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
তারা একবছরের বেশি জেলে থেকেছেন, খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৬৭ সালে ইউএপিএ তৈরি করা হয়। ২০০৮ সালে মুম্বইতে জঙ্গি হামলার পরে যেভাবে ওই আইন। সংশােধন করা হয়েছে, তা অপরাধী দণ্ডবিধির সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। প্রাক্তন সরকারি অফিসাররা বলেছেন, এই কাজ করেছিল ইউপিএ সরকার।
২০১৯ সালে এনডিএ অন্যান্য দলের সমর্থনে ফের ওই আইনে সংশােধনী আনে। সুতরাং কংগ্রেস এবং অন্যান্য দলও ওই আইনের জন্য দায়ী। প্রাক্তন আমলাদের বক্তব্য কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই আইনে আটকে রাখা হয়েছে।
তারা হলেন ভীমা কোরেগাঁও মামলাতে অভিযুক্ত সুধা ভরদ্বাজ, রােনা ইউলসন, গৌতম নওলাখা, আনন্দ তেলতুম্বড়ে, অরুণ সেরেইরা এবং ভারভারা রাও। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযােগ আছে। কিন্তু তারা কোনও হিংসাত্মক কাজে যুক্ত ছিলেন বলে প্রমাণ নেই।
এই চিঠির স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন, প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন, দুই প্রাক্তন বিদেশ সচিব শ্যাম সরণ ও সুজাতা সিং এবং কয়েকজন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার।