• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

দুর্যোগের বলি ২৩

বুধবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি চলছে, তার উপর জল ছেড়েছে ডিভিসি। সে কারণে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা। পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

হাওড়ার উদয়নারায়নপুরের বানভাসি চিত্র (ছবি:পিটিআই)

বুধবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি চলছে, তার উপর জল ছেড়েছে ডিভিসি। সে কারণে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা। পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৮১ জন মানুষকে দুর্গত এলাকা থেকে সরানাে হয়েছে। মােট ৩৬১ টি ত্রাণ শিবিরে এখনও পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ৪৩ হাজার ১৯২ জন মানুষ।

বৃষ্টির জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন। তার মধ্যে দেওয়াল ভেঙে ৬ জন, জলে ডুবে ৭ জন, বজ্রাঘাতে ৬ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। কালিম্পংয়ে ধসে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। বন্যা পরিস্থিতির ঘটনায় মৃতদের জন্য ছ’লক্ষ এবং আহতদের জন্য প্রাপ্ত হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য ঘােষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি।

পিএমও দফতর থেকে একটি টুইট করা হয়। এই টুইটে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বন্যার জেরে মৃতদের পরিবার আর্থিক সাহায্য হিসেবে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে এবং আহতদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে ৫০ হাজার করে টাকা।

উল্লেখ্য, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি ‘ম্যানমেড’ বলে অভিযােগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টুইট করে এই আর্থিক অনুদান ঘােষণা করা রাজ্যে ৪ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায় ডুবে গিয়েছে।

জলমগ্ন এই জমিগুলির মধ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে বীজধান রােপণ করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে যদি জল না কমে, তাহলে কৃষকরা বড়সড় দুর্দশার মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর। এদিকে বাংলার আকাশ থেকে দুর্যোগ কমার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

বুধবার বিকেলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হচ্ছে, আপাতত রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল দেখতে পাওয়ার কোনও আশা নেই। ৬ আগস্ট পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং বজ্রপাত বহাল থাকবে। বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি কা হয়েছে।

বুধবার রাত থেকে উপকূলবর্তী জেলা, দুই ২৪ পরগনা , দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। এছাড়া কলকাতা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এই জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেতে পারে।

এদিনের বৃষ্টিতে পাতিপুকুর আন্ডারপাসে ফের যাত্রীবাহী বাস ডুবে যায়। তড়িঘড়ি বাস থেকে নেমে প্রাণ বাঁচাতে তৎপর হয়ে ওঠেন যাত্রী, চালক ও কন্ডাক্টার। বুধবার কখনও মাঝারি তাে কখনও ভারী। বৃষ্টি বৃষ্টিতে শহরের রাস্তায় জল জমেছে।

উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা-বাদ নেই কোনও জায়গা। এর মধ্যে উল্টোডাঙ্গায় সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার বিকেল চারটে পর্যন্ত সেখানে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে বেশি জল জমে দুর্ভোগ বেড়েছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরণি, আমহার্স্ট স্ট্রিট, মাহাত্মা গাঁধী রােড় সংলগ্ন এলাকায়। উল্টোডাঙার পরই বেশি বৃষ্টি হয়েছে মধ্য কলকাতার পামার ব্রিজ এলাকায়।