প্রথম যেবার আমাদের ছেলের কাছে সিডনিতে এসেছিলাম, কলকাতা ছাড়ার আগে ভেবেছিলাম বিদেশে গিয়ে নানান দেশের খাবার খেয়ে দেখবো।সিডনি এসে দেখলাম এখানে সবদেশের লোকজনদের জন্যই বেশ ভাল খাবারদাবার মেলে।মাসতিনেক থাকার সময় প্রায় প্রতি শনি- রবিবার সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে ইটালিয়ান ডিশ-চিকেন পারমিজানা,রবোনারা পাস্তা প্রথমবার খেয়ে বেশ ভালো লেগেছিল।চটজলদি খাবারের মধ্যে মেক্সিকান বুরিটো আর টাকো খেতে গিয়ে রেস্ত্রুরেন্টে বেশীক্ষণ ওয়েট করতে হয়নি।মালায়েশিয়ান খাবার নাসিগোরেন আসলে নানারকম সবজি আর খদ্দেরের পছন্দ অনুযায়ী মাংস দিয়ে তৈরি একধরনের ফ্রায়েডরাইস,আমরা অর্ডার দেওয়ার সময় ওয়েটারকে পইপই করে বলে দিয়েছিলাম,দেখো বাবা চিকেন ছাড়া অন্যপ্রাণীর মাংস দিওনা।একমাসে তো এক শনিবার পিৎজা আর পরের শনিবার পাস্তা মোট চারবার ইটালিয়ান খাবার খেয়ে স্ত্রীকে থাকতে না পেরে বলেছিলাম বাড়িতে পোস্ত বানাও ভাত,ডাল আর আলুপোস্ত খেয়ে বাঁচি।
সবদেশের লোকজনের জন্য মনে হয় কথাটা ঠিক,যে সকলের কাছেই তাঁদের নিজেদের দেশের মতো রান্না করা খাবারটা সবার থেকে প্রিয়।কারণ ছেলেবেলা থেকে মা মাসিমাদের নিজেদের রেসিপি অনুযায়ী তাঁদের হাতের রান্না করা খাবারের স্বাদ কোনও হোটেল বা রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় না।স্কুলে পড়ার সময় থেকে কলেজে পড়া বা কিছু মানুষের কাছে চাকরি জীবনেও তাঁদের রান্না করা খাবার খেয়ে যেন জিভের স্বাদটাই পাল্টে গেছে।আমার এক ভাগ্নে ছেলেবেলা থেকেই অঙ্কে খুব ভাল,কিছুদিন আগে পাঁচ বছরের কোর্সে পিএইচডি করার জন্য কানাডায় এসেছে,বিদেশে আসার আগে বোনকে বলেছিলাম ছেলেকে মাছের কয়েকটা আইটেম রান্না করা শিখিয়ে দিতে।যারা নানারকম মাছ খেতে ভালবাসে তারা নিজে নিজে মাছ আর ভাত রান্না করে নিতে পারলে বিদেশে এসে বেশ সুবিধা হয় কারণ বিদেশে ভাল চাল ও নানারকম পছন্দের মাছ পাওয়া যায়।
এবার ২০১৯সালে অস্ট্রেলিয়াতে এসে বিশেষ কয়েকটা খাবারের জন্য এখনো দেশের কথা প্রায়ই মনে হয়, ছুটির দিনে ব্যাকইয়ার্ডে বসে সকালবেলায় জলখাবার বা বিকালবেলায় সবাই মিলে একসঙ্গে চা-বিস্কুট খেতে খেতে মনে হয় সকালবেলায় শ্রীহরির কচুরি তরকারি সঙ্গে জিলিপি আর বিকাল বেলায় রঙমহল থিয়েটারের(এখন সেখানে fbb শোরুম)উল্টোদিকে লক্ষ্মীনারায়ণ দোকানের কয়েকটা গরম গরম তেলেভাজা হলে মন্দ হতো না।এখানকার সিঙ্গারা খেয়ে দেখেছি খোলটা যেন একটু বেশি মোটা আর ভিতরের পুরটায় মশলাটা বেশি,কলকাতার আধভাঙ্গা খোসাশুদ্ধু আলুর পুরের মতো নয়।নববর্ষের দিন জিলিপি কিনে এনেছিলাম ইণ্ডিয়ানস্টোর থেকে,কি রকম যেন শুকনো-শুকনো,হাতে রস লাগলো না বা কামড়ের পর ঠোঁট দিয়ে রস গড়িয়েও পড়লো না,ঠিক রসালো আর মুচমুচে করতে পারেনি যেমনটা এতো দিন খেয়ে এসেছি।
চাকরিসূত্রে গোরক্ষপুরে দোতলাবাড়ির একতলায় আমাদের ব্যাচিলর মেসে থাকার সময় দোতলায় কলেজের সিনিয়রদাদা থাকতেন, বাড়ি থেকে সাত-আট কিমি দূরে একটা বিরাট তালাওয়ে দশ-বার কিলো ওজনের বড় বড় চিতলমাছ পাওয়া যেতো।যেদিন বাজারে চিতলমাছ আসতো একসঙ্গে কেনা হতো, দাদাবৌদিদের দিয়ে বাকিটা মেসে রান্না হতো,প্রথম দিনটা বৌদি রান্না করে মেসে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।রেসিপি জিজ্ঞাসা করায় বৌদি জানিয়েছিলেন টাটকামাছ তাই অল্প ভেজে কালোজিরা আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে বানিয়েছি।আরেকদিন দেড়কিলো ওজনের একটা চালানি ইলিশমাছ পাওয়া গিয়েছিল,মেসের ছেলেটা কিরকম রাঁধবে তাই ভেবে গোটা মাছটা বৌদির কাছে পাঠিয়ে দিয়ে আমরা বলেছিলাম আজ আপনাদের বাড়িতে আমাদের ফিস্ট।রাতে খাওয়ার সময় বৌদিকে আবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম ইলিশমাছটা কিভাবে রাঁধলেন, বৌদির উত্তর কালোজিরা আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে।আর থাকতে না পেরে ওনাকে প্রশ্ন করেছিলাম,আপনাদের মাছ রান্না করার কি একটাই রেসিপি?জেনেছিলাম বৌদির ছেলেবেলা পূর্ববঙ্গে কেটেছিল।
সিডনিতে আমাদের দেশের মতো প্রায় সবরকম শাকসবজি পাওয়া যায় শুধু তাজা পটল পাওয়া যায়না, কলকাতার বাজারে বড়সাইজের পটল দেখতে পেলে তা কিনে এনে পাকা রুইমাছের পুরভরে পটলের দোলমা স্ত্রী কয়েকবার খাইয়েছেন,এখানে রুইমাছের চপ খেয়ে পটলের দোলমা খাওয়ার কথা ভুলে থাকি।
এই বয়সে শরীর ঠিক রাখতে সকালবেলা ঘণ্টাদুয়েক বাড়ির বাগানে কাজ করি,কুমড়োগাছটা ভালোই হয়,লাস্টইয়ারে চারটে কুমড়ো হয়েছিল,এবারে একটার ওজন তো এখনই কেজি দুয়েক হবে আরও দিন দশ পরে তুলবো।প্রচুর কুমড়োফুল হয়,সব ফুলে তো আর কুমড়ো ফলে না তাই মাঝে মাঝেই কুমড়োফুল তুললে স্ত্রী সেগুলো ময়দা,চালেরগুঁড়ো,কর্ণফ্লাওয়ার,বেসন,অল্প পোস্ত,কালোজিরা কুচানো কাঁচালঙ্কার ব্যাটারে ডুবিয়ে ভাজেন। বাংলাদেশের সোনামুশুরি চালের ভাতের সঙ্গে গরম গরম বড়া খেতে বেশ ভালোই লাগে।
এখানে দেশের মতো সবরকম মশলাপাতি,চালডাল পাওয়া যায়, পছন্দ অনুযায়ী যে কোন রান্না বাড়িতে করে নিতে পারলে রোজ রোজ বিদেশে বসে একঘেয়েমি পদ খাওয়া থেকে বাঁচা যায়।গত সপ্তাহে বেশ বড়সড় একটা মোচা কিনে এনেছিলাম,কোলকাতায় দেখেছি লেকমার্কেট,আশুবাবু আর অন্য প্রায় সব বাজারেই মোচা,থোর কেটেকুটে ক্যারিব্যাগে পাওয়া যায়,এখানে নিজেদের কেটে নিতে হয়, একদিন আগে কেটে অল্প নুনহলুদ জলে রাতভর ভিজিয়ে রাখলে কষটা বেড়িয়ে যায়।আমার মনে হয় রান্না শিখে নিজে রান্না করাটা বোধহয় বংশপরাম্পরা,আমার শাশুড়িমার ছেলেবেলা পাবনায় কেটেছিল, তাঁর কাছ থেকে শেখা কিছু নিরামিষপদ আমার স্ত্রী রাঁধেন, খেতে বেশ সুস্বাদু হয়, ছুটির দিনে ভাতের সঙ্গে নারকেলকোড়া দিয়ে মোচারঘণ্ট খাওয়া হল।এখানে দেশীমার্কেটে ঝিঙ্গে,ছাঁচিকুমড়ো,চিচিঙ্গা,ছোটবেগুন,বড়সাইজের করলাও পাওয়া যায়।কয়েকদিন আগে আমাদের বাংলাদেশের এক বন্ধু তাঁর বাগানের লাউ দিয়েছিলেন,তা দিয়ে একদিন স্ত্রী লাউচিংড়ি রান্না করে খাওয়ালেন, কোলকাতার মতো কুঁচো বা খোসাছাড়ানো চিংড়িমাছ এখানে পাওয়া যায় না,তাই মাঝারি সাইজের চিংড়িমাছ হালকা করে ভেজে ছোট ছোট টুকরো করে লাউয়ে পড়েছিল।ছোটবেগুনের কথা লিখেছি, একদিন তা কিনে এনে ধনে-জিরে-মেথি, শুকনোলঙ্কা,ছোট এলাচ,লবঙ্গ, দারচিনি, গোলমরিচ,মৌরি সবগুলো একসাথে শুকনো খোলায় হালকা করে ভেজে গুঁড়িয়ে তৈরি মশলা তৈরি হল।আর তা দিয়ে মশলা বেগুন বানিয়েছিল,রুটির সঙ্গে খেতে বেশ লেগেছিল।একইভাবে একবার মাঝারি সাইজের করলা কিনে এনে ভিতরের বীজ বার করে মশলা ভরে খাওয়া হোল।কালোজিরে মটর ডালের বড়া দিয়ে ঝিঙ্গে বা চালকুমড়োর চাপড়ঘণ্ট মাঝেমধ্যেই খাওয়া হয়।যেদিন পাতলা মুসুরের ডাল রান্না হয়, সেদিন চিংড়ি আলুপোস্ত আর পিঁয়াজ- কাঁচালঙ্কা দিয়ে পোস্তর বড়া পাতে থাকবেই।
এখানে বাংলাদেশের প্যাকেটে ভরা পিসকরা ইলিশ আর রুইমাছ কিনে আনলে রুইমাছের দইমাছ আর শশা বা লাউয়ের টুকরো দিয়ে কাঁচালঙ্কা,কালোজিরার ইলিশের পাতলা ঝোল হয় যেটা আমাদের বাড়ির সকলের খুবই প্রিয়।এদেশের চিকেন,ল্যাম্ব খুবই ভালো তাই একঘেয়েমি কাটাতে মাঝেমাঝে রবিবারে ঝালঝাল গোটমিটের কোর্মা বানানো হয়। আর সেদিন রাতে রুটির বদলে ওভেনে ময়দার নান তৈরি হয়,রুই মাছের মাথাটা দিয়ে রবিবার দুপুরবেলায় মুড়িঘণ্ট,সঙ্গে বুঁদির রায়তা আর গ্রিনস্যালাড।আমার হাতের চিংড়িমাছের মালাইকারি বাড়ির সকলে ভালবাসে তাই মাঝেসাঝে আইটেমটা বানাতে আমি রান্নাঘরে ঘণ্টা- খানেক কাটাই।
এখানে সমুদ্রের মাছের মধ্যে বারামুন্ডি মাছটা দেখতে অনেকটা ভেটকিমাছের মতো,হালকা ভেজে নুন-হলুদ-কাঁচালঙ্কার ঝোল বা ঝাল ভালই খেতে লাগে।বিদেশে বারমুন্ডি মাছের ফিলে ব্যাটারে ডুবিয়ে ভেজে ফিস অ্যান্ড চিপস খুব জনপ্রিয় খাবার।একবার গারফিসমাছ এনেছিলাম, দেখতে কলকাতার বাজারের গাঙদাড়া মাছের মতন,এক-কাঁটারমাছ মাথায় লম্বাশুঁড় আছে,সরষেবাটা দিয়ে ঝাল হয়েছিল।আর একবার এককেজি ওজনের স্প্যানিসম্যাকারেল মাছ বাড়িতে এসেছিল,স্ত্রী সর্ষেবাটা,কাঁচালঙ্কা দিয়ে ঝাল বানিয়েছিলেন, কিছুটা খয়রা বা ইলিশের গন্ধ আর স্বাদ পেলাম মাছটায়।
বিদেশের সবজি বাজারে অনেকরকমের কাঁচালঙ্কা দেখি কিন্তু ঝাল সেরকম নয়, দেশে ঝাললঙ্কার মধ্যে ধানিলঙ্কা আর সবুজ বা কালো রঙের পেটমোটা লঙ্কাগুলো খেতে ঝাল লাগে।এখানে এসে কয়েকটা খুব ঝাললঙ্কার নাম জানলাম,করোলিনা রীপার, সর্বপ্রথম এইলঙ্কার সাউথ ক্যারোলিনা,ইউএসএতে চাষ হয়েছিল আর এটি নাকি বিশ্বের সবথেকে ঝাল লঙ্কা, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম উঠেছে,শুনেছি এই লঙ্কা কাটার পরে হাত দিয়ে ধরা যায়না গ্লাভস পড়ে ধরতে হয়, তাহলেই বুঝুন কি ধরনের ঝাল! ভূটজোলোকিয়া লঙ্কাও খেতে খুব ঝাল,আমাদের দেশের অরুনাচলপ্রদেশ,আসাম, নাগাল্যাণ্ড ও মণিপুরের কিছু কিছু জায়গায় চাষ হয়।হ্যাবানেরো নামে লঙ্কাও খুব ঝাল, বহুবছর আগে অ্যামাজন রেনফরেস্টে প্রথম জন্মেছিল সেখান থেকে মেক্সিকোতে আসে। খাবার দাবার বা লঙ্কা কতোটা ঝাল তার মাপার জন্য স্কোভাইল স্কেল ব্যবহার করা হয়।দেশবিদেশে চাইনিস বা মালয়েশিয়ান রেস্টুরেন্টে খাবারের মেনু কার্ডে আইটেমের পাশে একটা,দুটো বা তিনটে লাল লঙ্কার ছবি দেখেছি খাবারে অল্প ঝাল,বেশি ঝাল আর খুব ঝাল বোঝাতে,বিদেশে ঝাল খাবারওয়ালা আইটেম খেয়ে দেখেছি ঝালের নাম গন্ধ নেই আর খুব বেশি ঝাল খাবার সমান্য ঝাল।
তিনচার রকমের গরুর দুধ এখানে পাওয়া যায়,লাইট,ফুলক্রিম,স্কিম।তাই পুজাপার্বণের দিনে বাড়িতেই এক মুঠো গোবিন্দভোগ চালের সঙ্গে এক লিটার দুধের পায়েস তৈরি হয় আর মিষ্টিদই পাতা হয়।দুধের কোয়ালিটি খুব ভাল বলে দোকানে খুব ভাল টকদই পাওয়া যায়,এক বা দুকিলো প্ল্যাস্টিকের ছোট ছোট বালতিতে।গাজর কুঁরে ফুলক্রিম দুধ,কনডেনসড মিল্ক,খোয়া,চিনি আর কিশমিশ কাজু দিয়ে গাজরের হালুয়া বাড়িতেই তৈরি হয়,রাতে খাবারের পর গরমগরম খেতে বেশ লাগে।
বাগানে পুদিনা পাতার গাছ লাগিয়েছিলাম ,মাসদুয়েকের মধ্যে প্রায় চারফুট বাই ছয়ফুট জায়গা পুদিনাপাতায় ভরে গেছে,মাটি দেখা যায়না।একদিন গাছের ঝাড় কেটে প্রায় এককিলো পুদিনাপাতা পাওয়া গেলো,বাড়িতেই তৈরি হয়ে গেলো পুদিনার চাটনি,রসুন,কাঁচালঙ্কা,সামান্যচিনি,নুন,তেঁতুল বা লেবুররস আর ধনেপাতা মিক্সিতে বেটে নিয়ে,কাঁচের শিশিতে ভরা আছে,বাজারের সসের থেকে অনেক ভাল।
ছুটির দিনে বা সপ্তাহান্তে বৃষ্টি পড়লে, দুপুরের খাবারে কালিজিরা চালের সঙ্গে মুগ বা মুসুরির ডালের খিচুড়ি খাওয়া বাঁধা,সঙ্গে ব্যাটারে ডুবিয়ে ভাজা বেগুনী বা মশলা পাঁপড়সেঁকা, হাঁসের ডিমের ওমলেট আর বাজার থেকে কিনে আনা আমের আচার ও টকদই।কথায় আছে খিচড়ি কা চার ইয়ার,ঘি দধি পাঁপড় আউর আচার।
উপরে লিখেছিলাম রান্না শিখে নিজে রান্না করাটা বংশপরম্পরা, বিদেশে আসার আগে আমাদের ছেলে তার মায়ের কাছ থেকে কিছু দেশী রান্না করা শিখে এসেছিল আর এখানে সময় পেলে এখনো সবরকম শাকসবজি দিয়ে চচ্চড়ি,লাউচিংড়ি ইত্যাদি বানায়।আর এখানে থাকতে থাকতে কয়েকটা বিদেশি খাবার তৈরিতেও হাত পাকিয়েছে,একদিন বাজার করতে যাওয়ার আগে লিস্টে দেখলাম স্যাফরন,স্টারঅ্যানিস,বারবেরি লেখা, আমি জিজ্ঞাসা করায় বলেছিল ইরানদেশের বেরিপোলাও বানাবো,প্রথমবার খেয়ে খুবই ভাল লেগেছিল।
দেশে ফিরে যাওয়ার আগে টার্কিশ খাবার পিডা খেয়ে দেখলাম,দেখতে তো হলদেটে ফুলো ফুলো পিস করা নান রুটির মতো,গোলগোল পিস করা লেবু দিয়ে খেলাম।টার্কিশ আদানা কাবাব তৈরিতে সাধারণত এক বছরের কম বয়সী পুরুষ ভেড়ার মাংস ব্যবহার করা হয়।খাবারের শেষে সুইট ডিশ বাকলাভা খেলাম, ময়দার লেচি কে খুব পাতলা করে চাকি বেলনায় বেলে একটার উপর আরেকটা কয়েকটা ভাঁজ দিয়ে ওভেনে বেক করা,ময়দা মাখার সময় চিনি বা মধু ও লেবুর রস যোগ হয়,ময়দার দুই আস্তরণের মধ্যে কুচানো আখরোট আর পেস্তা।চাইনিস ডাম্পলিং খুবই হালকা আর সুস্বাদু খাবার,পাতলা ময়দার খোলের ভিতরে পছন্দ অনুযায়ী মাংসের পুর,নিরামিষ খেতে হলে নানারকমের সবজির পুর,ষ্টীমে ভাপানো,ডিনারে গরমাগরম বেশ খেতে লাগে।
অস্ট্রেলিয়াতে এসে অস্ট্রেলিয়ান খাবার চেখে দেখতেই হয় তাই দেশে ফেরার আগের দিন ফেয়ারওয়েল ডিনারে ছিল ফিস অ্যান্ড চিপস আর ল্যামিংটন।ল্যামিংটন হল অস্ট্রেলিয়ান কেক বাটার বা স্পঞ্জ কেক চকোলেট সসে ডোবানো আর কেকেরসারাটা গায়ে নারকেল কোরা দিয়ে মোড়া।
(লেখক ক্যানবেরা বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার)