উত্তরপ্রদেশের এক বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে ইচ্ছাকৃতভাবে ৫ মিনিটের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সে কারণেই ২২ কোভিড রােগীর মৃত্যু হয়েছিল? হাসপাতালের মালিক স্বয়ং এই দাবি করছে। গত ২৭ এপ্রিল এমনই ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশে আগ্রার একটি কোভিড হাসপাতালে।
গােটা ঘটনা নিয়ে তােলপাড় উত্তরপ্রদেশ। যদিও যােগী প্রশাসন এই অভিযােগ অস্বীকার করেছে। হাসপাতালটিকে স্থানীয় প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছে। প্রকৃত ঘটনার তদন্তে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তবে এই ঘটনায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যােগী আদিত্যনাথের সরকারকে রীতিমতাে কাঠগড়ায় তুলেছেন।
২৭ এপ্রিলের ঘটনা হঠাৎ করে প্রায় একমাসের বেশি সময় পর কেম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করছে, তার পিছনেই বা ঠিক কী রয়েছে, তা জানার জন্য যােগী প্রশাসন তদন্তের নির্দেশ দিলেও বিরােধীরা বলছেন, আসলে যােগীরাজ্য এমনই, যেখানে জীবিত মানুষকে মেরে ফেলা হয়। এই হাসপাতালের মালিক অরিঞ্জয় জৈনের একটি অডিও রেকর্ডিং নেট মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
২৮ এপ্রিল দেড় মিনিটের এই অডিও টেপে হাসপাতাল মালিক বলছেন, উত্তরপ্রদেশে অক্সিজেনের হাহাকারের সময় একটি ‘ভুয়াে মহড়া’ করা হয়। অক্সিজেনের অভাবে কোন কোন রােগী বাঁচতে পারেন, আবার কারা কারা মারা যেতে পারেন, তা নিয়ে একটা মহড়া হয়েছিল।
সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতাল মালিক অরিঞ্জয় বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী অক্সিজেন জোগাড় করতে পারছেন না, সে কারণেই দ্রুত রােগীদের হাসপাতাল ছাড়তে হবে। রােগীর পরিবারের লােকদের এই নিয়ে বােঝানাে হয়েছিল।
কয়েকজন হাসপাতাল ছাড়তে রাজি হলেও অনেকেই রাজি হননি। তখন আমি একটি ভুয়াে মহড়া করি। কারা কারা মরে আর কারা কারা বেঁচে যান, তার মহড়া। এই মহড়াটা হয় ২৭ এপ্রিল ঠিক সকাল ৭ টায়। হাসপাতালের অক্সিজেন ৫ মিনিটের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
২২ জন এমন রােগীকে চিহ্নিত করা হয়, যারা মারা যেতে পারেন। তারপর ওঁদের দেহ নীল হয়ে যাচ্ছিল। অডিওতে এই কথাগুলি শােনা গিয়েছে। নেট মাধ্যমে এই অডিও ভাইরাল হতেই আগ্রার জেলাশাসক প্রভু এন সিং দাবি করেন, ২৬ থেকে ২৭ এপ্রিল ৭ জন আক্রান্তের মৃত্যু হলেও, কেউ অক্সিজেনের অভাবে মারা যাননি।
অক্সিজেনের অভাবে আতঙ্ক তৈরি হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল ৪৮ ঘণ্টা। ২২ জনের মৃত্যু ওই হাসপাতালে হয়নি। তবে এই নিয়ে আমরা তদন্ত করে দেখব।
বিজেপি প্রশাসনকে নিশানা বানিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি বলেন, বিজেপি শাসনে শুধু অক্সিজেন নয়, মানবিকতার প্রচণ্ড অভাব রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ঘটনা তা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।’