নেপাল সংসদে নিম্নকক্ষে এবার আস্থা ভােটে হেরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শৰ্মা ওলি। ২৭৫ সদস্য বিশিষ্ট সংসদের নিম্নকক্ষে ওলির সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়ােজন ছিল ১৩৬ সদস্যের সমর্থন। সোমবার প্রতিনিধি সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে আস্থা প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তিনি সংসদের সমস্ত সদস্যকে এই প্রস্তাব সমর্থন করার জন্য আবেদন জানান।
কিন্তু পুষ্প কুমার দহল (প্রচণ্ড)র নেতৃত্বাধীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ওলির সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এজন্য তাকে সংসদের নিম্নকক্ষে আস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করতে হয়।
প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীর নির্দেশে এদিন সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। সংসদের নিম্নকক্ষে ওলির সমর্থনে পড়েছিল ৮৩ টি ভােট। ফলে ২৭৫ সদস্যের সভায় ওলির প্রয়ােজন ছিল ১৩৬ টি ভােট। চার সদস্য সাসপেনশনে রয়েছেন। এদিকে আস্থা ভােটে প্রধানমন্ত্রী ওলির বিরুদ্ধে ১২৪ সদস্য ভােট দেন। প্রচণ্ডর নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি সমর্থন প্রত্যাহার করায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছিল ওলির সরকার।
গত বছর থেকেই নেপালের রাজনীতিতে তৈরি হয় সংকট। গত বছর ২০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ভান্ডারীর কাছে সংসদের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে ৩০ এপ্রিল ও ১০ মে নতুন করে নির্বাচনের আয়ােজন করার জন্য সুপারিশ করা হয়। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরে ক্ষমতার টানাপোড়েনের জেরেই এ ধরনের সুপারিশ করেছিল ওলি।
উল্লেখ্য, ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে নেপালের নতুন সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর এই প্রথম কোনও সরকার আস্থা ভােটের মুখােমুখি হল এবং হারল। এরপর সংবিধান অনুসারে ওলি প্রেসিডেন্টের কাছে তার ইস্তফাপত্র জমা দেবেন এবং প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী সংসদকে নতুন সরকার গঠনের সম্ভাবনা এক সপ্তাহের মধ্যে খতিয়ে দেখার কথা বলবেন।
এদিন আস্থা প্রস্তাব পেশ করার আগে ওলি বলেন, দেশ গঠনের লক্ষ্যে এবং উন্নয়নে তাঁর সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তার সরকার সংকীর্ণ ও পক্ষপাতমূলক মানসিকতার শিকার হয়েছে। ফলে এই আস্থা প্রস্তাব পেশ করাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সংসদে আস্থা প্রস্তাবে হেরে গিয়ে বিদায় নিতে হচ্ছে ওলিকে। ৩৮ মাস তিনি সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন। দলের বিদ্রোহীরা তার দলের হুইপ অমান্য করে ভােটদানে বিরত থাকেন।