রবিবার ভােটের ফলাফলের পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন কোনও বিজয় মিছিল হবে না। ভােট যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে এবার করােনার বিরুদ্ধে জীবন যুদ্ধকেই গুরুত্ব দিতে হবে। সােমবার তৃণমূল ভবনে পরিষদীয় দলের বৈঠক হয়। সেখানে পরিষদীয় দলের নেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেন মমতা।
বৈঠকে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘােষণা করেন, আগামী ৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে বুধবার একাই শপথ নেবেন মমতা।
আগামী ৬ মে, নতুন বিধায়করা শপথ গ্রহণ করার কথা বিধায়কদের। এবারও রাজ্য বিধানসভার প্রােটেম স্পিকার হচ্ছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যদের শপথ গ্রহণ তথা মন্ত্রিসভা গঠন হবে কয়েকদিন পরে।
সোমবার পার্থ চট্রোপাধ্যায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন। সেখানে সরকার গড়া নিয়ে কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পার্থবাবু বেরিয়ে আসার পরপরই সন্ধে সাতটার কিছু আগেই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা পেশ করেন।
এদিকে, সােমবার থেকেই আদর্শ আচরণবিধি প্রত্যাহার করে নিল নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় মমতার ইস্তফা গ্রহণ করেও নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত মমতাকেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন রাজ্যপাল।
মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের জন্য সােমবার থেকেই তােড়জোড় শুরু হয়ে যায় রাজভবনে। হাইকোর্টের প্রধানপতি ছাড়াও জনাকয়েক অতিথি অভ্যাগত উপস্থিত থাকবেন সেই অনুষ্ঠানে।
কোভিড পরিস্থিতির জন্য ফলাফল ঘােষণার বাহাত্তর ঘন্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তড়িঘড়ি শপথ নিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এত দ্রুত মন্ত্রিসভা গঠন করা কঠিন। তাছাড়া এবার অনেক নতুন মুখ বিধানসভায় এসেছেন। দল যখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল, তখন অনেকেই যথেষ্ট আনুগত্য দেখিয়েছে।
সেইসব দিক বিচার করেই এবারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হতে পারে। এছাড়া নবীন ও প্রবীণ বিধায়কদের মধ্যেও ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করা হবে। এদিকে ভােটের ফলাফল ঘােষণার পরে রাজ্যে যে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা শুরু হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে মমতাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আপাতত দু’টো দিন আমার কিছু করার নেই। তখনই আন্দাজ করা গিয়েছিল, ৫ মে’ই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন তিনি।
সােমবার তিনি জানিয়ে দেন, এবারের শপথ অনুষ্ঠানে আড়ম্বর বিশেষ হবে না। বড় জোর কাজ চালানাের জন্য হাতে গােণা কয়েকজন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন। পরে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হতে পারে।
অন্যদিকে কোভিড নিয়ন্ত্রণে আসার পরে তৃণমূলের এই সাফল্যের উদ্যাপন হবে ব্রিগেড সমাবেশ করে। তখন জাতীয় দলের নেতাদেরও সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানাে হবে।
বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতিকেই অগ্রাধিকার দিতে চান এদিন সবর্সম্মতিক্রমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তৃণমূলের পরিষদীয় দলের নেত্রী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পায়ে চোট পাওয়া সত্ত্বেও নেত্রী যেভাবে প্রচার করেছেন এবং বিজেপিকে রুখে দিয়েছেন, সেজন্য তার প্রতি এদিন কৃতজ্ঞতা জানাল দল