২০১৯ সালে লােকসভা ভােটে হুগলি কেন্দ্র তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। হুগলি লােকসভা কেন্দ্রের অন্যতম বিধানসভা সিঙ্গুরেও লিড পায় বিজেপি। ২০০৬ সাল থেকে এই আসনে বিধায়ক ছিলেন মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ২০১১ সালে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় থেকে সিঙ্গুর কৃষিজমি আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন মাস্টারমশাই ও বেচারাম মান্না।
যদিও ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মাস্টারমশাই ও বেচারামের গােষ্ঠদন্দু রাজ্য রাজনীতির একটি আলােচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। এমনকি ২০১৯ লােকসভা ভােটে সিঙ্গুরে তৃণমূলের ফল খারাপ হওয়ার জন্যও এই গােষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করা হয়।
২০২১ বিধানসভায় বাৰ্ক্যজনিত কারণে মাস্টারমশাইকে তৃণমূল প্রার্থী না করে বেচারামকে সিঙ্গুরের প্রার্থী ঘােষনা করেন ও বেচারামের জায়গায় হরিপালে প্রার্থী ক্রা হয় তার স্ত্রী করবী মান্নাকে। সেই সময় মাস্টারমশাই দাবী করেছিলেন পঞ্চম বারেও সিঙ্গুরের মানুষ তাকেই চায়।
এরপরই তিনি দলবদলে সিঙ্গুরেই বিজেপির হয়ে প্রার্থী হন। এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাস্টারমশাইয়ের প্রচারে এসেও তার জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন। কিন্তু এদিন ফল প্রকাশের পর দেখা যায় সিঙ্গুরের মানুষ মাস্টারমশাই নয় মমতার উপর অর্থাৎ বেচারামের দিকেই তাদের রায় দিয়েছেন।
এদিন ফল প্রকাশের পর মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, সিঙ্গুরের মানুষ তার পক্ষে রায় দেন নি এই সত্যটাই মেনে নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, তার নিজস্ব হিসাব বা তার হয়ে যারা হিসাব করেছিলেন তিনি জিতবেন তাদের হিসাবে কোথাও ভুল হয়েছিল।
এদিন তিনি তার হারের কারণ হিসাবে বলেন, সিঙ্গুরে তার মনােনয়ন নিয়ে বিজেপির সদস্যদের মধ্যে কিছু মতবিরােধ ছিল সেই কারণেও তিনি হারতে পারেন। পাশাপশি তার দাবী হয়তাে সিঙ্গুরের সাধারণ মানুষ তার দল বদলটাও মেনে নিতে পারেন নি। তবে এদিন তিনি পরিষ্কার ভাষায় জানিয়েলেন আপাতত তিনি রাজনীতি থেকে সাময়িক অবসর নিচ্ছেন।
অন্যদিকে এদিন সিঙ্গুরের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বেচারাম মান্না বলেন, সিঙ্গুর থেকে জেতা একটা আলাদা গর্বের বিষয়। তিনি এদিন আরও বলেন, সিঙ্গুরের মানুষ যে দলবদলু, গদ্দারের সাথে নয় রং মমতা ব্যানার্জির সাথে আছেন যা তিনি আগেও বলেছিলেন আজ তা প্রমানিত।
পাশাপাশি তিনি বলেন, দিদি সিঙ্গুরের জন্য অনেক কাজ করেছেন, আর যা কাজ বাকি আছে এবার সেই সমস্ত কাজ করা হবে। অন্যদিকে সিঙ্গুরে কারখানা হবে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন, এখন জমির মালিক চাষীরা। তাই তারা জমি স্বেচ্ছায় বিক্রি করলে তখন ভাবা হবে কিন্তু কখনই জোর করে জমি নিয়ে হবে না।