শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে একাধিকবার আলােচনা-বিতর্ক হয়েছে। সেই সংরক্ষণ আর কত প্রজন্ম ধরে চলবে, এবার সেই প্রশ্ন তুললাে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অশােক ভূষণের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ প্রশ্ন করেছে- স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও কি আমাদের মানতে হবে কোনও শ্ৰেণীরই অগ্রসর হয়নি?
সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছিল মহারাষ্ট্রের মারাঠা সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিল নিয়ে। সেই শুনানি চলাকালীনই এই প্রশ্ন করে সুপ্রিম কোর্ট। চাকরি ও শিক্ষায় মারাঠাদের ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে বিল পাশ করেছিল উদ্ধব ঠাকরে সরকার। সেই বিল নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
তার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়। যদি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ বা কোনও ঊর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে সকলের সমান অধিকার কীভাবে ব্যক্ত হবে? ১৯৯৩ সালে ইন্দিরা সহায় মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল কোনও সংরক্ষণই ৫০ শতাংশ যেন। পেরিয়ে না যায়। কিন্তু মারাঠাদের সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিল অনুযায়ী ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ হলে সেই অঙ্কটা ৫০ শতাংশ পেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের এই প্রশ্নের পর মহারাষ্ট্র সরকার পক্ষের আইনজীবী মুকুল রােহতাগি জানান, আদালত ১৯৯৩ সালের রায়টি দিয়েছিল ১৯৩১ সালে জনগণনার ভিত্তিতে। এখন জনসংখ্যা ১৩৫ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা কার উচিত। পাশাপশি বিষয়টি তিনি মহারাষ্ট্র সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়াই উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টে রােহতাগি জানান, কেন্দ্রে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ১০ শতাংশ সংরক্ষণও ৫০ শতাংশের সীমা পেরিয়ে যায়। তাই এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন প্রয়ােজন। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অশােক ভূষণ, বিচারপতি নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি এস আব্দুল নাজির, বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত ও বিচারপতি এল রবীন্দ্র ভট্ট প্রশ্ন করেন যদি উর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে সাম্যের কী হবে?
পাশাপাশি অনগ্রসরতা কাটিয়ে না উঠতে পারার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তখন রােহতাগি বলেন, দেশে উন্নতি হয়েছে। তবে অনগ্রসর শ্রেণীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যায়নি। এখনও মানুষকে অনাহারে মরতে হয়। দেশে অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে।