ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠনের পক্ষে আবার এক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে ১৫-১৬ মার্চ। ফলে চার দিনের জন্য ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকছে। ব্যাঙ্কের কর্মীদের নয়টি সংগঠনের সংযুক্ত সংগঠন ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। দুইটি ব্যাঙ্কের প্রস্তাবিত বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে এই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের সময়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের কথা ঘােষণা করেন। ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন ফোরাম ১৩-১৪ তারিখ দ্বিতীয় শনিবার ও রবিবার দুদিন ছুটির দিন জানা সত্ত্বেও সােমবার ও মঙ্গলবার কর্মবিরতির কথা ঘােষণা করে গ্রাহকদের বেকায়দায় ফেলার এই সিদ্ধান্ত কেন নিল তা বােধগম্য নয়।
তবে অন্যান্য সংগঠিত ক্ষেত্রের মতাে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রেও কর্মী সংগঠনগুলি এমনভাবে কর্মবিরতির দিন ঘােষণা করে যাতে কর্মীরা ওই দিনগুলিতে ছুটির আমেজ উপভােগ করতে পারেন। এখানে বেতন কাটলেও তাদের গায়ে লাগে না। কারণ মাসান্তে তারা যে পরিমাণ বেতন পায় তা তাদের খরচের সাধ্য থাকে না। তাই ছুটি কাটানাের একটা ব্যবস্থা করাই যেতে পারে। ফলে টানা চারদিন ব্যাঙ্কের কাজকর্ম বন্ধ। এটা নাকি কোনও সভ্য সমাজে ভাবাই যায় না।
তবে কি ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের কর্মকর্তারা সকলেই সভ্য সমাজের বাইরের প্রাণী। কারণ করােনা প্রতিষেধক দেওয়া ও বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনের এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে ব্যাঙ্কের মতাে জরুরি পরিষেবা বন্ধ থাকাটা যে অর্থনীতির ক্ষেত্রেও এক ধাক্কা সেটা বােঝার মতাে স্বাভাবিক বুদ্ধি নিশ্চয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের রয়েছে।
তবে স্টেট ব্যাঙ্কের পক্ষে ‘ব্যাঙ্কারস টু দ্য নেশন’ বার্তা দিয়েছে এমন অবস্থায় গ্রাহকদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। এবং বিভিন্নভাবে অপ্রচলিত পদ্ধতিতে পরিষেবা প্রদানের কথা জানিয়েছে। মনে রাখতে হবে ব্যাঙ্ক পরিষেবা বন্ধ থাকার ফলে সাধারণ গ্রাহক, ব্যবসায়ী গােষ্ঠী এবং আরও ব্যাপকতর ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবাও ব্যাহত হতে বাধ্য।
১৯৬৯ সালে ব্যাঙ্ক ইন্দিরা গান্ধির হাত ধরে জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকে দেশের অর্থনীতির অধিকতর ক্ষেত্রই ব্যাঙ্কিং পরিষেবার অধীন ও নির্ভরশীল।
চলতি মাসের ৪,৯ এবং ১০ তারিখে ইউনিয়ন ও সরকারি তরফে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার উপায় খোঁজার জন্য বৈঠক হয়। কিন্তু উভয় পক্ষের সিদ্ধান্তের কোনও নড়চড় হয়নি। ফল শুন্য। তবে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের পক্ষে গ্রাহকদের স্বাভাবিক পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ঘােষণা করা হয়।
কিন্তু শুক্রবার শেষ বেলা পর্যন্তও কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল তার কোনও দিশা দেখা যায়নি। পরবর্তীতে যে কাজ জমা হবে তার সমাধান করার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন বা কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নেবেন তাও জানা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই চতুর্থ শনিবার ও রবিবার এসে পড়বে এবং যথারীতি ছুটির আহা তৈরি হবে। দায়িত্বহীনতার এই সার্কি আবহাওয়া বিশ্বের উষ্ণায়ণ সমস্যাকেও যে হার মানাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।