• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

‘ভেজাল হিন্দু’ বলে নন্দীগ্রামে মমতাকে আক্রমণ শুভেন্দুর

মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি কর্মিসভা করেন মমতা। বিজেপি-কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে হিন্দু কার্ড খেলতে আসবেন না।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী (Photo: SNS)

বুধবার তৃণমূল ও বিজেপির দু’টি কর্মসুচিতে দুই প্রার্থী নন্দীগ্রামেই ছিলেন। মমতা স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিয়ে হলদিয়ায় মনােনয়ন জমা দিতে যান। আর শুভেন্দু দলের নির্বাচনী কার্যালয় উজ্জ্বাধন করেন। ‘ভেজাল হিন্দু। পদবিটা ব্যানার্জি হলে নিজেকে হিন্দু বলতে হচ্ছে কেন? এখন উনি আর ইনশাল্লাহ বলছেন না। বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন শুধু হিন্দু ধর্ম বােঝেন। আমার ধর্ম তাে মানবতার ধর্ম।’ 

মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি কর্মিসভা করেন মমতা। বিজেপি-কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে হিন্দু কার্ড খেলতে আসবেন না।’ প্রশ্ন তােলেন, ‘কি, আমার সঙ্গে হিন্দুত্ব নিয়ে প্রতিযােগিতা করবেন নাকি!’ কর্মিসভার মঞ্চ থেকে চণ্ডীপাঠও করেন মমতা। 

বুধবার সেই একই জায়গায় মিছিল করেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রাম বাস স্ট্যান্ডের কাছে দলীয় নির্বাচনী কার্যালয় উদ্ভাধনের পরে টেঙ্গোয়া মােড় থেকে একটি মিছিল হয়। সেখানে শুভেন্দু দাবি করেন, মঙ্গলবার মমতা স্থানীয় জানকীনাথ মন্দিরে চটি পরে প্রণাম করেছেন। এর পরেই ‘ভেজাল হিন্দু’ বলে আক্রমণ শানান। সেই সঙ্গে বলেন, ‘নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও অবদান নেই। এখানকার কোথায় কী আছে তারও কিছুই জানেন না উনি।’ বুধবার শুভেন্দুর মুখে হীরক রাজার দেশের বিখ্যাত সংলাপের সুরে বলেন, ‘দড়ি ধরে মারাে টান, রানি হবে খান খান।’ 

মঙ্গলবার মমতা দলের কর্মিসভায় তিনি মনােনয়ন জমা দেবেন কি না তার অনুমতি চেয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘আপনি জানতে চেয়েছিলেন না, নন্দীগ্রামে কি দাঁড়াব? আসলে আপনাকে নন্দীগ্রামে দাঁড়াতে হইবেই, আর হারিয়া যাইতে হইবেই।’ 

এর পরেই শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘আমি নন্দীগ্রামের উন্নয়ন করেছি সাধ্য মতাে। কিন্তু যিনি দাঁড়িয়েছেন তিনি তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির মালিক। নন্দীগ্রামে কাজ করতে দেননি। সব সময় হিংসা করেন, পাছে শুভেন্দু মাইলেজ নিয়ে নেয়।’ 

যে শিব মন্দিরে পুজো দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনোনয়ন জমা দিতে গেলেন তার উন্নয়ন তার হাতেই হয়েছে বলে দাবি করে শুভেন্দু বলেন, ‘ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। এত দিন যে রাম নাম শুনলে দিদি চটে যান, সেই (জানকী মন্দির) চর্টি পায়ে পুজো দিয়ে গেলেন দিদিমণি। এ সব ঢপের চপ কেউ খাবে না।’ 

শুভেন্দু আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন নন্দীগ্রামের সঙ্গে আমার সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। তখন যুব সভাপতি ছিলাম। আমি মানব ধর্ম পালন করি। নির্বাচনের পরে হিন্দু, মুসলিম, শিখ করি না। ওরা বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছে।’ 

মমতার মঙ্গলবারের বক্তব্য টেনে শুভেন্দু বলেন, ‘দিদিমণি বলেছেন, নন্দীগ্রামে একজনও বেকার থাকবে না। কিন্তু এই মুহূর্তে নন্দীগ্রামের ৩০ হাজার যুবক বাইরের রাজ্যে আছেন। শহিদ পরিবারের জন গ্রুপ ডি পাশ করেও চাকরি পাননি। তাঁদের চাইলে সামনে হাজির করতেই পারি।’ 

একই সঙ্গে বুধবার অনেক আশ্বাসও দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে চিট ফান্ডের টাকা ফেরৎ করাব।’ শুভেন্দুর জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘােষ পাল্টা কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে চলেন এবং নিজের বাড়িতে কালীপুজো করেন। এটা সবার জানা। সুতরাং কে কতটা হিন্দু তার প্রতিযােগিতায় উনি নেই। বরং কেউ কেউ কত শতাংশ কোন ভােট পাব, তা নিয়ে রাজনীতি করছেন।