গুয়াহাটি — প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি বলেছেন, দেশের মানুষ আবার বিজেপির সরকার গঠনের জন্য সমর্থন দিতে আগ্রহী। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ অসমের শিলচরে এক নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, বিজেপির সভাগুলিতে মানুষ আগ্রহের সঙ্গে জমায়েত হচ্ছেন বিজেপিকে সমর্থন জানাতেই। বিজেপির সরকার গঠনের পক্ষেই মানুষ ভােটের মাধ্যমে তাদের রায় জানাতে চায়। মানুষ বিরোধী দলগুলির দিশাহীনতায় হতাশ। তাই বিজেপিকেই সমর্থন দিতে আগ্রহী। অসমে পাঁচটি আসনে নির্বাচন হচ্ছে এবং সবকটি আসনেই এনডিএ’র প্রার্থীরাই জিতবে বলে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে ভারতের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণ ব্যবস্থা। দক্ষিণ অসমের কাকচর, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত। সংশ্লিষ্ট এলাকায় নাগরিক (সংশােধনী) বিলের পক্ষেই সমর্থন জানিয়েছিলেন। কারণ এই বিলের মাধ্যমেই বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা শরনার্থীরা যাতে সহজে ভারতীয় নাগরিকত্ব পান তার ব্যবস্থা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিলটি রাজ্যসভায় পাশ না হওয়ার ফলেই তা বাতিল হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। মােদি বলেন, রাজ্যের সকল স্তরের মানুষের সম্মতি নিয়েই নাগরিক বিল পাশ করানাে হবে। বিলটি এমনভাবে সংশোধিত মতে পেশ করা হবে যাতে অসমের স্থানীয় মানুষের কোনও অসুবিধা না হয়। তিনি বলেন, কংগ্রেস দল তাদের ভোট ব্যাঙ্ক মজবুত করতে অনুপ্রবেশকে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, বিজেপি দলের ইস্তেহারেও নাগরিক বিল সংশােধন করে পেশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিজেপি অসম ও উত্তরপূর্ব ভারতের মানুষের মর্যাদা নিজস্বতা রক্ষার আন্দোলনকে কুর্নিশ জানায়। কিন্তু কংগ্রেস দল তাদের ভােট বৃদ্ধি করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অনুপ্রবেশকেই ইন্ধন যােগাতেই উৎসাহী বলে তিনি আভযােগ করেছেন। কংগ্রেস ইচ্ছাকৃতভাবেই বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধানে আগ্রহ দেখায় না। এর সুযােগ নিয়েই অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে পড়ছে। মােদি বলেন, কংগ্রেস ইচ্ছা করলেই ১৯৭১ সালেই পাকিস্তান, অসম, কাশ্মীর সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারত এবং অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারত। বিজেপি সরকার অসমের সীমান্ত অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আলােচনা শুরু করেছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে কাটাতারের বেড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মােদি জানান, এনডিএ ক্ষমতায় আসার পর নাগরিকদের জাতীয় তালিকা বা এনআরসি তৈরিতে তৎপরতা দেখায়। যাতে কোনও ভারতীয় নাগরিক বাদ না যায় এবং কোনও ‘বিদেশী’ নাগরিক অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮৫ সালে এনডিএ সরকারের সময়ে গৃহীত অসম চুক্তির উন্নয়ন তালিকা রূপায়ণে কংগ্রেস বাধা দেয়। চলতি সাধারণ নির্বাচনে মানুষের ভােটেই দেশের নিরাপত্তা নীতির রূপরেখা কেমন হবে তার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। আমরা কি দেশের নিরাপত্তায় কোনও আপস চাই? মাওবাদী হামলা বা নক্সাল হামলায় কোনও আপস চাই? তিনি অহমিয়া ভাষায় বলেন, কালােটাকার ব্যবসা এখন বন্ধ, দেশের শত্রুরা উচিত সাজা পেয়েছে এবং অনুপ্রবেশকারীরা ভারতের সীমানা পেরিয়ে পালাবার জন্য সচেষ্ট।