বিবাহের ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়স বিধি চালু করার অভিযান শুরু করল বিভিন্ন সংস্থা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ধর্মীয় সংস্থাগুলি এখন মহিলাদের সঙ্গে পুরুষের অধিকার রক্ষায় অভিন্ন ব্যবস্থা চালু করার পক্ষে একটা আন্দোলনের রূপরেখা তৈরিতে ব্যস্ত। মূল ক্ষেত্র হিসেবে বিবাহের বয়স অভিন্ন করার পক্ষে সওয়াল শুরু হয়েছে। মেয়েদের বিবাহের বয়স যদি আঠালাে হয় তবে ছেলেদের বিবাহের বয়সে কেন একুশ হবে-এটাই তাদের মূল প্রশ্ন।
তাই পুরুষের বিবাহের বয়সও আঠারাে করতে হবে। এব্যাপারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের বিচার বিবাহের সম বয়স নিয়ে সহমত প্রকাশ করে লিঙ্গ অধিকার সমতা রক্ষায় নীরব সম্মতি প্রদান করেছে। কারণ এতে অন্তত লিঙ্গ সমতা রক্ষা আইনেও কোনও হেরফের হবে না।
প্রধান বিচারপতি এসএ বােবদে বিচারপতি এ এস বােপান্না এবং বিচারপতি ভি রামমনিয়ন নিয়ে গঠিত বেঞ্চ এক আইনজীবী এবং বিজেপি নেতা অগিনী উপাধ্যায়ের লিলি এবং রাজস্থান হাইকোর্টে পায়ের করা রিট পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তর করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আবেদনে নারী ও পরুফের বিবাহের বয়স একুশ করার আবেদন জানানাে হয়েছে।
সর্বোচ্চ আদালতে ইতিমধ্যেই উপন্যায়ের দাখিল করা বিবাহ বিচ্ছেদ, খোরপােষ ও সস্তানসন্ততির অভিভাবকত্বের বিষয়ে অভিন্ন আইন চালু করার আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এখন বিবাহের বয়স সম্পর্কিত অভিন্ন বিধি গৃহীত হলে তা দেওয়ানি আইনের একটি নতুন ধারা হিসেবে যুক্ত হবে। কিন্তু এবিষয়ে একটি দলের সলসের দ্বারা আদালতে আবেদন দাখিল করায় অন্যান্য বিভিন্ন গােষ্ঠীর পক্ষে বিষয়টি সহজে হজম করা খুবই কঠিন হবে।
বিভিন্ন গোষ্ঠীর ধর্মীয় রীতিনীতিতে নানান জটিল ব্যবস্থা দেওয়া রয়েছে সংধিান্ত ধর্মীয় গুরুদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই। ফলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুনানি শুরু করলেও তা যে হুজে নিস্পত্তি করতে পারবে তার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন গােষ্ঠীর মধ্যে লিঙ্গ পার্থক্য জিইয়ে রেখেছে তালের গোষ্ঠীর মধ্যে পালিনের প্রথা হিসেবে।
লিঙ্গ পার্থক্য সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রাখার একটা উপায় হিসেবে গণ্য। এখন সংশ্লিষ্ট গােষ্ঠীর নেতৃত্বস্থানীয়রা এটাকেই তাদের রাজনীতির একটা বিষয় হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করবেন। কিন্তু এসব কুসস্কোরকে পাত্তা না দিয়ে বা রাজনৈতিক ফায়দা লেটির সুযােগকে নস্যাৎ করে দিয়ে সলেচ্চি আদালতকে একটা আধুনিক ও প্রগতিশীল বাবস্থা কায়েমের দিকে অগ্রসর হতে হবে। যাতে আইনের সামনে সকলেই সমান এই আপ্তবাক্যটি অন্তত এক্ষেত্রেও বলবৎ করা যায় তা একবার অন্তত প্রচলিত করা উচিত।
কারণ বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে বয়সের পার্থক্যের মধ্যে কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিই নেই বলে প্রমাণিত। উপাধ্যায়ের এই আবেদনে দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীরই সমর্থন দেওয়া জরুরি। এতে আন্তর্জাতিকতাবাদটিই প্রতিফলিত হতে পারে বিবাহের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের বয়সের পার্থক্যকে মুছে দেওয়ার আবেদনকে সমর্থন করে।
তবে বহু রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রী উপাধ্যায়ের নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই বিলোধিতা করতে আসরে নেমে পড়বেন সেবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রথা চালিয়ে যাওয়াতে স্বার্থন্বেষীদের যে স্বার্থবিতাথ হলে তা কি কেউ বন্ধ করতে আগ্রহ দেখালে?