• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আবারও ভারত-চিন সংঘর্ষ, এবার সিকিমের নাকু-লা’তে

ভারত-চিন উত্তেজনা এবার নতুন মােড় নিলাে। পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিবাদের আবহেই এবার সিকিম সীমান্তের আগে নাকু-লা’তে সংঘর্ষে জড়ালাে দুই দেশের সেনা।

ভারত চিন সীমান্ত। (File Photo: AFP)

ভারত-চিন উত্তেজনা এবার নতুন মােড় নিলাে। পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিবাদের আবহেই এবার সিকিম সীমান্তের আগে নাকু-লা’তে সংঘর্ষে জড়ালাে দুই দেশের সেনা। দিন তিনেক আগে দু’দেশের সেনা জওয়ানদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় লাল ফৌজ। আর তা রুখতেই সংঘর্ষ বাধে। 

আরও জানা গিয়েছে সিকিমে ইন্দো-চিন সীমান্তে দু’দেশের সেনাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা বাহিনীর অনুপ্রবেশ রুখে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। সংঘর্ষে লাল ফৌজের বেশ কয়েকজন সেনা আহত হয়েছেন বলে খবর। যদিও স্বাভাবিকভাবেই চিনের পক্ষ থেকে তা স্বীকার করা হয়নি। অন্যদিকে সংঘর্ষে ভারতীয় জওয়ানদের কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। 

পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিবাদ মেটাতে রবিবার ভারত-চিন কোর কম্যান্ডার স্তরে বৈঠক হয়। সেই বৈঠক সােমবার রাত আড়াই টেয় শেষ হয়। নবম পর্যায়ের বৈঠকের আবহে সিকিম সীমান্তে ভারত-চিন সংঘর্ষের ঘটনা দু’দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা এনে দিলাে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। 

প্রসঙ্গত গত বছর মে মাসের শুরু থেকে তেতে রয়েছে দু’দেশের সীমান্ত। বিবাদ মেটাতে এর আগেও একাধিকবার বৈঠকে বসেছে দুটি দেশ। কিন্তু মূল সমস্যার সমাধান এখনও অধরা। কূটনৈতিকস্তরে আলাপ আলােচনার মধ্যেই গত বছর ১৫ জুন গালওয়ালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণ হারান ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। এই ঘটনায় চিনেরও ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও সে ব্যাপারে কোনও তথ্য দেয়নি শি জিনপিং’র সরকার। এরপর আগস্টের শেষে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা। প্রায় ৪৫ বছর পর সীমান্তে গুলি চালানাের খবর আসে। 

এদিকে সীমান্ত ইস্যুতে চিনকে বারবার কড়া ভাষায় বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সম্প্রতি সেনা প্রধান এম এম নারাভানে চিনের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে আলােচনার মাধ্যমে পূর্ব লাদাখে অচলাবস্থা কাটাতে বদ্ধপরিকর ভারত। কিন্তু কেউ যেন ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়ার ভুল না করেন, সে কথাও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। 

কয়েকদিন আগেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির জন্য দুই দেশই চেষ্টা করছে। গত বছর যা হয়েছে সম্পর্কের বরফ জমেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

গত ন’মাস ধরে উত্তপ্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা। চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় সেনা ও লাল ফৌজ। বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মুখােমুখি অবস্থান থেকে সেনা পেছনাে (ডিসএনগেজমেন্ট) দাবি জানায় ভারত। পাশাপাশি সেনা কমানাের (ডিএসকালেশন) দাবিও তােলা হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। গতকাল পূর্ব লাদাখের মলডােতে বসেছিল এই বৈঠক।

গত বছর থেকেই শুরু হয় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এই টানাপােড়েন। টানা ন’মাস ধরে চলছে এই টানাপােড়েন। সীমান্তে প্রায় এক লক্ষ ভারতীয় ও চিনা সেনা মােতায়েন করা হয়েছে। এলএসিতে মােতায়েন চিনা সেনার সংখ্যা কমানাে না হলে ভারতও একতরফা ভাবে সেনা কমাবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্র রাজনাথ সিং। 

এর আগে গত ৯ নভেম্বর অষ্টম দফার বৈঠকে দু’তরফেই নির্দিষ্ট কিছু বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা পিছনাের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। গত বছর জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় রক্ত ঝরে। তবে গত ১০ সেপ্টেম্বর মস্কোয় ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই’র মধ্যে যে পাঁচ দফা চুক্তি হয়েছিল সে বিষয়ে কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সামিটের পাশাপাশি এই বৈঠক করেছিলেন তারা।