বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্র ও বিক্ষোভরত কৃষকদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও সমাধানসূত্র মেলেনি। এবার এক কৃষক সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির মা হীরাবেন মােদিকেই আবেগতাড়িত চিঠি লিখলেন।
পাঞ্জাবের ফিরাজপুর জেলার গােলু কা মােধ গ্রামের বাসিন্দা একশ ছুঁই ছুঁই হরপ্রীত সিংহ হীরাবেনের উদ্দেশ্যে ওই চিঠি লেখেন।
কী কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তা চিঠিতে তুলে ধরেছেন ওই কৃষক। চিঠিতে হরপ্রীত লেখেন, অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনে এই চিঠি লিখছি। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে তিনটি কালাে আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন দেশের অন্নদাতারা। ঠান্ডার কামড়ে দেশের রাজধানীর উপকণ্ঠে শুয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
৯০-৯৫ বছরের বৃদ্ধারা যেমন এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন তেমনই শিশু এবং মহিলারাও রয়েছেন। প্রচন্ড ঠান্ডায় সকলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমনকি শহিদও হচ্ছেন অনেকে যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
চিঠিতে তিনি অভিযােগ করেন শিল্পপতিদের পকেট ভারি করতেই কেন্দ্র ওই তিনটি আইন পাশ করিয়েছে। তিনি লেখেন আম্বানি আদানি এবং শিল্পপতিদের স্বার্থসিদ্ধি করতেই ওই তিনটি আইন আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। অনেক আশা নিয়ে আপনাকে চিঠি লিখছি। আপনার ছেলে নরেন্দ্র মােদি দেশের প্রধানমন্ত্রী। চাইলে নিজের পাশ করা আইন প্রত্যাহার করতে পারেন উনি। আমার মনে হয় মায়ের আদেশ অমান্য করতে পারেন না তিনি। মা’ই পারেন ছেলের মতি ফেরাতে। সেটা হলে গােটা দেশ আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।
প্রসঙ্গত কৃষি আইনের বিরােধিতা প্রায় দু মাস ধরে কনকনে ঠান্ডায় দিল্লি সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে দশ দফা বৈঠক হয়েছে তাদের। কিন্তু সম্পূর্ণ ভাবে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে রাজি হয়নি কেন্দ্র। আবার দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার যে প্রস্তাব কেন্দ্র দিয়েছে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা।
হরপ্রীত নিজেও এই আন্দোলনের অংশ। সম্প্রতি শিমলায় গ্রেফতার করা হয় তাকে। অভিযােগ ওঠে বিনা অনুমতিতে সেখানে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। জামিনে বেরিয়ে এসেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন হরপ্রীত। তাঁর মতে কৃষকদের কথা না শুনলেও মায়ের আদেশ নিশ্চয়ই ফেলতে পারবেন না মােদি। তাই হীরাবেনকেই এই গুরুদায়িত্ব নিতে হবে।