কিছু দিন আগে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘােষণা করেছিলেন, সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা ঘরে ঘরে পৌছে দিতে এবার সরকার দুয়ারে দুয়ারে যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে সেই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচী শুরু হচ্ছে। এর জন্য রাজ্য জুড়ে খােলা হচ্ছে ২০ হাজার শিবির।
এই কর্মসূচীর বা যােজনার মাধ্যমে এবার থেকে সরকার মানুষের দরজার কাছে পৌছাবে। আসলে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা এখনাে যারা পাননি বা আবেদনই করেননি তাদের জন্যই এই দুয়ারে সরকার কর্মসূচীর বা যােজনার আয়ােজন সরকারের। গ্রাম পঞ্চায়েত বা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে এর জন্য শিবিরের আয়ােজন করা হবে। এর জন্য স্থানীয় স্কুল বা কলেজ বিল্ডিং বা কমিউনিটি সেন্টারগুলােতে এই শিবিরে আয়ােজন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এই শিবিরে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতাে সরকার পরিষেবা সংক্রান্ত মানুষের যাবতীয় অভিযােগ শুনবেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। শিল্পি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিডিও, মহকুমাশাক জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা।
গত ২৬ নভেম্বর রাজ্য সরকার নির্দেশিকা জারি করে এই কর্মসূচীর কথা ঘােষণা করেছিল। সরকারে দশটি প্রকল্পকেই এই দুয়ারে সরকার যােজনার আওতায় রাখা হয়েছে, যেমন স্বাস্থ্য সাথী, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী, কাস্ট সার্টিফিকেট, তফশিলি বন্ধু, জয় জহর ও একশাে দিনের কাজ।
একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে চারটি রাউন্ডে এই যােজনা বা কর্মসুচীর কাজ চলবে। প্রথম রাউন্ড চলবে ১ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় রাউন্ড ১৫ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। তৃতীয় রাউন্ড ২ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারী অবধি চলবে এবং চতুর্থ রাউন্ড জানুয়ারি মাসের ১৮ থেকে ২৮ তারিখ অবধি চলবে।
মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পেতে হলে অর্থাৎ নগদ বিহীনএবং বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর এবং পুর ওয়ার্ড স্তরে আয়ােজিত ক্যাম্পে আসতে হবে। প্রথম রাউন্ডে কেউ এসওপি নিয়ে এলে দ্বিতীয় রাউন্ডেই কার্ড পেয়ে যাবেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে এসওপি দিলে তৃতীয় রাউন্ডে কার্ড পাবেন।
তাছাড়াও তিনি জানান, জাতিগত শংসাপত্রের জন্য ক্যাম্পে এসে আবেদন করতে হবে। তাছাড়া জয় জোহর এবং তফসিলি বন্ধু প্রকল্পের আওতায় আদিবাসী উন্নয়ন দফতর ও অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দফতর ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে আদিবাসী এবং দলিত সম্প্রদায়ের কোনাে বর্ষীয়ান নাগরিক (যিনি আর কোনাে সরকারি আর্থিক সুবিধা পান না তিনি) মাসিক এক হাজার টাকা অর্থ সাহায্য পাবেন।
মুখ্য সচিব আরও জানিয়েছেন খাদ্যসাথী সংক্রান্ত যে কোনাে সমস্যার জন্যও ক্যাম্পে আবেদন করা যাবে। নাম ঠিকানা সংশােধন করা হবে এখানে। একই ভাবে একশ দিনের কাজ বা জব কার্ড সংক্রান্ত যে কোনাে সমস্যা হলে সাহায্য করা হবে।
আরও জানা গিয়েছে শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের আওতাতে যে সমস্ত তফসিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রছাত্রীরা নাম নথিভুক্ত করাবে এই প্রকল্পের আওতায় তাদের ৮০০ টাকা করে বছরে স্কলারশিপ দেওয়া হবে। এছাড়া শিবিরে থাকা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসারদের কাছে পরচার রেকর্ড সংশােধন করতে পারবে কৃষকরা। এছাড়া সংখ্যালঘু ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশুনার জন্যে আর্থিক সাহায্যের প্রকল্প ঐক্যশ্রীতে নাম নথিভুক্ত করা যাবে এই শিবিরে।