জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় প্রথম কৃষ্ণনগর থেকে কিন্তু দিনবদলের সাথে সাথে চন্দননগর এবং তারপরে রিষড়াতে। জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহ্য অনেক বেশি। চন্দননগর সাধারণত রীতিনীতি নিয়েই পূজো হয়, দুর্গাপুজো যেমন হয় সপ্তমী অষ্টমী নবমী দশমী হয় ঠিক সেই রকম ভাবেই চন্দননগরে পূজো হয়।
রিষড়াতে শুধুমাত্র নবমীর দিন পূজো হয় কিন্তু প্রতিমা আরো তিন দিন থাকে। চন্দননগর ঐতিহ্য হলো মায়ের রূপ আর আলোকসজ্জা। চন্দননগরের আলোকসজ্জা পৃথিবী বিখ্যাত তা সবাই জানে। সাথে থাকে বিসর্জন,যা দেখার জন্য সারা পশ্চিম বাংলার মানুষ অপেক্ষা করে থাকে।
যদিও বর্তমান সময়ে সব কিছুই কেমন ফিকে হয়ে গেছে করোনা আবহাওয়াতে। চন্দননগরের মতো রিষড়াতে ও খুব ভালো পূজো হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সব পূজো গুলোর অবস্থা প্রায় নমঃ নমঃ। সব পূজো গুলো প্রশাসন এর নিয়ম মেনে কাজ করছে।
রিষড়ার পূজো বলতে পূর্বপাড়ে রবীন্দ্র সংঘ, সারদামাতা ক্লাব, পার্ক সম্মিলনী, লেলিন মাঠ যুব গোষ্ঠী, জাগৃতি জাগরন আর পশ্চিম পাড়ের পূজো বলতে অঙ্কুর, কোরাস, মোড়পুকুর, তরুণ দল, বন্ধুগোষ্ঠী প্রমুখ।
তবে এবার রিষড়াতে পুজোতে সারা ফেলেছে অঙ্কুর সাধানকানন। ৪১তম বর্ষে তাদের ভাবনা ‘অন্তরের উৎস থেকে ঐতিহ্যের উৎসব’ এক অভিনব প্রচেষ্টা। সাথে আছে পুরোপুরি ডিজিটাল ব্যবস্থা। মাতৃ প্রতিমা চোখ ফেরানো যায় না।
অঙ্কুরের যুগ্ম-সম্পাদক মৃগ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন- ‘আমার কখনোই চাইনা পূজো ছোট করে হোক। কারণ মানুষের জীবনে এখন সব কিছুই পজেটিভ না।তাই এই ঐতিহ্যের পূজোকে ছোট করে তাদের নিরাশ করতে চায় না। আগামী বছরের জন্য তারা তৈরি সেটাও জানিয়ে রাখলেন’।
প্রায় একই কথা বলেন অপর সম্পাদক শান্তনু ডাপসি, ‘তিনি মনে করেন পুজো মানেই আনন্দ করোনা কালে মানুষের পাশে থাকা তাদের আনন্দ দেওয়া আমাদের লক্ষ্য। সর্বদা অঙ্কুর পুজোর পাশাপাশি নানান সামাজিক কাজ করে ভবিষ্যতে তা করবে।শুধু তাই নয় করোনা আবহে পুলিস প্রশাসন যেভাবে মানুষের সাথে ও পাশে ছিলো সেই জন্য আমরা এবার আমাদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শ্রী পিনাকি রঞ্জন দাস ( এডিসিপি ট্রাফিক চন্দননগর) এর মত ব্যক্তি দিয়ে উদ্বোধন করিয়েছি।কারন করোনা পর্বে উনাদের মতন করোনা যোদ্ধাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ’।
অপরদিকে পুলিশ প্রশাসনও করোনা আবহে সুষ্ঠুভাবে পূজো পরিচালনা করার জন্য বিভিন্নভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। রিষড়া পুলিশ থানার অফিসার-ইন-চার্জ প্রবীর দত্ত জানান, ‘প্রত্যেক পুজো কমিটিকে করোনার নির্দিষ্ট বিধি-নিষেধ মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে এবং সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন নজর রাখছে। পুজো যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায় সে বিষয়েও পুলিশ তৎপর এবং সবরকম সাহায্যের জন্য তৈরি।
পুজো মানেই যানজটের সমস্যা কিন্তু করোনা আবহে সেই সমস্যাকে সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রন করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল শ্রীরামপুর ট্রাফিক পুলিশ। এবিসয়ে জানতে চাওয়া হলে শ্রীরামপুর ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর-ইন-চার্জ মান্দাতা সাউ বলেন, ‘করোনা আবহে যাতে এক জায়গায় খুব বেশি ভিড় না হয় তার জন্য কড়াভাবে নজর রাখা হচ্ছে, শুধু তাই নয় প্রত্যেক জায়গায় ট্রাফিক রুল যাতে ভঙ্গ না হয় সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখছে ট্রাফিক পুলিশ’।