বাংলা নীল বাড়ি দখলের লক্ষ্যে কোনও পরীক্ষানিরীক্ষা নয়, পরীক্ষিত সৈনিকদের হাতেই দায়িত্ব দিতে চায় বিজেপি। ২০০- র বেশি আসন পেতে হবে বলে ২০২১- এর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির জন্য টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যে নিজের পুরােনাে মডেলে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই ভােটযুদ্ধে সফল নেতাদের বাংলায় জড়াে করতে চান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মঙ্গলবার বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর সঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যের ৫ সাংগঠনিক জোনের দায়িত্ব দেওয়া হবে ৫ কেন্দ্রীয় নেতাকে।
প্রসঙ্গত, আট বছর আগে অমিত শাহ উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে এমনই কৌশল নিয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশকে বেশ কয়েকটি জোনে বিভক্ত করে সেখানে এক এক জন উত্তরপ্রদেশের বাইরে লােককে দায়িত্ব দেন। যারা সংঘ বা দলের বড় নেতা ছিলেন। এই কৌশল প্রসঙ্গে বিজেপি অন্দরে অমিত শাহ বলতেন, স্থানীয়দের কাছে যে সব ফাঁকফোকর গা সওয়া, একেবাইরে গুরুত্ব পায় না, নতুন চোখে সেগুলােতে নজর পড়ে।
তাছাড়া দলাদলি, পক্ষপাতের উর্ধ্বে উঠে দলের স্বার্থই দেখতে পারে সেই চোখ। এ দিন সেই মডেলেরই ঘােষণা করেন ৭২ ঘন্টা আগে দায়িত্ব বঙ্গে আসা। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। আর বাংলা দখলে রাজের যে পাঁচটি জোন রয়েছে সেখানে। অমিত শাহ তাঁর পঞ্চ পাণ্ডবকে নিযুক্ত করেছেন বলে সূত্রের খবর। যারা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যের পরীক্ষায় লেটার মার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সােমবার রাতেই কলকাতায় পা রেখেছেন বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এসেই তিনি হুঙ্কার দিয়েছিলেন, বিধানসভা ভােটে ২০০- র বেশি আসন পাবেই বিজেপি। এরপর এ দিন হেস্টিংসে দলের কার্যালয়ে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা এবং রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। জন কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে বৈঠকে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেভাবে বঙ্গে লড়াইয়ের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দিয়েছেন।
অমিত শাহ, সেভাবেই বাংলায় ২০২১ কে সামনে রেখে চুড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হল এ দিন থেকেই। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের পাঁচ সাংগঠনিক জোনে রাজ্য নেতাদের উপরে পর্যবেক্ষক ও আহ্বায়কের দায়িত্ব থাকবেন পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতা।
হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর এই জোনের দায়িত্বে ত্রিপুরায় জয়ের অন্যতম কারিগর অভিজ্ঞ সুনীল দেওধর। রাঢ়বঙ্গ জোনের দায়িত্বে বিনােদ সঙ্কর। কলকাতা জোনের দায়িত্বে দুষ্মন্ত গৌতম। নবদ্বীপ জোনের দায়িত্বে বিনােদ তাওরে। উত্তরঙ্গ জোনের দায়িত্বে কেন্দ্রীয় নেতা হরিশ দ্বিবেদী। এই পাঁচটি জোনের নতুন দায়িত্বে আসা কেষ্ট্রীয় নেতারা আগামী ১৮ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জোনের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসে গােটা পরিস্থিতি বুঝে নেবেন। সেইমতাে তৈরি হবে পরবর্তী পরিকল্পনা।
তবে শুধু এই পাঁচ জন নয়। রাজ্য বিজেপি- র এক প্রথমসারির নেতা জানাচ্ছেন বাংলায় কমপক্ষে ৫০ জন কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা আসনে ভােট পরিচালনা করতে। তাঁরা সকলেই বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছে। এর থেকেই পরিষ্কার যেভাবেই হােক, দেশের অন্যান্য রাজ্যে ক্ষমতা দখলের মতাে বাংলায় ও মমতা। সরকারকে ভূপতিত করে নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া কেন্দ্রের শাসকদল।