নিজের স্মৃতিকথা নিয়ে লেখা একটি বইয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে নিয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যে মন্তব্য করেছেন, তীব্র ভাষায় তার নিন্দা করলাে শিবসেনা। কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীও প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কুয়াের ব্যাঙের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা আদৌ ভারত সম্পর্কে কিছু জানেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন শিবসেনা নেতা তথা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। তাঁর মতে, কোনও ভারতীয় রাজনীতিক সম্পর্কে ওবামার এহেন মন্তব্য অনভিপ্রেত। রাহুলের পক্ষে নিয়ে সঞ্জয় রাউত বলেন, কোনও বিদেশী রাষ্ট্রনেতা কোনও ভারতীয় রাজনীতিক সম্পর্কে এধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। এবার এই মন্তব্য কুরুচিকর।
‘আ প্রমিসড ল্যান্ড’ শীর্ষক এক বইয়ে বিশ্বের কাবড় নেতাদের নিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন বারাক ওবামা। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমােহন সিং, কংগ্রেস নেত্রী সােনিয়া গান্ধিদের সম্পর্কেও বইটিতে কয়েক লাইন করে আছে। বারাক ওবামার লেখা সেই বইয়ে রাহুল গান্ধি নিয়ে যে মন্তব্যগুলি রয়েছে তা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।
ওবামা রাহুল গান্ধিকে ক্লাসের এমন এক ছাত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন যে তার পড়াশােনা করে এসে শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু আদতে তার মধ্যে বিষয়টি ঠিক করে রপ্ত করার প্যাশনের অভাব রয়েছে। তিনি রাহুলকে একজন নার্ভাস এবং অপরিণত ব্যক্তিত্ব বলেও উল্লেখ করেন।
আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্পের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে শিবসেনা নেতা আরও বলেন, ট্রাম্প লােকটা পাগল এটা কি আমরা বলতে পারি? কখনই বলব না। এর পরে ওবামা ভারত সম্পর্কে কী জানেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন রাউত।
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আক্রমণ দেগে বলেন- আমাদের প্রিয় নেতা রাহুল গান্ধি সম্পর্কে এলেবেলে মন্তব্য করার আগে তার সঙ্গে কথা বলুন ওবামা। ওবামাকে কটাক্ষ করে কুয়াের ব্যাঙও বলেছেন অধীরবাবু।
টুইটে অধীর লিখেছেন, রাহুলের মতাে মানুষের ব্যক্তিত্ব না বুঝে তাঁর নামে কোনও মন্তব্য করার আগে যে কোনও বিষয়ে ব্যক্তিগত বা ভার্চুয়াল যেভাবে ইচ্ছে ওবামা তার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। আমাদের নেতা সম্পর্কে কোনও কথা বলার আগে দু’বার ভাববেন। অন্যথায় আপনাকে অজ্ঞতার বিশ্বেই থাকতে হবে। কৃত্রিম আলােয় বাস করলে না। কুয়াের ব্যঙের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন।
কংগ্রেস নেতা তারিক আনােয়ার বলেন, প্রায় ৮-১০ বছর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন ভারতে এসেছিলেন, তখন রাহুল গান্ধির সঙ্গে তাঁর খুব অল্প সময়ের জন্য কথাবার্তা হয়েছিল। কয়েকটা বৈঠকে তার সঙ্গে কথা বলে এমন ধারনা তৈরি করা যায় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাহুলের ব্যক্তিত্ব ও মানসিকতায় অনেক বদল এসেছে। এখন অনেক অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন তিনি।
এমনিতে রাহুল গান্ধির সিরিয়াসনেস নিয়ে কম আলােচনা হয়নি। অতীতে বহুবার দেখা গিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ভােট হচ্ছে আর রাহুল তখন বিদেশে ছুটি কাটাচ্ছেন। এ নিয়ে কংগ্রেসের অনেক নেতাও আড়ালে আবডালে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ওবামার কলমে সে কথাই উঠে এসেছে।
