মঙ্গলবার তপসিয়াতে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ৫০-৬০টি ঝুপড়ি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী, দমকলমন্ত্রী ও স্থানীয় বিধায়ক। সূত্রের খবর, তপসিয়ার ২৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের লাগােয়া বস্তিতে বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ আগুন লাগে।
দমকল সূত্রের খবর, এই আগুনে সম্পূর্ণরূপে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাটটি ঝুপড়ি। প্রথমে দমকলের তরফ থেকে ছ’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পাঠানাে হয়। তারপর আগুনের ভয়াবহতা বুঝে আরও ইঞ্জিনকে ঘটনাস্থলে পাঠানাে হয়।
বস্তি সংলগ্ন এলাকাতে খাল থাকায় জলের জোগানের অসুবিধা হয়নি। স্থানীয় মানুষরাও খাল থেকে জল এনে প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানাের কাজে হাত লাগায়। তবে কী কারণে আগুন লেগেছে, সেটা এখনই স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়, তদন্ত করে খতিয়ে দেখে তবেই বলা সম্ভব বলে দমকরে তরফ থেকে জানানাে হয়েছে।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দমকলের ডিজিকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কোনও হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও, তবে ওই বস্তি এলাকাটি খুব ঘিঞ্জি হওয়াতে যাতে আগুন আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন দমকল আধিকারিকরা। এছাড়াও ওইখানে বেশ কিছু তেল ও মােবিলের কারখানা থাকায় আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলে দমকল সূত্রের খবর।
তবে পুরাে বস্তিই আগুনে পুড়ে গিয়েছে। এমনকি হঠাৎ করে আগুন লাগায় ওই ঝুপড়ির বাসিন্দারা কেবলমাত্র নিজেদেরকে ঝুপড়ি থেকে বের করে আনতে পেরেছিলেন। কোনও কিছুই তাদের পক্ষে সঙ্গে করে আনা সম্ভব হয়নি। তার ফলে পুরােপুরি সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়েছে ওই ঝুপড়ির বাসিন্দারা।
মুখ্যমন্ত্রী আগুন লাগার পর থেকেই এই বিষয়ে খবর রাখতে শুরু করেন। সূত্রের খবর, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা মুখ্যমন্ত্রীকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান। আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি জানিয়েছেন, মূলত এই বস্তিতে থাকেন দিনমজুররা।
অনুমান করা হচ্ছে স্থানীয় রঙের কারখানা থেকেই আগুন লেগেছে। সকলকে নিপদে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে। ভিতরে কেউ আটকে নেই বলে জানিয়েছেন দমকলমন্ত্রী।
এমনকি স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খান ঘটনাস্থলে যান। তিনি জানিয়েছেন, যাঁদের ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়েছে, তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দমকলের ডিজি’র সঙ্গেও তিনি এ ব্যাপারে কথা বলেন। যাঁদের ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়েছে, তাদের কোথায় রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সে বিষয়েও খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি আগুনে যাঁরা সর্বস্ব হারিয়েছেন , তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খানের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন এ বিষয়ে। দমকলের তরফে জানা গিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও যাতে পকেট ফায়ার না হয়, সেজন্য ভালােভাবে এলাকা পরিদর্শন করে দেখছে দমকলকর্মীরা।