বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় স্ত্রী ও সন্তানরা রক্ষণাবেক্ষণের টাকা পেতে শুরু করবেন আবেদন করার দিন থেকেই। বুধবার একটি মামলার নিরিখে এমনই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে খােরপােশ পাওয়ার সময় নির্দিষ্ট হল যা এতদিন পর্যন্ত হিন্দু বিবাহ আইন ও হিন্দু দত্তক ও রক্ষণাবেক্ষণ আইনে উল্লিখিত ছিল না।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জেরে যে সব মহিলা বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তানের হেফাজত ও ভরণপােষণ সংক্রান্ত দীর্ঘ মামলা লড়তে গিয়ে চূড়ান্তভাবে আর্থিক দৈন্যের সম্মুখীন হচ্ছেন, তাঁরা উপকৃত হবেন। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি ইন্দু মালহােত্রা ও বিচারপতি সুভাষ রেড্ডি বলেন, আর্থিক সমস্যার শিকার নির্ভরশীলা স্ত্রীর পক্ষে আদালতে যথাযথভাবে মামলা লড়া সম্ভব হয় না। কোনও নির্ভরশীলা স্ত্রী যাতে আর্থিক সঙ্কটের চরম সীমায় পৌঁছে না যান, তা রােধ করতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আদালতে আবেদন জানানাের দিন থেকেই এই বাবদ অর্থ পেতে থাকবেন।
এর সুবাদে হিন্দু বিবাহ আইন ও হিন্দু দত্তক আইন ও রক্ষণাবেক্ষণ আইনে খােরপােশ দেওয়ার নির্দিষ্ট দিন সম্পর্কে অনুল্লেখ থাকার বিষয়টি আলােচনা করে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। এতদিন পর্যন্ত আদালত যে দিন রক্ষণাবেক্ষণের আবেদন মঞ্জুর করে, সেই দিন থেকেই এই বাবদ অর্থ পেতে শুরু করেন নির্ভরশীল স্ত্রী ও সন্তানরা। একই সঙ্গে নির্ভরশীল স্ত্রী, সন্তান, বাবা মায়েদের আদালতের নির্দেশে ৬০ দিনের মধ্যে অর্থপ্রাপ্তি ঘটে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, হিন্দু বিবাহ আইনে অন্তর্বর্তীকালীন খােরপােশ পাওয়ার বিষয়টি থাকলেও বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনের সঙ্গে কোনও সঠিক তথ্য পরিবেশন করা নিয়ে সমস্যা থাকায় পারিবারিক আদালতের পক্ষে অন্তর্বর্ত খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ জারি করায় বাধা তৈরি হয়। ওই দিন সুপ্রিম কোর্ট জানায় রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত মামলার বিচারে আবেদনকারীকে আগে এই মর্মে কোনও আবেদন করা থাকলে আবেদনকারীকে তার উল্লেখ করতে হবে। এই বিষয়ে একাধিক রায়ের মধ্যে সঙঘাতও ঘটতে পারে।
এক্ষেক্ষে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে অপরাধ আইনের ১২৫ ধারা, হিন্দু বিবাহ আইন, হিন্দু দত্তক আইন ও রক্ষণাবেক্ষণ আইন, নারীর গার্হস্থ্য নির্যাতন রােধক আইন অথবা স্পেশাল ম্যারেজ আইনে দেওয়া রায়ের মধ্যে সংঘাত ঘটতে পারে।
সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, খােরপােশ আবেদনকারী স্বামী বা স্ত্রী, সামাজিক মিলনের অন্তর্ভুক্ত সঙ্গী, লিভ ইন সম্পর্ক সাধারণ বিবাহ আইনের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিকে অন্তবর্তী খােরপােশের জন্য একটি সামগ্রিক আবেদন করতে হবে। সেই সঙ্গে দিতে হবে এফিডেভিটের মাধ্যমে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির খতিয়ানের ঘােষণাপত্র। এই হলফনামা দুই পক্ষকেই জমা দিতে হবে।