রাজ্যে এসেছেন অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রাম চতুরর্ডিহিতে মধ্যাহ্নভােজনের সারেন তিনি। এদিকে একদিকে যখন একুশের ভােট প্রস্তুতির সঙ্গে আদিবাসী পরিবারের আতিথেয়তা সাদরে গ্রহণ করছিলেন অমিত শাহ, ঠিক তখনই তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন চতুরডিহি গ্রামে সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল। কাঠের চুল্লীতে হয়েছিল অমিত শাহের জন্য রান্না। আদিবাসী রীতি মেনে তৈরি করা হচ্ছে মধ্যাহ্নভােজনের পদ। যেখানে ছিল ভাত, ডাল, করলা ভাজা, বেগুন ভাজা, আলু ভাজা, পােত্ত এবং মােচার সন্দেশ।
আদিবাসী গ্রামের মানুষেরা অমিত শাহ’র মধ্যাহ্নভােজনের প্রস্তুতি করেন নিজের হাতে। কাঁসার বাসনে খেতে দেওয়া হবে তাঁকে। খেজুরের চাটাই-এর ওপর আসন পেতে বসতে দেওয়া হয় অমিত শাহকে।
এদিকে একদিকে যখন অমিত শাহ একুশের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বাঁকুড়ায় দলীয় বৈঠক করছেন এবং আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভােজন করছেন, সেই সময় রাজ্যে চূড়ান্ত সক্রিয় দেখা গিয়েছিল সিবিআই ও আয়কর দফতরের আধিকারিকদের। গরু পাচার তদন্তের জন্য কলকাতায় বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। এছাড়াও দুর্গাপুর, আসানসােল, জামুড়িয়া, রানীগঞ্জ, পুরুলিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে আয়কর দফতর।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গ আগমনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির সক্রিয় হওয়ার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, এমনটাই দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাঁকুড়ায় নিমন্ত্রণ খেতে এসেছেন আর আধা সামরিক বাহিনী তল্লাশি শুরু করেছে বলে শুনতে পাচ্ছি। রাজ্য পুলিশকে কিছু না জানিয়ে এই সমস্ত কিছু হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। একইসঙ্গে এটি একটি পূর্বপরিকল্পনা বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার নবান্ন প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের আইএএস এবং আইপিএস আধিকারিকদের কেন্দ্রীয় এজেন্সির নাম করে ভয় দেখানাে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, পুলিশ আধিকারিকদের ইনকাম ট্যাক্স, ভিজিলান্স কমিশন দিয়ে হেনস্থা করানাে হবে ভয় দেখানাে হচ্ছে। শুধু তাই নয় রাজ্যে কর্মরত আইএএস, আইপিএস আধিকারিকদের কর্মরত স্ত্রীদের রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করে দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্যের পাল্টা বিজেপির মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বলেন, কোথায় কি তল্লাশি হচ্ছে তা জানা নেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের কথায়, রাজ্যের আমলা এবং অফিসারদের বিভিন্নভাবে বার্তা দিতে চাইছে অমিত শাহরা। রাজ্য সরকারের ভিত নাড়ানাের জন্যই এই রাজনৈতিক খেলা বলে দাবি করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।