কমতে কমতে তাদের সংখ্যা এখন ৫৩। ব্রিটিশরা এক সময় নির্বিচারে হত্যা করেছিল তাদের। তার ওপর একের পর এক রোগভোগে দিনে দিনে দ্রুত কমেছে তাদের সংখ্যা। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সেই অন্যতম বিপন্ন উপজাতি গ্রেট আন্দামানিজ’দের দশ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তাদের সকলকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রবালপ্রাচীরের একটি দ্বীপে ক্ষুদ্র এলাকায় বসবাস গ্রেট আন্দামানিজ’দের। পোর্ট ব্লেয়ার শহরে যে ছ’জন গ্রেট আন্দামানিজের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল, তারা আপাতত সুস্থ। কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন সকলে। কিন্তু দ্বীপে যে চারজনের পজিটিভ এসেছে তারা এখনও চিকিৎসাধীন।
দ্বীপপুঞ্জের যে কটি উপজাতি মূল স্রোতে মিশেছে, তাদের অন্যতম দ্রুত শেষ বসা গ্রেট আন্দামানিজ। পোর্ট ব্লেয়ারে তাদের যাতায়াত লেগে থাকে নানা কাজে। সেখানে সংক্রামিত ছ’জন গ্রেট আন্দামানিজই দীর্ঘদিন ধরে শহরে বসবাস ও কাজকর্ম করছিলেন। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে করঅনার বিরুদ্ধে লড়াইটি একদম সামনে থেকে চালাচ্ছেন চিকিৎসক অভিজিৎ রায়। তিনি জানিয়েছে, আন্দামানের মূল দ্বীপে লাগাতার করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। জুলাইয়ে ছ’জন গ্রেট আন্দামানিজের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। তাদের সঙ্গেসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তার পরেই বাড়ে দুশ্চিন্তা।
প্রবালপ্রাচীরের ৩৭টি দ্বীপে যাওয়া সহজ নয়। কেননা সবক’টি উপজাতি বহিরাগতদের সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে না। তাই সবদিক থেকে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। ততদিনে আবার কয়েকজন গ্রেট আন্দামানিজ পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ঘুরে গেছেন বলে প্রশাসনের কাছে খবর আসে। এতে দুশ্চিন্তা বাড়ে। তা যে একেবারে ভিত্তিহীন ছিল না, তা প্রমাণ হয়ে যায় গত সপ্তাহে পরীক্ষার পরেই।
এই মুহূর্তে প্রশাসনের উদ্দেশ্যই হল গ্ৰট আন্দামানিজ ছাড়াও অন্যান্য উপজাতির মধ্যে যাতে করোনা ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করা। অভিজিৎ বলেছেন, যে সব উপজাতির সঙ্গে আমাদের যোগসূত্র রয়েছে তাদের ওপর আমরা নজর রাখছি। এই সব উপজাতির সকলেরই যাতে পরীক্ষা হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছি।