গণতন্ত্রে বিরুদ্ধ স্বরকে কখনও দমানো যায় না। রাজস্থান মামলায় এমনই মন্তব্য বৃহস্পতিবার শোনা গেল অরুণ মিশ্রের কাছ থেকে। শচীন পাইলট সহ ১৯ কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে যে অস্বস্তি শুরু হয়েছে তাতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না, এটাই ছিল রাজস্থান বিধানসভার অধ্যক্ষ সি পি যোশীর আবেদন। কিন্তু সেই আর্জি এদিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। রাজস্থান হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে।
এদিকে শচীন পাইলট শিবিরের বক্তব্য, তারা দল ঘড়তে চান না। শুধুমাত্র চান দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন। শচীন পাইলটের নেতৃত্বে কংগ্রেসের বিধায়কদের একাংশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এরপর রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট দুটি বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে সব বিধায়ককে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শচীন পাইলট সহ ১৯ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সেই বৈঠকে যোগ দেননি। এরপর বিধায়কদের বরখাস্ত করা যায় কিনা তা জানতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান অধ্যক্ষ সি পি যোশী।
এদিকে, পাল্টা মামলা দায়ের করে শচীন পাইলটরা দাবি করেন, তাঁদের অধ্যক্ষ বরখাস্ত করতে পারেন না। কারণ, তারা দল ছাড়তে চান না, শুধু শীর্ষ নেতৃত্বের বদল চান। সেই মামলার শুনানিতে এদিন সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, গণতন্ত্রে বিরুদ্ধ স্বরকে কখনও দমিয়ে দেওয়া যায় না।
এদিন, অধ্যক্ষের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন কংগ্রেসের আইনজীবী সাংসদ কপিল সিব্বল। এই শুনানিতে বিচারপতি অরুণ মিশ্রর পর্যবেক্ষণ ছিল ধরে নেওয়া যাক ওই বিধায়করা মানুষের আস্থা হারিয়েছে। কিন্তু দলে থাকা অবস্থায় তাদের বরখাস্ত করা যায় না। তাহলে অনেকে সেটা অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করবে এবং কেউ দলের বিরুদ্ধে কখনও কথা বলতে পারবে না।
গণতন্ত্রে বিরুদ্ধ স্বরকে কখনোই এভাবে দমিয়ে রাখা যায় না। যদিও এই নিয়ে রাজস্থানের প্রসঙ্গ উল্লেখই করেননি বিচারপতি অরুণ মিশ্র। এর পরে অধ্যক্ষের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে কপিল সিব্বল বলেন, ওই বিধায়করা তো দলের বৈঠকে যোগ দেননি। তাহলে কেন তাঁদের বরখাস্তের নোটিশ ধরাতে পারবে না অধ্যক্ষ? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজস্থান হাইকোর্ট এই পরিস্থিতিতে এসে বিধায়কদের সুরক্ষার কোনও নির্দেশ দিতে পারে না।
অধ্যক্ষ যখন বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে, তখন এতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু এদিন সিব্বলের যুক্তি ধোপে টেকেনি। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয় এই মামলায় রায় দেওয়া হবে। বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, এই বিধায়করা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। তারা কি তাদের বিপরীত মত জানাতে পারবেন না? বিচারপতির এই প্রশ্নের উত্তরে সিব্বলের পাল্টা সওয়াল ওদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান নেবেন, আদালত নয়। বৈঠকে যোগ না দেওয়ার অর্থ ওই বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজের সমান। যদিও শীর্ষ আদালত সিব্বলের সেই যুক্তিতে এদিন সিলমোহর দেয়নি। আজ, শুক্রবার বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ এই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।