আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন টেস্ট যত বাড়বে, কেস তত বাড়বে। শনিবার মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হা আরও এক ধাপ এগিয়ে জানালেন কোভিডের চেয়েও বেশি স্পিড আমাদের। তাই প্যানিক করবেন না। তাঁর বক্তব্য, কোভিড কেস বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।
তিনি এদিন তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে রাজ্যের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলায় চিকিৎসা পরিষেবা চিত্র তুলে ধরেন। যদিও তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন বিরোধীরা। তাদের মতে পরিসংখ্যান ও বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে কোনও মিল নেই। বিশেষ করে হাসপাতালগুলিতে কোভিড চিকিৎসার গুণগত এবং সংখ্যাগত মান নিয়ে।
শনিবার নবান্ন থেকে মুখ্যসচিব জানান, এই মুহূর্তে রাজ্যে ১৪৭০৯ জনের শরীরে করোনা অ্যাকটিভ রয়েছে। এর মধ্যে ১০,৫০০ জন অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ বর্তমানে উপসর্গহীন। তারা বাড়িতে আইসোলেশনে বা সেফ হাউসে রয়েছেন। ২২০০ জনের সংক্রমণ মৃদু। ৬৬২ জনের অবস্থা বেশি সংকটজনক এবং ১২৫০ জনের অবস্থা তুলনামূলকভাবে কম সংকটজনক। অর্থাৎ দু’য়ে মিলিয়ে ১৯১২ জনের হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।
মুখ্যসচিব বলেন, রাজ্যের ১০ কোটি বাসিন্দার নিরিখে এই সংখ্যাটা এমন কিছু বেশি নয়। তিনি বলেন, বর্তমানে এই রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর হার আগের তুলনায় অনেক কমে দাঁড়িয়েছে ২.৭৬ শতাংশ। যা জাতীয় গড়ের (২.৫৩ শতাংশ) চেয়ে সামান্য বেশি।
মুখ্যসচিব এদিন করোনা চিকিৎসায় কোভিড হাসপাতালগুলির পরিষেবার মান নিয়ে কিছু পরিসংখ্যান দেন। সেই অনুসারে প্রতিদিন রাজ্যে গড়ে ১০০ জনের মতো রোগি করোনা চিকিৎসার জন্য ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালগুলিতে বেডের অভাব নেই বলেও জানান তিনি। বহু হাসপাতালে বেড খালি রয়েছে। খোদ কলকাতার হাসপাতালগুলিতেই ১৫০০’র মতো বেড খালি। এখনও পর্যন্ত সেফ হাউসে ৬০০০ বেড রয়েছে।
কোভিড চিকিৎসার ক্ষেত্রে কেবল হাসপাতালের বেড সংখ্যাই নয়, পরিষেবার গুণগত মান নিয়েও আশার কথা শোনালেন মুখ্যসচিব। এই বিষয়ে রাজ্যের সিনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিম কাজ করছে। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুর ঘুরে পর্যালোচনা করে দীর্ঘমেয়াদি পরামর্শ দিচ্ছেন। বর্তমানে হু-এর গাউডলাইন মেনে প্রতি ১০ লক্ষে ১৪৪ জনের করোনা টেস্ট হচ্ছে। আগামী দিনে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ২৭৫ করাই রাজ্য সরকারের লক্ষ্য।
মুখ্যসচিব বলেন, আগামী দিনে সংক্রমণ বাড়বে। শহরের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ এলাকাতেও সংক্রমণ সংখ্যা ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হবে। কিন্তু মুখ্যসচিবের অভয়বাণী, তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, করোনা যে গতিতে এগোচ্ছে, তার চেয়েও বেশি গতিতে রাজ্য সরকার। সব রকমের প্রস্তুতি রেখেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যসচিব এদিন জানিয়ে দেন কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে লকডাউন করা হবে না।