• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

মুখ্যমন্ত্রী চান সবার জন্য মেট্রো আর মেট্রো চায় জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য

এদিন রাজ্য সরকারকে মেট্রো আধিকারিকরা জানিয়েছে, মেট্রো চলবে কিনা এই সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারবেন না। কারণ, এটা শুধু কলকাতা মেট্রোর বিষয় নয়। রেল মন্ত্রকের বিষয়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে যত সিট তত যাত্রী নিয়ে মেট্রো চললে সেব্যাপারে রাজ্য সরকার মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবে। সোমবার মেট্রোর তিন অফিসারের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই বৈঠকের পর এদিন বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মেট্রো রেলকে অনুরোধ করেছিলাম। অফিসাররা জানিয়েছেন, জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য তাঁরা মেট্রো চালাতে পারেন। কিন্তু সবার জন্য মেট্রো চালানো সম্ভব নয়। জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য মেট্রো চালু হলে অনেক উপকার হবে।

এব্যাপারে মেট্রো রেলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথাও বলেছেন।

আমরা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিষেবা চালু করতে। সরকারি কর্মী বা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যদি মেট্রোয় চড়ার সুযোগ পান তাহলে বাস ফাকা হবে। সেখানে অন্যরাও সুযোগ পাবে। ওরা একটা অ্যাপও আনছে। এই বৈঠকের পর স্পষ্ট হল যে জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে মেট্রো চলছে না কলকাতায়। সময় সীমিত, এত তাড়াতাড়ি স্টেশন, রেলের কোচ, স্যানিটাইজ করা সম্ভব নয়।

এদিকে, নবান্ন থেকে ফিরে এসে রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। শুধু জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য মেট্রো চালু করা হলে তাও দিনে ৪০ হাজার যাত্রী হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছে, আমরা ওদের (মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ) বলেছি, এখনই সবার জন্য না হলে মুম্বইয়ের মতো জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য অন্তত মেট্রো চলুক কলকাতায়।

এদিন রাজ্য সরকারকে মেট্রো আধিকারিকরা জানিয়েছে, মেট্রো চলবে কিনা এই সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারবেন না। কারণ, এটা শুধু কলকাতা মেট্রোর বিষয় নয়। রেল মন্ত্রকের বিষয়। রেল মন্ত্রকই পারে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে নবান্নের আলোচনা হলে ভালো হয়। কারণ, জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য মেট্রো চালাতে হলে তারও সবুজ সংকেত আসতে হবে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক থেকে। এরপরই রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

এদিকে, রেল বিজ্ঞপ্তি জারি করে গত সপ্তাহেই জানিয়েছে, ১২ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন বাদ দিয়ে আর সমস্ত ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রেখেছে রেল মন্ত্রক। এদিন এই প্রসঙ্গটিও মেট্রো কর্তারা বৈঠকে তোলেন। লকডাউন ঘোষণার আগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ থেকে ৭ লক্ষ মানুষ মেট্রোতে যাতায়াত করতেন। মেট্রো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন যাত্রীরা।

বেসরকারি বাস ও মিনিবাস সেভাবে পথে নামছে না। এদিকে, সরকারি বাসের পক্ষেও বিপুল পরিমাণ যাত্রীর বোঝা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মেট্রো চালু হলে সমস্যা কিছুটা মিটবে বলে মনে করছেন মট্রো রেলের মুখ্যজনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, আমাদের কর্মী সমস্যা আছে। সীমিত সংখ্যায় মেট্রো চালানো সম্ভব।

কলকাতা মেট্রো রেলের তরফে রাজ্য সরকারকে কিছু জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার রেল মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবে। রেল মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেলে তবেই পরিষেবা দেওয়া সম্ভব। আগেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, যদি কোনও রাজ্য চায় তাহলে রেল পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে পথ মসৃণ হবে। এখন রাজ্য চাইছে যাত্রী দুর্ভোগ কমাতে এগিয়ে আসুক কলকাতা মেট্রো। চালু হোক পরিষেবা। এখন দেখার কেন্দ্রের ছাড়পত্র মেলে কিনা।