• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানে ৫০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চালু কেন্দ্রের, বাদ পড়েছে বাংলা

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান প্রকল্প চালু করল কেন্দ্র।

গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান প্রকল্প চালু করল কেন্দ্র। (Screengrab: Twitter/@BJP4Gujarat)

লকডাউনের কারণে দেশে কর্মহীন হয়েছেন কয়েক লক্ষ শ্রমিক। করোনার জেরে কর্মক্ষেত্র ছেড়ে নিজভূমে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা। এবার সেইসব ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান প্রকল্প চালু করল কেন্দ্র।

শনিবার একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিহারের তেলিহার গ্রামে এই প্রকল্পের ভার্চুয়াল সুচনা করলেন নরেন্দ্র মোদি। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, রাজস্থান- এই ছয় রাজ্যের ১১৬ টি জেলায় আগামী ১২৫ দিনের জন্য এই প্রকল্প কার্যকর হবে বলে ঘোষণা করলেন নরেন্দ্র মোদি।

তবে এই প্রকল্পে নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের। যদিও এই রাজ্যে বাইরে থেকে প্রায় ছয় লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন বলে সরকারি মহলের খবর। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই প্রকল্প থেকে বাদ পড়া বাংলাকে বঞ্চনারই একটি নতুন সংযোজন মাত্র।

শনিবার বিহারে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ একটা ঐতিহাসিক দিন। নিজ নিজ রাজ্যে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক এবং গ্রামের নাগরিকদের জীবিকার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এই প্রকল্প। মোট ১১৬ টি জেলার প্রত্যেকটিতে গড়ে প্রায় ২৫ হাজারের মতো পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরেছে।

যেসব রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি সেইসব রাজ্যকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। যাঁরা করোনার কারণে ভিন রাজ্যে কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরেছেন। তারা তাদের ঘরের কাছেই যাতে তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পেতে পারেন সেই কারণেই এই প্রকল্পের সুচনা করা হল। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ কাজের পরিকাঠামো তৈরির কাজে লাগবে।

গত বৃহস্পতিবারই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় বাজেট থেকেই গরিব কল্যাণ রোজগার প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দুই তৃতীয়াংশ পরিযায়ী শ্রমিক উপকৃত হবে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়ণের জন্য একযোগে কাজ করবে গ্রামীণ উন্নয়ন, পঞ্চায়েতি রাজ, সড়ক পরিবহণ, খনি, টেলিকম, কৃষিসহ একাধিক দফতর।

শনিবার প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার শ্রমিক বন্ধুরা, দেশ আপনাদের প্রয়োজনীয়তা এবং আবেগের কথা বোঝে। এই প্রকল্প যা বিহার থেকে শুরু হল, তা আপনাদের প্রয়োজন এবং আবেগকে পূরণ করার প্রধান হাড়ি এতদিন পর্যন্ত আপনারা নিজেদের কর্মদক্ষতা অন্য শহরের উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করছিলেন। এখন আপনারা তা নিজের গ্রাম এবং তার আশেপাশের এলাকার উন্নয়নে সহায়তা করবে।

লকডাউনের প্রথম পর্বে যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো নিয়ে তেমন উদ্যোগী হয়নি কেন্দ্রীয় সরকার, তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই সহানুভূতির নেপথ্যে রাজনীতি আছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিশেষ করে বিহারে নীতিশ কুমারের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে এই প্রকল্পের সুচনা হয়তো এই বছরে শেষের দিকে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই।

অন্যদিকে এই প্রকল্প থেকে বাংলাকে বাদ দেওয়াও রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যেই পরিযায়ীদের ফেরাতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস বলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। তাছাড়া এর আগে কেন্দ্রের আয়ুস্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ স্কিম-এর মতো প্রকল্পগুলি রাজ্যে লাণ্ড হয়নি মমতা সরকারের বিরোধিতায়। তারই বদলা নিতেই হয়তো এবার বাংলাকে বাদ দেওয়া হল পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য এই গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনা প্রকল্প থেকে।