• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

সরকারের সঙ্গে আছি : মমতা

ভারত চিন সীমান্তে পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে শুক্রবার মোদি ও মমতা মুখোমুখি হলেন। মমতা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন সরকারের সঙ্গে আছি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

ভারত চিন সীমান্তে পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে শুক্রবার মোদি ও মমতা মুখোমুখি হলেন। তবে এদিন কোনও দ্বন্দ্ব নয়, মমতা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন সরকারের সঙ্গে আছি। চিনের বিরুদ্ধে মোদির নেতৃত্বে থাকা দেশের জন্য প্রত্যয়ী কণ্ঠে ভবিষ্যৎবাণী করে মমতা বললেন, ভারত জিতবে, চিন হারবে।

পাক মদতে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ভারতীয় সেনা জওয়ানের মৃত্যুর পর যে মমতাকে আক্রমণাত্মক হতে দেখা গিয়েছিল মোদির বিরুদ্ধে, গালওয়ানে ভারতীয় সেনার ওপর চিনা হামলার পর সেই মমতাকেই অনেকটা রক্ষণাত্মক হতে দেখা গেল। দেশের স্বার্থে রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে এদিন বিচক্ষণতার পরিচয় দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ভিডিও কনফারেন্সে সর্বদল বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠক থেকে সোনিয়া গান্ধি এদিন চিনা হামলা নিয়ে আগে থেকে খবর না পাওয়ার পেছনে সামরিক গোয়েন্দার ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় অস্বাভাবিক কার্যকলাপের খবর কেন আগে থেকে ছিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

কিন্তু সর্বদল বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীকে এদিন কোনও প্রশ্নবাণই ছুঁড়তে দেখা যায়নি। বরং এদিনে তিনি চিনকেই আক্রমণ করেছেন বেশি করে। বলেছেন, চিনে কোনও গণতন্ত্র নেই, ওখানে একনায়কতন্ত্র। ওরা যেটা মনে করে, সেটাই করতে পারে। কিন্তু আমাদের একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। চিন্তায় ঐক্য চাই, কাজে ঐক্য চাই, কথায় ঐক্য চাই। আমরা এই বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সরকারের সঙ্গে রয়েছি।

এদিন সর্বদল বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাংলার নিরাপত্তা নিয়ে। দলীয় সূত্রে খবর, মমতা এদিন বৈঠকে বলেছেন, চিনের এই ষড়যন্ত্রকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ অনেকগুলি প্রতিবেশি দেশ দিয়ে ঘেরা। বিশেষ করে নেপাল ও ভূটান।

মমতা বলেছেন, ডোকালাম আমাদের খুব কাছে। উত্তরবঙ্গের চিকেন নেক অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকা। কোনওভাবে এই অঞ্চলে বিঘ্ন ঘটাতে পারলে রাজ্যের খুবই সর্বনাশ। এই ক্ষেত্রে গোটা পরিস্থিতির ওপর আমাদের নজর রাখতে হবে। চিনের দাদাগিরি নিয়ে এদিনের সর্বদল বৈঠকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

একই সঙ্গে মমতা আবেদন রাখেন টেলিকম, অ্যাভিয়েশন বা রেলের ক্ষেত্রে যাতে কোনওভাবেই চিনা সংস্থাকে ঢুকতে দেওয়া না হয়। তাঁর কথায়, এজন্য হয়তো আমরা একটু অসুবিধেয় পড়ব, কিন্তু চিনকে ঢুকতে দেব না। মোদির বৈঠকে একথাই জানালেন মমতা।

চিনা হামলার পর হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদি বলেছিলেন, বীর জওয়ানদের বলিদান ব্যর্থ হতে দেবনা। ভারত শান্তি চায়। কিন্তু উস্কানি দিলে ভারত পাল্টা জবাব দিতে জানে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সুরেই সর্বদল বৈঠকে সুর মেলান মমতা।

শুক্রবারের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি, এআইডিএমকে, ডিএমকে, টিআরএস, জেডিইউ, বিজেডি, এলজেপি, বসপা, সপা, শিবসেনা, এনসিপি প্রমুখ বিরোধী দলগুলি। প্রত্যেকেই এদিন চিনের হামলার নিন্দা করে সরকারের আগামী পদক্ষেপকে সমর্থন করার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে এদিনের সর্বদল বৈঠকে লালুপ্রসাদের আরজেডি এবং কেজরিওয়ালের আপের কোনও প্রতিনিধিকে ডাকা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।