• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বিশ্বজুড়ে দ্বিতীয়বারও কি ধাক্কা দেবে করোনা! দু’সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন এক লাখের বেশি সংক্রমণ, চিন্তায় ‘হু’

প্রথমবারে ধাক্কাটা কাটিয়ে ওঠা যায়নি এখনও। দ্বিতীয়বারও যদি একই তীব্রতা নিয়ে ফিরে আসে মারুণ ভাইরাসের সংক্রমণ, তাহলে তার প্রভাব কতটা মারাত্মক হতে পারে। সে চিন্তাতেই উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।

প্রতিকি ছবি (Photo: IANS)

প্রথমবারে ধাক্কাটা কাটিয়ে ওঠা যায়নি এখনও। দ্বিতীয়বারও যদি একই তীব্রতা নিয়ে ফিরে আসে মারুণ ভাইরাসের সংক্রমণ, তাহলে তার প্রভাব কতটা মারাত্মক হতে পারে। সে চিন্তাতেই উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। বেজিংয়ের নতুন করোনা ক্লাস্টার সেই সম্ভাবনাকে ফের উস্কে দিয়েছে। আমেরিকাও ভয় পাচ্ছে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ে।

আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস আধানম ঘেব্লেইক্সাস। তাঁর বক্তব্য, গত দু’সপ্তাহ ধরে বিশ্বজুড়েই সংক্রমণ বৃদ্ধির হার উজ্জ্বগজনক। করোনা আক্রান্ত দেশগুলির হিসেব মিলিয়ে দেখা গেছে, বিগত ১৫ দিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই এক লাখের বেশি মানুষ ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন।

বেজিংয়ে নতুন করে ভাইরাসের সংক্রমণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর থেকেই অনুমান করোনার দ্বিতীয় একটা ধাক্কা আসলেও আসতে পারে। তার জন্য সতর্কতা এখন থেকেই দরকার। চিন ইতিমধ্যে অনেকটাই সেরে উঠেছিল। তবে গত কয়েকদিনে ফের করোনার কোপ শুরু হয়েছে। নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে অন্তত ১০০ জনের শরীরে। আক্রান্তের সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ফের রাজধানী জুড়ে জারি করা হয়েছে লকডাউন। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে গণ-পরীক্ষা।

অনুমান করা হচ্ছে নতুন করোনা ক্লাস্টারের জন্য দায়ী সেই সি-ফুড মার্কেট। কাঁচা মাছ-মাংস এমনকি স্যামন মাছ থেকেও ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বেজিংয়ের অন্যতম বড় সুপার মার্কেট জিনফাদি বাজারের নাম জড়িয়েছে। এই বাজার থেকেই গোটা শহরে ফল-আনাজ সরবরাহ হয়। মাংস, সি-ফুডও বিক্রি হয় এই বাজারে।

সেখানকারই কয়েকজন স্যামন মাছ বিক্রেতার শরীরে ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে বলে খবর, এমনকি ভাইরাল স্ট্রেন মিলেছে মাছ কাটার চপিং বোর্ডেও। বেজিং প্রশাসনের নির্দেশে, স্যামন মাছ বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্যাকেজিং করে মাছ রফতানি এবং অন্য দেশ থেকে আমদানির উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

হু’র ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ানের যদিও দাবি স্যামন মাছই করোনার উৎস কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত নয়, তবে সি-ফুড বাজারগুলিতে নজর রাখতে বলা হয়েছে, বাজার লাগোয়া এলাকায় সংক্রমণ পরীক্ষাও চলছে। বিশ্বে এখন করোনা সংক্রমণ ৮০ লাখের গণ্ডি পেরিয়েছে। মৃত্যু চার লাখের বেশি।

হু-প্রধান টেড্রস বলেছেন, আগে যেখানে এক লাখ সংক্রমণে পৌছতে মাস দুয়েক লাগত, এখন সেটাই প্রতিদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমণ বৃদ্ধির হারও তাই বাড়ছে ক্রমশই। চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আশঙ্কা করেছিলেন সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আমেরিকায় ভাইরাস সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ২ লাখে পৌঁছবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই ভয় পাচ্ছে আমেরিকাও। সেখানে এখন সংক্রামিতের সংখ্যা ২১ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু এক লাখের বেশি। লাতিন আমেরিকার অবস্থাও খারাপ।

এতদিন সংক্রমণে ব্রাজিল দ্বিতীয় ছিল, এ বার মৃতের সংখ্যার নিরিখেও তারা ব্রিটেনকে ছাপিয়ে বিশ্বে দু’নম্বরে উঠে এসেছে। সংক্রমণ আট লাখের বেশি। দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সাও পাওলো এবং রিও ডি জেনিরো করোনার ভরকেন্দ্র বা এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে। করোনা সংক্রমণের হার বেশি দক্ষিণ-পূর্ব ব্রাজিলে। সংক্রমণে অধিকাংশ মৃত্যুই হয়েছে সেখানে। শুরুতে কম থাকলেও এখন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে উত্তর পূর্ব ব্রাজিলেও।