দেশের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা’র চিকিৎসা এবং করোনা’য় মৃতদের নিয়ে অব্যবস্থায় রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নিশানায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ চার রাজ্য। সবচেয়ে বেশি ভৎসনার মুখে পড়েছে রাজধানী দিল্লি।
এই চার রাজ্যে কোভিড ১৯-এ আক্রান্তদের চিকিৎসা কিভাবে চলছে, পরিকাঠামোরই বা অবস্থা কি? এই নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হল দিল্লি, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। সেই সঙ্গে স্ট্যাটাস রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছ থেকেও।
শুক্রবার বিচারপতি অশোকভূষণের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে আক্রমণাত্মক ছিলেন সবচেয়ে এদিন তিন বেশি। বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, ‘কোভিড ১৯-এ আক্রান্তদের পশুদের চেয়েও খারাপভাবে দেখা হচ্ছে। জঞ্জালে মৃতদেহ মিলছে।’
এদিন শীর্ষ আদালত দিল্লিতে করোনা পরীক্ষার হার কমা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। চেন্নাই এবং মুম্বই যদি প্রতিদিন প্রীক্ষার সংখ্যা ১৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৭ হাজার করতে পারে, তাহলে দিল্লি কেন তা পারছেনা। দিল্লিতে পরীক্ষার হার কেন কমছে? ৭ হাজার থেকে কমে কেমই বা ৫ হাজার হল? এই নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে কৈফিয়ত তলব করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন সাড়ে ৯ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এদিন দেশের শীর্ষ আদালত দিল্লির হাসপাতালগুলিতে আক্রান্তদের চিকিৎসা এবং সেই সঙ্গে করোনায় যারা মারা যাচ্ছেন তাদের প্রতি যে আচরণ করা হচ্ছে তা নিয়েও উষ্ণা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালত বলেছে, রওগীরা যন্ত্রণার শিকার। তারা কাঁদছেন। কিন্তু তাদের দেখার কেউ নেই। এই অবস্থা চলতে থাকলে হাসপাতালের বেডগুলি দ্রুত খালি হয়ে যাবে (রোগীর মৃত্যু বাড়বে)।
এরপরই মৃতদেহ নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে করোনায় মৃতের পরিজনদের সরকারের তরফে খবর দেওয়া হচ্ছে না। তারা শেষ দেখা দেখতে পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা দিল্লি সরকার মানছে না বলেও শীর্ষ আদালতের তরফে মন্তব্য করা হয়।
শুনানি চলাকালীন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা স্বীকার করে নিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যে ছবি সামনে এসেছে। তা অনেক ভয়াবহ। দিল্লিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪,৬৮৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ১,০৮৫ জনের। মহারাষ্ট্রে ৯৪,০৪১ আক্রান্ত। তামিলনাড়ুতে আক্রান্ত ৩৬,৮৪১। পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্ত ৯,৭৬৮।